চলতি হিসাবে ৯ ব্যাংকের ঘাটতি ১৮ হাজার ১৬৭ কোটি টাকা

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:০৭ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
বেসরকারি খাতের ৯টি ব্যাংকের চলতি হিসাবে ঘাটতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ১৬৭ কোটি টাকায়। এর ফলে বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক এবং আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক চলতি হিসাবে এই ঘাটতির শিকার হয়েছে। এর আগে ৭টি ব্যাংক ঘাটতির তালিকায় থাকলেও নতুন করে যোগ হয়েছে পদ্মা ও আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্রের দপ্তর থেকে প্রথমবারের মতো চলতি হিসাবে ঘাটতির তথ্য প্রকাশ করা হয়। এর আগে ২০২২ সালের শেষ দিকে শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোতে ঋণাত্মক চলতি হিসাবের মাধ্যমে লেনদেন চালানোর নতুন পদ্ধতি গ্রহণ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বিতর্কিত এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণাধীন কয়েকটি ব্যাংকে তহবিল সংকট দেখা দিলে এই বিশেষ সুযোগ দেয়া হয়। তবে, বর্তমানে এ পদ্ধতির অপব্যবহার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
সর্বাধিক ঘাটতি রয়েছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকে, যার ঘাটতি ৭ হাজার ২৭০ কোটি টাকা। তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, যার ঘাটতি ৩ হাজার ৩৯৪ কোটি টাকা। এছাড়া ন্যাশনাল ব্যাংকের ঘাটতি ২ হাজার ৩৪২ কোটি, ইউনিয়ন ব্যাংকের ২ হাজার ২০৯ কোটি, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের ২ হাজার ২০২ কোটি এবং বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ঘাটতি ৩৮১ কোটি টাকা। পদ্মা ব্যাংক ও আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের ঘাটতি যথাক্রমে ২৩৪ কোটি এবং ৯৬ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কেন্দ্রীয় কর্মকর্তারা জানান, ব্যাংকগুলোর চলতি হিসাবে ঘাটতির অর্থ হলো ব্যাংকগুলোর তারল্য সংকট রয়েছে এবং তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে ওই পরিমাণ টাকা ঋণ হিসাবে গ্রহণ করেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এর আগে গত বছরের নভেম্বরে কিছু ব্যাংককে সতর্ক করে দেয়, যদি তারা চলতি হিসাবের ঘাটতি মেটাতে না পারে, তবে তাদের লেনদেন বন্ধ করা হবে।
এ পরিস্থিতি সামাল দিতে কিছু ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গ্যারান্টির বিপরীতে অন্য ব্যাংক থেকে ধার নেয়ার চেষ্টা করছে। তবে ৫টি ব্যাংককে গ্যারান্টি দিলেও অন্য ব্যাংকগুলো ধার দিতে রাজি হচ্ছে না। ব্যাংকিং খাতের সংকট আরও ঘনীভূত হওয়ার আশঙ্কায় থাকায় এ তথ্য প্রকাশের পর আমানতকারীদের মধ্যে উদ্বেগ বেড়েছে।
একটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সমকালকে বলেন, ‘হঠাৎ করে চলতি হিসাবের ঘাটতির তথ্য প্রকাশ করা আমাদের জন্য নতুন চাপ তৈরি করছে। এমনিতেই আমরা আমানত ফেরত দিতে হিমশিম খাচ্ছি, এর মধ্যে এ ধরনের তথ্য প্রকাশ আমানতকারীদের মধ্যে আরো উদ্বেগ সৃষ্টি করবে।’