ব্রহ্মপুত্রের উজানে বৃহত্তম বাঁধ নির্মাণ করবে চীন, উদ্বিগ্ন বাংলাদেশ-ভারত

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৬ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
চীন বিশ্বের সবচেয়ে বড় জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণের পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে। এটি ব্রহ্মপুত্র নদের উজানে তিব্বতে নির্মাণ করা হবে। একবার নির্মাণ শেষ হলে এই বাঁধ থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের পরিমাণ মধ্য চীনের থ্রি গর্জেস ড্যামের তুলনায় তিনগুণ বেশি হবে। তবে, প্রকল্পটির কারণে ভারত ও বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষের পানিসম্পদ সংকটের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
প্রকল্পের বিশালতা ও সম্ভাব্য প্রভাব
বার্তাসংস্থা রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, বাঁধটি বছরে ৩০০ বিলিয়ন কিলোওয়াট-ঘণ্টা বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে। চীনের পাওয়ার কনস্ট্রাকশন কর্পোর ২০২০ সালের এক প্রতিবেদনেও এই তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। বাঁধটি ইয়ারলুং জ্যাংবো নদীর এমন একটি স্থানে নির্মাণ করা হবে, যেখানে মাত্র ৫০ কিলোমিটারের ব্যবধানে নদী প্রায় দুই হাজার মিটার নেমে আসে। এই ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্যের কারণে এটি জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য আদর্শ স্থান বলে বিবেচিত হয়েছে।
তিব্বত, ভারত ও বাংলাদেশের উদ্বেগ
এই প্রকল্পের কারণে নদীর প্রবাহপথ পরিবর্তন হতে পারে, যা ভাটির দেশ ভারত ও বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নদীর পানির ওপর নির্ভরশীল লাখ লাখ মানুষের জীবিকা সংকটে পড়তে পারে। প্রকল্পটি তিব্বতের স্থানীয় বাস্তুতন্ত্রেও বিরূপ প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পরিবেশগত ও মানবিক দিক
চীনা বার্তা সংস্থা সিনহুয়ার মতে, এই প্রকল্প চীনের কার্বন নিঃসরণ কমাতে এবং কার্বন নিরপেক্ষতা অর্জনে সহায়ক হবে। এছাড়া প্রকল্পটি তিব্বতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং দেশটির প্রকৌশল খাতকে এগিয়ে নিতে ভূমিকা রাখবে। তবে চীনা কর্তৃপক্ষ এখনো স্পষ্ট করেনি, এই প্রকল্পে কতজন মানুষ বাস্তুচ্যুত হবে এবং স্থানীয় পরিবেশের ওপর এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব কেমন হবে।
বিশ্বের বৃহত্তম বাঁধের সঙ্গে তুলনা
থ্রি গর্জেস ড্যাম নির্মাণের সময় চীনকে ১৪ লাখ মানুষকে পুনর্বাসন করতে হয়েছিল। তিব্বতের এই প্রকল্পেও একই ধরনের মানবিক সংকট দেখা দিতে পারে। তবে প্রকল্পটির বিশদ পরিকল্পনা সম্পর্কে বিস্তারিত প্রকাশ করেনি চীন।
বিশাল এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে এটি বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে বিশ্বে নতুন এক মাইলফলক স্থাপন করবে। তবে এর ফলে পরিবেশগত ও মানবিক সংকট এড়াতে কী পদক্ষেপ নেয়া হবে, তা নিয়ে এখনো প্রশ্ন রয়ে গেছে।