ফুলবাড়ীয়ায় পুরুষের সমান শ্রম দিয়েও অর্ধেক বেতন পান নারীরা

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮ মার্চ ২০২২, ১০:৪০ এএম

ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়ায় এভাবেই নারী-পুরুষ সমান করেও নারীরা পুরুষের তুলনায় অর্ধেক বেতন পান। ছবি: ভোরের কাগজ
ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়ায় বনাঞ্চলের নারী শ্রমিকরা পুরুষের সমান শ্রম দিয়েও পুরুষের অর্ধেক বেতন পাচ্ছেন। ফুলবাড়ীয়া উপজেলার নাওগাঁও ইউনিয়নের সন্তোষপুর রাবারবাগান এলাকায় কর্মচারী রোকেয়া, লাইলী, নূরজাহান, আম্ভিয়া ছমিরন নেছাসহ অন্যদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি জানা যায়।
তাদের ভাষ্য, আমরা কাজ করি সমান, আমাগো বেতন দেন কম, গৃহস্থরা আমাগো কথা হুনে না। সকাল আটটা থেকে বিকাল চারটা পযন্ত কাজ করি আমাগো ট্যাহা দেয় ২০০-২৫০ আর বেটাইেগা (পুরুষ) ট্যাহা দেয় ৪০০-৫০০ ট্যাহা।
সরেজমিনে দেখা যায়, সন্তোষপুরে রাবারবাগানে স্তুপীকৃত রাবার পাতা ঝাড়ু দিচ্ছেন নারী শ্রমিকরা। সেখানে নারী-পুরুষ সমানে সমান কাজ করছে। বাগানে নারী শ্রমিক বেশি দেখলেও পুরুষ শ্রমিকের সংখ্যা ছিলো কম।
রাবারবাগানের ভেতরেই দুপুরের খাবার খাওয়ার সময় রোকেয়া ও তার মা-মামিসহ আরও দুজনের সঙ্গে কথা হলো। এই প্রতিবেদকের এক প্রশ্নের জবাবে রোকেয়া বলেন, আমরা সেই সকাল আটটায় বাগানে আসি, বিকেল চারটায় বাড়ি যাই। সঙ্গে দুপুরের খাবার নিয়ে আসি।
রাবারবাগানে কাজ করেন রুকিয়া। তার দুই মেয়ে, দুই ছেলে। দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন তিনি। আর তার বড় ছেলে এবার স্থানীয় নাওগাও ডিগ্রি কলেজে উচ্চমাধ্যমিকে পড়ছেন। ছোট ছেলে বয়সে অনেক ছোট। বেতনবৈষম্যের বিষয়ে তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমরা সমান কাজ করলেও আমাদের অর্ধেক বেতন দেয়া হয়। আর পুরুষদের দেয় হয় দ্বিগুণ বেতন। সারাদিন কাজের বিনিময়ে আমাদের বেতন দেয়া হয় ২০০-২৫০ টাকা, পুরুষদের দেয়া হয় ৪০০-৫০০ টাকা।
কথা হয়েছিলো রাবারবাগানের নারী শ্রমিক লাইলী আক্তারের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমরা সরকারি কোনো সহযোগিতা চাই না। শুধু ভিজিএফ কার্ড চাই। সারা দিন হাড়ভাঙা খাটুনি খেটে, এত পরিশ্রমের পরেও পুরুষের অর্ধেক বেতন পাই! কি করমু, অন্য কোনো কাজ পাই না। পেটের দায়ে বাঁচার তাগিদে কাজ করতে হয়।