কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ১০ মাসে পর্যটকসহ ৮ জনের মৃত্যু

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৪০ পিএম

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ১০ মাসে পর্যটকসহ ৮ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। ছবি: ভোরের কাগজ
বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে গত ১০ মাসে পর্যটন নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ সময়ে সমুদ্র সৈকতে ৫৬ জনকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করা হলেও ৫ জন পর্যটক এবং ৩ জন স্থানীয় বাসিন্দার মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও চলতি অক্টোবর মাসেই ১ জন পর্যটকসহ ২ জনের প্রাণহানি ঘটে।
সৈকতে পর্যটকদের নিরাপত্তা ঝুঁকি : কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নিরলসভাবে কাজ করছে সি সেইফ লাইফগার্ড। তবে, সৈকতের কিছু স্থান জীবনের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। সী সেইফ লাইফগার্ডের সুপারভাইজার সাইফুল্লাহ সিফাত জানান, লাইফগার্ডদের নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যেই এই মৃত্যুর ঘটনাগুলো ঘটেছে। তবে অন্যান্য অঞ্চলেও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, যা আমাদের রেকর্ডে নেই।
দায়িত্বরত লাইফগার্ডদের সঙ্গে কথা বললে জানান, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ৩টি পয়েন্টে সী সেইফ লাইফগার্ড দায়িত্ব পালন করে থাকে। সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। ৩টি পয়েন্টে ২৭ জন লাইফগার্ড দুই শিফটে কাজ করে।এসময় তারা পর্যটক বা সাগরে গোসলে নামা লোকজনের ওপর নজরদারী রাখেন। বিপদজনক স্থানে লাল পতাকা উত্তোলন করেন এবং সাগরে জোয়ার ভাঁটার ওপর সাগরের অবস্থা সম্পর্কে পর্যটকদের দিকনির্দেশনা দেন।
আরো পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় 'দানা'র প্রভাব: কক্সবাজারের ইনানী সৈকতে নৌ-বাহিনীর জেটি ভেঙে দুই খণ্ড
লাবণি পয়েন্টে দায়িত্বরত লাইফগার্ড আব্দুর শুক্কুর জানান, মূলত মে-জুন মাস থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে সাগরে গুপ্তখাল সৃষ্টি হয় শীতকালীন মৌসুমে ভরাট হয়ে যায়। এসময়টা ঝুঁকিপূর্ণ। তাই পর্যটকদের নির্দিষ্ট এরিয়ায় গোসলে নামা এবং লাইফগার্ডের দিকনির্দেশনা মেনে চলা পর্যটকদের জন্য নিরাপদ। যারা এসব মানে না, অতিউৎসাহী তারাই বেশিরভাগ দুর্ঘটনার শিকার হয়।
সম্প্রতি মৃত্যুর ঘটনায় সর্বশেষ ২১ অক্টোবর মামুন নামের এক পর্যটক জেটস্কি থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি কোনো সুরক্ষা পোশাক ছাড়াই দ্রুতগতির জেটস্কি চালাচ্ছিলেন এবং মোবাইলে সেলফি তুলছিলেন। তার সঙ্গেই ঘটে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা।
এর আগে, ২০ অক্টোবর টিউব নিয়ে গোসলে নেমে কক্সবাজারের কলাতলী পয়েন্টে সাগরে ডুবে উখিয়ার বাসিন্দা মো. সায়মন (২০) মারা যান। ১৩ অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জন উৎসবে এসে নিখোঁজ হয় কিশোর প্রবাল দে প্রান্ত। আট ঘণ্টা পর কবিতা চত্বরে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এক লাইফগার্ড কর্মী জানান, মূলত ভাসমান টিউব একটি মৃত্যু ফাঁদ। যারা টিউব নিয়ে সাগরে নামেন তাদের অনেকেই সাঁতার জানেন না। তখন তারা টিউবের ওপর ভরসা করে ভাসতে ভাসতে দূরে চলে যায়। এ সময় স্রোতের টান ও ঢেউয়ের তোড়ে টিউব ছুঁড়ে গেলে পানিতে ডুবে গিয়ে মৃত্যু হয়। এছাড়াও অনেক জেটস্কি চালক অদক্ষ, ট্রেনিংপ্রাপ্ত নয়। অনেক চালক ভালোভাবে সাঁতার জানে না। সমুদ্রে টিউব নিষিদ্ধ করা দরকার বলে মনে করেন তিনি।