কুকিচিং বন্দিশালা থেকে মুক্ত ৫ ঠিকাদার

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৩, ০৫:১০ পিএম

ছবি: ভোরের কাগজ
বান্দরবানের থানচি উপজেলার লিটক্রে নির্মাণাধীন সড়কের ২২ কিলোমিটারের থামলো বম পাড়া হতে গত শনিবার অপহৃত ঠিকাদারসহ ৫ জনকে চারদিন পর ছেড়ে দিয়েছে স্থানীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি-চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)। তবে ঠিকাদারের ব্যবহৃত ৩টি মোটরসাইকেল রেখে দিয়েছে।
অপহৃত বোল্ডার পাথর ব্যবসায়ী কাজী নুরুল আনোয়ার ভোরের কাগজকে জানান, গত মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) রাতে থানচি লিটক্রে সড়কের ১৮ কিলোমিটার সিংত্লাংপি বম পাড়া নামক এলাকায় তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।
মুক্তিপ্রাপ্তরা হলেন- ঠিকাদার জিয়াউল হক জিয়া ও তার বন্ধু জিগর, ঠিকাদার মনির হোসেন ও তার রাজ মিস্ত্রী আব্দুল মান্নান এবং বোল্ডার পাথর ব্যবসায়ী কাজী নুরুল আনোয়ার।
কাজী নুরুল আনোয়ার আরো জানান, গত শনিবার (১১ মার্চ) বিকাল তিনটার দিকে থানছি-লিটক্রে সড়কে সীমান্ত সড়ক নির্মাণের কাজ শেষে দুটি ট্রাকযোগে ঠিকাদার ও সড়ক নির্মাণ কাজে নিয়োজিত শ্রমিক থানচি সদরে ফেরার পথে ২১ কিলোমিটার থামলো বম পাড়া নামক স্থানে কেএনএফ সদস্যরা গাড়ি লক্ষ্য করে অতর্কিতগুলি ছুুড়ে। এ ঘটনায় গুলিবৃদ্ধ হয় দুই গাড়ি চালকসহ চারজন। এ সময় কেএনএফ সদস্যরা ১৭ জনকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে নিয়ে যায়। ঘটনার পরের দিন সকালে ১২ জনকে ছেড়ে দিলেও ঠিকাদার জিয়াউল হক জিয়া ও তার বন্ধু জিগর, ঠিকাদার মনির হোসেন ও তার রাজমিস্ত্রি আব্দুল মান্নান এবং বোল্ডার পাথর ব্যবসায়ী কাজী নুরুল আনোয়ারকে অজ্ঞাত স্থানে আটক করে রাখে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপহৃতের স্বজনরা জানিয়েছে, কেএনএফ সদস্যরা তাদের অপহরণ করে নিয়ে চোখ বেঁধে গহীর জঙ্গলের দিকে নিয়ে যায়। পাহাড়ি ও ঝিরি পথে প্রায় তিন ঘন্টা পায়ে হেঁটে একটি ঝিরিতে আত্মগোপন করে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে অপহৃতদের নিয়ে অপহরণকারীরা ঘন ঘন স্থান পরিবর্তন করে। অপহরণকারীরা তাদের খাবারও দিয়েছে আবার মাঝে মাঝে নির্যাতনও করেছে। অবশেষে মঙ্গলবার রাতে কোন মুক্তিপণ ছাড়াই থানছি-লিটক্রে সড়কের ১৮ কিলোমিটার সিংত্লাংপি বম পাড়া নামক স্থানে মোটরসাইকেল মাধ্যমে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। পরে তাদের আত্মীয়-স্বজনরা সেখান থেকে গাড়িযোগে তাদের নিজ নিজ বাড়িতে নিয়ে আসে।
থানচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমদাদুল হক অপহৃত ৫ জন ফিরে আসার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, থানচি উপজেলা উদ্ভূত ভয়াবহ পরিস্থিতিতে নিরাপত্তার স্বার্থে অর্নিষ্টকালের জন্য থানচি-লিটক্রে সীমান্ত সড়ক নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে সেনাবাহিনীর প্রকৌশল বিভাগ। বর্তমানে পরিস্থিতির থমথমে রয়েছে।