অপহরণের কথা বললেন রহিমা বেগম

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৬:০০ পিএম

ফাইল ছবি
খুলনা থেকে নিখোঁজের ২৮ দিন উদ্ধার রহিমা বেগম মুখ খুলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, তিনি অপহরণের শিকার হয়েছেন। রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে পিবিআই খুলনার পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান গণমাধ্যমকে এসব তথ্য দেন।
পুলিশ সুপার জানান, রহিমা বেগমের দাবি, গত ২৭ আগস্ট রাতে পানি আনতে গিয়ে তিনি অপহৃত হন। চার ব্যক্তি তাকে জাপটে ধরে নাকে রুমাল চেপে ধরেন। এতে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। এরপর তার কিছু মনে নেই। তাকে অপহরণ করে কোথায় নিয়ে যান, সে ব্যাপারে তিনি কিছু মনে করতে পারছেন না। একপর্যায়ে অপহরণকারীরা সাদা (খালি) স্ট্যাম্পে কিছু স্বাক্ষর নেন। স্বাক্ষর নেওয়ার পর তাকে একটা নির্জন জায়গায় ছেড়ে দেন। কিন্তু জায়গাটা কোথায় সেটা তিনি বুঝতে পারেননি। এরপর তিনি মনি নামের একটি মেয়ের বাড়িতে ছিলেন। তবে সেই মেয়ের বাড়ি কোথায় তিনি বলতে পারছেন না। এরপর ওই মেয়ে তাকে এক হাজার টাকা সংগ্রহ করে দেন।
পরে তিনি মকসুদপুরে চলে আসেন। যখন যেখানে ছিলেন, তারা তাকে কাপড়চোপড় দিয়েছেন বলে জানান রহিমা। সেগুলো তিনি সংগ্রহে রেখেছিলেন। মুকসুদপুর থেকে তিনি বোয়ালমারীতে আসেন। এরপর ১৭ সেপ্টেম্বর তার বাড়ির ২৮ বছর আগের ভাড়াটিয়া আবদুস কুদ্দুস মোল্লার বাড়িতে যান। কুদ্দুস একসময় খুলনার দৌলতপুরের সোনালী জুট মিলে চাকরি করতেন। তিনি ভেবেছিলেন, সেখানে গেলে আশ্রয় পাওয়া যেতে পারে।
মুশফিকুর রহমান বলেন, খুলনায় না গিয়ে ফরিদপুরে যাওয়ার কারণ জিজ্ঞাসাবাদে রহিমা বেগম পুলিশকে জানান, খুলনায় আসতে ভয় পেয়েছিলেন। ভেবেছিলেন, কুদ্দুসের বাড়ি যাওয়ার পর মেয়েদের খবর দেবেন। এরপর মেয়েদের সঙ্গে চলে যাবেন।
পুলিশ সুপার জানান, রহিমা বেগমকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালতে তিনি জবানবন্দি দেবেন। এরপর আদালতের সিদ্ধান্ত মতো কার্যক্রম চলবে।এদিকে, সকালে খুলনার সোনাডাঙ্গা থানার ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে গিয়ে দূর থেকে মাকে দেখেছেন মরিয়ম মান্নান। পরে সংবাদমাধ্যমের সাথে কথা বলেন তিনি। এর আগে শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) খুলনা থেকে নিখোঁজের ২৮ দিন পর রহিমা বেগমকে ফরিদপুরের বোয়ালমারী থেকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পরে তিনি বলেন, ‘আমি মাকে দূর থেকে চোখে দেখেছি। আমার কলিজাটা ঠাণ্ডা হয়েছে। আমি আমার মায়ের কাছে যেতে চাই। আমি আমার মায়ের সঙ্গে কথা বলতে চাই। কে কী বলল তাতে আমার কিছু যায় আসে না। আমার চাওয়া ছিল আমার মা।’
প্রসঙ্গত, গত ২৭ আগস্ট নগরীর মহেশ্বরপাশা এলাকার বাড়ির সামনে থেকে রহস্যজনক নিখোঁজ হন রহিমা বেগম। তাকে অপহরণ করার অভিযোগ তুলে পরদিন থানায় মামলা করেন রহিমার মেয়ে আদুরি আক্তার।