আলফাডাঙ্গায় মানবতার ফেরিওয়ালার শীতবস্ত্র বিতরণ

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২ জানুয়ারি ২০২৩, ০৮:৪০ পিএম

ছবি: ভোরের কাগজ
মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য, একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারে না’ এই প্রতিপাদ্যে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার জাটিগ্রামে প্রতি মাসে অসহায় হতদরিদ্র মানুষের মাঝে নগদ অর্থ ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করে মানবতার ফেরিওয়ালা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন মরিশাস প্রবাসী আকাশ মিয়া।
বুধবার (১১ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় সরেজমিন আকাশ মিয়ার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, যাদের জোটে না দু’বেলা দু’মুঠো খাবার এমন সহস্রাধিক মানুষের উপস্থিতি। কোন আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই দেশে থাকা মরিশাস প্রবাসী আকাশ মিয়ার বাবা জাকির মিয়া হতদরিদ্রদের মাঝে ১০ কেজি করে চাল তুলে দেন। সেইসাথে তীব্র কনকনে শীত নিবারণ করার জন্য শীতবস্ত্র হিসেবে তাদের মাঝে কম্বলও বিতরণ করা হয়। প্রায় দুই বছর ধরে ইউনিয়নের সহস্রাধিক মানুষকে কার্ডের মাধ্যমে বিনামূল্যে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করে যাচ্ছেন অনেকটা নীরবে-নিভৃতে। শুধু তাই নয়; চাল ও শীতবস্ত্র নিতে আসা হতদরিদ্রদের যাতায়াতে ভাড়াও দিয়ে দেয়া হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আলফাডাঙ্গা উপজেলার জাটিগ্রাম এলাকার জাকির মিয়ার ছেলে মরিশাস প্রবাসী আকাশ মিয়া। তিনি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে উদ্ভূত পরিস্থিতি শুরু হলে মরিশাসের আসমোক কোম্পানি লিমিটেডের পক্ষ থেকে বিভিন্ন এলাকার মানুষের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে বিভিন্ন গুণীজনের মাধ্যমে প্রবাসে থেকেও তাদের নামের তালিকা তৈরি করেন। এরপর তাদের খাদ্য সহায়তা নামক কার্ড তৈরি করে প্রতি মাসে ১০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়। ঈদের সময় সেমাই-চিনি থেকে শুরু করে গরুর মাংস পর্যন্ত বিতরণ করেন। সেইসাথে নতুন পোশাকও তুলে দেন। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে আর্থিক অনুদান ছাড়াও খেলার সরঞ্চাম, চিকিৎসা ও ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়। কিন্তু খাদ্য সামগ্রী বিতরণে তার কোন দল নেই। দলমত নির্বিশেষে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করে যাচ্ছেন।
প্রবাস থেকে আকাশ মিয়া মুঠোফোনে বলেন, ছোট বেলা থেকেই শুনে আসছি, দু’বেলা দু’মুঠো খাওয়ার সংগ্রাম। এই সংগ্রামটাই আমি অসহায়দের জন্য করছি। অসহায়দের পেটে যতদিন ক্ষুধা আছে ততদিন তাদের পাশে থাকতে চাই। এটাই আমার তৃপ্তি। অসহায় মানুষগুলো পেটপুরে খাওয়ার পর তৃপ্তির যে হাসিটা দেয়, এটা আমার কাছে কোটি টাকার সম্বল। আমার এই পরিশ্রম স্বার্থক হয় তখন। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষেরা খাদ্য সামগ্রী পাওয়ার পরে তাদের হাসিমাখা মুখটা দেখার আনন্দটা নিজের চোখে না দেখলে বোঝানো যাবে না।