মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী নেই, ১৯ বছর ধরে বেতন নিচ্ছেন শিক্ষক-কর্মচারী!

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৯ মে ২০২২, ০৩:৫৪ পিএম

ফিরোজা কামাল বালিকা দাখিল মাদ্রসায়

বাউফলের সূর্যমণি ইউনিয়নের পূর্ব ইন্দ্রকুল গ্রামে ফিরোজা কামাল বালিকা দাখিল মাদ্রসায় একজন শিক্ষাথী না থাকলেও ১৯ বছর ধরে সরকারি বেতন-ভাতা নিচ্ছেন ১৩ জন শিক্ষক কর্মচারী। ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য কয়েকবার ওই মাদ্রাসায় গিয়ে একজন শিক্ষার্থীও পাওয়া যায়নি। এমনকি শিক্ষকরা দেখাতে পারেনি চক, ডাস্টার, ব্লাকবোর্ড ও শিক্ষার্থী হাজিরার খাতাসহ কোন শিক্ষা উপকরণ। এ যেন “কাজীর গরু কেতাবে আছে বাস্তবে নেই”।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, আবদুল মোতালেব নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি ১৯৯৪ সালে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন। মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার পর থেকেই তিনি সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। বিভিন্ন তদবিরের মাধ্যমে ২০০৪ সালে ইবতেদায়ি ও দাখিল মাদ্রাসা হিসেবে এমপিওভুক্ত হয় এবং ১ম থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদানের অনুমতি পায়।
সরেজমিন দেখা গেছে, কাগজে কলমে ওই মাদ্রাসায় ২৫০জন শিক্ষার্থী দেখানো হলেও বাস্তবে একজন শিক্ষার্থীও নেই। হাজিরা খাতায় প্রতিদিন গড়ে ২০ থেকে ৩০ জন শিক্ষার্থীর উপস্থিতি দেখানো হয়। মাদ্রাসাটিতে ইবতেদায়ি বিভাগে ৪ জন এবং দাখিলে ৫ জন শিক্ষক, একজন অফিস সহকারী, একজন আয়া, একজন নাইট গার্ড ও একজন দপ্তরিসহ মোট ১৩জন শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন। তারা প্রতিমাসে সরকারি ২ লাখ ৮ হাজার টাকা বেতন হিসেবে উত্তোলন করেন।
আইরিন বেগম নামের একজন শিক্ষক ২০২১ সালের ৭ নভেম্বর সর্বশেষ উপস্থিতি স্বাক্ষর করেছেন। এরপর থেকে গত ৭ মাসে শিক্ষক হাজিরা খাতায় তার কোন স্বাক্ষর নেই। অথচ তিনি প্রতিমাসেই বেতন উত্তোলন করেছেন। মোবাইল ফোনে আইরিন বেগমের সাথে কথা হলে তিনি দম্ভোক্তি করে জানান, মাদ্রাসায় একটি খুঁটি থাকলেও তিনি বেতন পাবেন।
মাদ্রাসার সুপার মাহফুজা বেগম সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আগে অনেক শিক্ষার্থী ছিল। ২০০৯ সালে শিক্ষকদের মধ্যে ঝামেলা হওয়ায় এখন শিক্ষার্থী একবারেই নেই। দুরের কিছু শিক্ষার্থী এ মাদ্রাসায় ভর্তি করে দাখিল পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করিয়ে মাদ্রাসাটি টিকিয়ে রেখেছি। এ ব্যাপারে বাউফল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নাজমুল হোসাইন সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষার্থী উপস্থিত না থাকলে কোন প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত থাকতে পারে না। আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।