কোম্পানীগঞ্জে হতাশায় ধুঁকছে পাথর শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১ এপ্রিল ২০২৩, ১২:২৫ পিএম

ছবি: সোহেল রানা, কোম্পানীগঞ্জ( সিলেট)
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর ও কানাইঘাটসহ চারটি উপজেলায় রয়েছে বেশ কয়েকটি পাথর কোয়ারি। এরমধ্যে সবচেয়ে বৃহৎ কয়েকটি পাথর কোয়ারি রয়েছে কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট উপজেলায়। এসব কোয়ারি থেকে থেকে পাথর উত্তোলন করে কয়েক লাখ শ্রমিক। চলত হাজার হাজার ছোট বড় ক্রাসার মেশিন ও ট্রাক্টর। কর্মসংস্থান হতো লাখ লাখ শ্রমিক ও পাথর ব্যবসায়ীদের। কিন্তু উচ্চপর্যায়ের সরকারি নিষেধাজ্ঞায় হঠাৎ করে বন্ধ করে দেয়া হয় পাথর কোয়ারিগুলো। তারপর ধীরে ধীরে শুরু হয় এলাকায় নীরব দুর্ভিক্ষ।
অনেকদিন বন্ধ থাকার পর পার্শ্ববর্তী উপজেলা ও একই আসনের গোয়াইনঘাট পাথর কোয়ারি থেকে শুরু হয়েছে পাথর উত্তোলন। কিন্তু নীরব সুনশান নীরবতা বিরাজ করছে কোম্পানীগঞ্জের পাথর কোয়ারিগুলোতে, যেন দেখার কেউ নেই।
কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট সিলেট- ৪ আসনের অন্তর্ভুত। এই আসনের এমপি প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। নির্বাচনী আসনের শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের করুণ অবস্থা দেখে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পরপর দুটি টি ডিও লেটারও দিয়েছিলেন। গেল বছরের ২৬ অক্টোবর গেজেটভুক্ত পাথর কোয়ারি সমূহের ব্যবস্থাপনা এবং পাথর কোয়ারির তালিকা হালনাগাদ করে অবিলম্বে চালু করার জন্য জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর ডিও দেন। পরে ২২ ডিসেম্বর কোয়ারিসমূহ থেকে পাথর উত্তোলনের অনুমতি না দিলে আগামী নির্বাচনে সিলেট-৪ আসনে সরাসরি এর বিরূপ প্রভাব পড়বে এবং এ জন্য আমাদেরই সবাই দায়ী করবে বলে উল্লেখ করেও একটি ডিও দিয়েছিলেন। ডিও লেটারের কয়েকমাস মাস পার হয়ে গেলেও বন্ধ রয়েছে কোম্পানীগঞ্জসহ অনেক পাথর কোয়ারি। তবে স্বল্প পরিসরে পাথর উত্তোলন শুরু হয়েছে গোয়াইনঘাট উপজেলার কোয়ারি থেকে।
কোম্পানীগঞ্জের সচেতন মহল, পাথর শ্রমিক ও ব্যবসায়িরা ধারণা করছেন ভালো গাইডলাইন ও সমঝোতা না থাকায় কোম্পানীগঞ্জে হচ্ছে না পাথর উত্তোলন। যেখানে পার্শবর্তী উপজেলা গোয়াইনঘাটে মিলেমিশে ও সুন্দরভাবে শুরু হয়েছে পাথর উত্তোলন।
কোম্পানীগঞ্জের বিসমিল্লাহ স্টোন ক্রাসার মিল মালিক নূর আলম জানান, দীর্ঘদিন পাথর কোয়ারি বন্ধ থাকায় পাথর না ভাঙায় অর্ধ কোটি টাকা মূল্যের ক্রাসার মেশিন জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। ৪/৫ বছর অপেক্ষা করে অবশেষে নিরুপায় হয়ে লোহার দামে কেজিতে বিক্রি করেছি ক্রাসার মেশিন। যা আমি আর্থিকভাবে অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হয়।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ১নং পশ্চিম ইসলামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাজী মো. জিয়াদ আলী বলেন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার প্রায় মানুষ খুব কষ্টে আছে। কোয়ারি বন্ধ থাকায় নেই কর্মসংস্থান এবং গেল মহামারি করোনা ও ভয়াবহ বন্যায় অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে লোকজন। বেকার পাথর শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের কথা চিন্তা করে তাদের কর্মসংস্থান হিসেবে পাথর কোয়ারি খুলে দেয়া দরকার। এ জন্য আমি উর্ধতন ও সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে আকুল আবেদন করছি।