শেখ হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়ানো নিয়ে উঠছে প্রশ্ন

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:০৭ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
ভারতে অবস্থানরত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, দিল্লি সরকারের সিদ্ধান্তে শেখ হাসিনার ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
হিন্দুস্তান টাইমস উল্লেখ করেছে, ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ফরেনার্স রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিস (এফআরআরও) এ প্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিল। যদিও শেখ হাসিনার পাসপোর্ট বাতিল থাকায় কীভাবে ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি সম্ভব হলো, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বাংলাদেশ সরকারের ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের তথ্যমতে, শেখ হাসিনার কূটনৈতিক পাসপোর্ট ২০২৩ সালের ২১ আগস্ট বাতিল করা হয়েছে। এর আগে, ২০২০ সালের ১৯ জানুয়ারি ১০ বছরের জন্য পাসপোর্টটি ইস্যু করা হয়েছিল।
পাসপোর্ট অধিদপ্তরের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, “বাতিল পাসপোর্টে ভিসা দেওয়া অসম্ভব। যদি কারও একাধিক পাসপোর্ট থাকে, তবে একটি বাতিল হওয়ার পর অন্যটির মেয়াদ বাড়ানো যেতে পারে। তবে শেখ হাসিনার কোনো নতুন পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়নি।”
শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যদের মধ্যে দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকার বিষয়টি জানা গেলেও, তার নিজস্ব নাগরিকত্বের বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য নেই। জানা গেছে, পালানোর সময় তার দুটি বৈধ পাসপোর্ট ছিল। তবে এগুলো বাতিল হওয়ার পর নতুন পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়নি।
ভারতীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানা গেছে, রেসিডেন্ট পারমিটের মাধ্যমে শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থানের বৈধতা দেয়া হয়েছে। কলকাতা থেকে পাঠানো প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতে উদ্বাস্তু-সংক্রান্ত আইন না থাকায় এফআরআরও তাকে রেসিডেন্ট পারমিট ইস্যু করেছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কূটনীতিক বলেন, বাতিল পাসপোর্টের মাধ্যমে দেশে ফিরে যাওয়া বা অন্য দেশে ভ্রমণ সম্ভব নয়। শেখ হাসিনা বর্তমানে রেসিডেন্ট পারমিটের আওতায় ভারতে বসবাস করছেন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, শেখ হাসিনার ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি সম্পূর্ণ ভারতের বিষয়। তবে তাকে দেশে প্রত্যর্পণের জন্য বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনাকে ফেরত আনার প্রক্রিয়া নিয়ে এখনো কোনো জবাব দেয়নি ভারত। প্রত্যর্পণের ক্ষেত্রে যে ধরনের প্রক্রিয়া অনুসরণ করা প্রয়োজন, তা এই ক্ষেত্রে হয়নি।
ভারতে নির্বাসিত বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিনও দীর্ঘদিন রেসিডেন্ট পারমিটের আওতায় অবস্থান করছেন। একই ধরনের প্রক্রিয়ায় শেখ হাসিনার অবস্থানের বৈধতা নিশ্চিত করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভারতে শেখ হাসিনার ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়টি রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিকভাবে আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসেছে। তবে এই সিদ্ধান্তের পেছনে ভারতের দীর্ঘমেয়াদি কৌশল এবং শেখ হাসিনার অবস্থানের আইনগত ভিত্তি নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।