ভোলাগঞ্জ সীমান্ত হাটে মিলবে দুই দেশের পণ্য

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ৩০ ডিসেম্বর ২০২২, ০৫:০১ পিএম

ছবি : ভোরের কাগজ
সীমান্তে বর্ডার হাট চালু হলে উপকৃত হবে দুই দেশের দুই পাড়ের মানুষেরা। মজবুত হবে দুই দেশের সীমান্তবর্তী মানুষের সম্পর্ক। গড়বে মৈত্রী ও বাড়বে দুই দেশের সীমান্তবর্তী ব্যবসা- বাণিজ্য।
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ সীমান্তবর্তী ভোলাগঞ্জ জিরো লাইনে স্থাপিত হয় সীমান্ত হাট। দীর্ঘ তিন বছর অপেক্ষার পর ইংরেজি নতুন বছরে আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে এই বর্ডার হাট।
উদ্বোধন ও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্যে দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ের কর্তা ব্যক্তিরা দ্বি- পাক্ষিক বৈঠকও বসেন। গত ৮ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেন সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইমরুল হাসান। ভারতের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেন সিলং সাব ডিভিসন সূরা ডিএম পুনিতা ড. আসওয়া ঘোষ।
গত ২৪ কিংবা আগামী ৩১ ডিসেম্বর তারিখে হাট উদ্বোধনের জন্যে ভারতীয় প্রতিনিধিদের কাছে প্রস্তাব করেন বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা। তবে ২৫ ডিসেম্বর ক্রিসমাস দিবস ও ফেব্রুয়ারিতে বিধানসভা নির্বাচনের কারণে উদ্বোধন পেছানো হয়। ধারণা করা যাচ্ছে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারী মাসে চালু হতে পারে এই বর্ডার হাট।
হাটে থাকবে ব্যাবস্থাপনা কমিটিঃ
সীমান্ত হাটের ব্যবস্থাপনা কমিটিতে রয়েছে সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসন, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, কাস্টমস বিভাগ, ব্যাংক কর্মকর্তা, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের একজন করে প্রতিনিধি।
হাটে প্রবেশ করতে লাগবে টিকিটঃ
হাটে প্রবেশ করতে গেলে উপজেলা প্রশাসন বা হাট প্রাঙ্গণ থেকে একটি টিকিট কাটতে হবে। এটি কাটতে জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন সনদ দেখাতে হবে। টিকিট ছাড়া হাটে প্রবেশ করা যাবে না। বিক্রেতাদের ৫০ রুপি এবং ক্রেতাদের ২০ রুপি প্রদান করতে হবে। কেনাবেচা করতে গেলে উভয় দেশেরই ক্রেতা-বিক্রেতার পরিচয়পত্র থাকতে হবে।
হাটে কি কি পণ্য বেচাকেনা করা হবেঃ
সীমান্ত কৃষি ও হালকা শিল্পপণ্য বিক্রি হবে। এর মধ্যে রয়েছে, স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদিত ফলমূল, শাকসবজি, মাছ, মসলা, বনজ সম্পদ, কুটিরশিল্প, কৃষিজাত যন্ত্রপাতি, তৈরি পোশাক, প্রসাধনসামগ্রী, গৃহস্থালির পণ্য ইত্যাদি বেচাকেনা করা যাবে।
একজন ক্রেতা ২০০ ডলার সমমূল্যের পণ্য ক্রয় করতে পারবেঃ
হাটে একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ ২০০ ডলার বা এর সমপরিমাণ (বর্তমান) প্রায় ২০ হাজার টাকার পণ্য কিনতে পারবেন। হাটে দুই দেশের নাগরিকরা নিজ নিজ দেশের মুদ্রা নিয়ে আসতে পারবেন। হাটে দুই ধরনের মুদ্রায়ই চলবে। তবে বেচাকেনা শেষে ব্যাংক কর্মকর্তাদের সহায়তায় মুদ্রাবিনিময় করে নিতে পারবেন। হাটে প্রবেশে বা বেচাকেনা করতে কারও কোনো ভিসা ও পাসপোর্ট লাগবে না।
উল্লেখ্য ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্মাণকাজ শুরু হয়ে ওই বছরেই শেষ হয়েছিল হাটের নির্মাণ কাজ। সে সময় দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা পরিদর্শন করে যান। তখন বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে উদ্বোধন পিছিয়ে যায়।
এরপর ২০২০ সালের ডিসেম্বরে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী এই বর্ডার হাট উদ্বোধনের কথা ছিল। তখনো করোনাভাইরাসের কারণে বর্ডার হাট চালুর কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
১নং পশ্চিম ইসলামপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হাজী মো. জিয়াদ আলী বলেন, বর্ডার হাট চালু হলে বৈধভাবে ও সহজেই দুই দেশের পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করতে পারবেন দুই দেশের মানুষ।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বর্ডার হাটে বিদ্যমান ৫০টি দোকানের মধ্যে বাংলাদেশের ২৪টি দোকান থাকবে। আর ভারতের থাকবে ২৬টি দোকান। দোকান কোঠাগুলো এরই মধ্যে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্তাকর্তা লুসিকান্ত হাজং ভোরের কাগজকে জানান, ডিসেম্বরে চালু হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু বিভিন্ন কারণে হয়নি। তবে আশাকরি নতুন বছরের ফেব্রুয়ারীতে চালু হতে পারে।