কাজে ফিরেছেন শ্রমিকরা, দাবি মেনে নেয়ায় উচ্ছ্বাস

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

ছবি : সংগৃহীত
হাজিরা বোনাস বাড়ানোসহ ১৮টি দাবি মেনে নেয়ায় কাজে ফিরেছেন গাজীপুর ও আশুলিয়ার বেশির ভাগ পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। গতকাল বুধবার সকালে শ্রমিকরা কারখানায় ফেরার পর বিকাল পর্যন্ত কোথাও কোনো ধরনের শ্রমিক অসন্তোষের খবর পাওয়া যায়নি। তবে আর্থিক সংকটে বেতন দিতে না পারায় গাজীপুরে ১৩টি ও আশুলিয়ার ১৯টি কারখানা বন্ধ ছিল।
গত তিন সপ্তাহ ধরে শিল্পাঞ্চল গাজীপুর-সাভার-আশুলিয়ায় পোশাক খাতে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির পর বিজিএমইএ শ্রমিকদের দাবি মেনে নেয়ায় বুধবার সকাল থেকে অধিকাংশ কারখানায় কাজে যোগ দেন শ্রমিকরা। ফলে কর্মব্যস্ত হয়ে উঠেছে প্রতিটি পোশাক কারখানা। স্বতঃস্ফূর্তভাবে উৎপাদন শুরু করেছেন শ্রমিকরা। এ সময় দাবি মেনে নেয়ায় উচ্ছ¡াস প্রকাশ করেন তারা। তবে বেশ কিছুদিন পোশাক খাতের অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে যে ক্ষতি হয়েছে তা কাটিয়ে উঠতে ওভারটাইম করে ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার কথা বলছেন কারখানা মালিকরা।
শ্রমিকদের ভাষ্য, আমাদের ন্যায্য অধিকার আমরা ফিরে পেয়েছি। আমরা এখন গার্মেন্টসে ঠিকভাবে কাজ করতে চাই। আন্দোলন চলতে থাকলে তা আমাদের জন্যই ক্ষতি। গাজীপুরের স্টার ক্র্যাফট লিমিটেড পোশাক কারখানার শ্রমিক এনামুল হকসহ একাধিক কারখানার শ্রমিকরা বলেন, কারখানায় হাজিরা বোনাস দেয়া হবে, ১৮ দফা দাবি মেনে নেয়া হয়েছে- এমন আলোচনা শুনে খুশি হয়েছি। আমরা কাজে ফিরেছি।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশন গাজীপুর মহানগরের সভাপতি শফিউল আলম জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের চার উপদেষ্টা বৈঠক করে শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবিগুলো আইডেন্টিফাই করতে পেরেছেন। দাবি মেনে নেয়ায় আজ (বুধবার) গাজীপুরের শ্রমিকরা কর্মস্থলে ফিরেছেন। গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র গাজীপুরের জেলা সভাপতি জিয়াউল কবীর খোকন বলেন, শ্রমিকদের সব দাবি মেনে নেয়া হয়েছে। এতে শ্রমিক ভাইরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তবে পোশাক শিল্পে প্রতিনিয়তই নতুন নতুন সমস্যার সৃষ্টি হয়। ছোট ছোট সমস্যাগুলোকেও এড্রেস করতে হবে। তাহলেই শ্রম খাতে অসন্তোষ কম হবে। গার্মেন্টস মালিকরা বলেন, বায়ারদের অর্ডারের যে গতি ছিল তা কমে গেছে। এই আন্দোলনের কারণে তারা এই গতি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। অনেক বায়ারের মধ্যে অনাস্থা তৈরি হয়েছে এবং অর্ডার বাতিল হওয়ার সম্ভবনা আছে। ইতোমধ্যে অনেক অর্ডার বাতিলও হয়েছে।
জানতে চাইলে গাজীপুর শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম জানান, গাজীপুরে বেশির ভাগ পোশাক কারখানায় স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে, শ্রমিকরা কাজে ফিরেছেন। তিনি বলেন, আমরা শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে, বিভিন্ন ফেডারেশনের সঙ্গে কথা বলছি। দাবি মেনে নেয়ার বিষয়টি শ্রমিক ও শ্রমিক সংগঠনকে জানিয়ে দিতে হবে। তিনি আরো বলেন, গাজীপুরে যে ১৩টি পোশাক কারখানা বন্ধ ছিল সেগুলো কয়েকদিনের মধ্যেই চালু হবে বলে আশা করছি। শিল্প পুলিশ বলছে, কারখানায় শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করছেন।
শিল্পাঞ্চলের নিরাপত্তায় যৌথ বাহিনীর টহল অব্যাহত আছে। তারা জানান, বিভিন্ন কারণে আশুলিয়ার মোট ১৪টি কারখানা শ্রম আইনের ১৩/১ ধারায় এখনো বন্ধ। এছাড়া ৫টি কারখানায় সাধারণ ছুটি রয়েছে।