পানি নামার সঙ্গে সঙ্গেই স্পষ্ট হচ্ছে ক্ষতির চিহ্ন

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২৩, ০৯:২৫ এএম

ছবি: ভোরের কাগজ
বৃষ্টি কমায় পরিস্থিতির উন্নতি হলেও পানিবন্দি লাখো মানুষ
ভারি ও অতিভারি বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমতে শুরু করায় চট্টগ্রাম বিভাগের বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হচ্ছে। নদীর পানি কমায় কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, চট্টগ্রাম ও বান্দরবানের নিম্নাঞ্চলের পানি কমতে শুরু করলেও এখনো পানিবন্দি হয়ে আছেন লাখ লাখ মানুষ। জলাবদ্ধতার কারণে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ও চট্টগ্রাম-বান্দরবান সড়কে এখনো যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। বৃষ্টি ও পাহাড়ধসে বৈদ্যুতিক লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ৩ দিন ধরে বিদ্যুৎহীন হয়ে আছে বান্দরবান পৌরসভা ও কয়েকটি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা। এদিকে পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে স্পষ্ট হচ্ছে ক্ষতির চিহ্ন। ত্রাণ তৎপরতা চালানোর পাশাপাশি ক্ষয়ক্ষতি নিরুপনে কাজ করে যাচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন। প্লাবিত এলাকায় উদ্ধার তৎপরতাসহ সার্বিক সহায়তার জন্য সেনাবাহিনীর সদস্যরাও মাঠে রয়েছেন। অন্যদিকে বন্যাকবলিত চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় নৌকা উল্টে তিন শিশুসহ চারজন নিখোঁজ আছেন। নাইক্ষ্যংছড়িতে বন্যার পানির স্রোতে ভেসে যাওয়া এক বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর
চট্টগ্রামের সঙ্গে দুই জেলার যোগাযোগ এখনো বিচ্ছিন্ন, নৌকা উল্টে নিখোঁজ ৪ : টানা বর্ষণে সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চন্দনাইশ, দোহাজারী, কেনারিহাটসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের অধিকাংশ এলাকা এখনো বন্যাকবলিত হয়ে আছে। এসব এলাকার সড়ক-উপসড়কের পাশাপাশি ফসলি জমি, ঘর-বাড়ি এখনো পানিতে নিমজ্জিত। পানিবন্দি হয়ে আছেন কয়েক লাখ মানুষ। অধিকাংশ রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ারও কোনো উপায় নেই।
এদিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ও চট্টগ্রাম-বান্দরবান সড়ক দিয়ে গতকাল বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে ছিল। পানি নামতে শুরু করলেও চন্দনাইশ ও সাতকানিয়ার বিভিন্ন এলাকায় সড়ক হাঁটু থেকে কোমর পানিতে ডুবে ছিল। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের অন্তত ৪টি স্থানে তৈরি হয়েছে যানজট। সড়কের উভয় প্রান্তে আটকে পড়েছে কয়েকশ ছোট-বড় যানবাহন। পানিতে হেঁটে কিংবা নৌকা-ভ্যানগাড়িতে চড়ে লোকজনকে সড়ক পাড়ি দিয়ে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে।
চট্টগ্রাম হাইওয়ে সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) নাসিম খান বলেন, চন্দনাইশের দোহাজারি থেকে সাতকানিয়ার কেরানিহাট পর্যন্ত এলাকায় অনেক যানবাহন বিকল হয়ে আছে। সড়কের উপরেও বিকল যানবাহন আছে। প্রায় অর্ধেক ডুবন্ত অবস্থায় শত শত বাস, ট্রাক দাঁড়িয়ে আছে বিভিন্ন এলাকায় মহাসড়কের পাশে। তিনি বলেন, মঙ্গলবার রাত থেকে বৃষ্টিপাত তেমন হয়নি। এজন্য পানি নেমে যেতে শুরু করেছে। এরপরও কোথাও হাঁটু পানি, কোথাও কোমর পর্যন্ত পানি আছে।
বাস, ট্রাক, বড় যানবাহন চলাচল সম্ভব হচ্ছে না। তবে অটোরিকশা কিংবা পিকআপ ভ্যানের মতো ছোট ছোট দুই একটি গাড়ি পানির ভেতর দিয়েও চলাচল করছে। যদি আর বৃষ্টি না হয়, তাহলে রাতের মধ্যে পানি নেমে যেতে পারে। এরপর যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হবে।
এদিকে বন্যাকবলিত চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় নৌকা উল্টে তিন শিশুসহ চারজন নিখোঁজ আছেন। মঙ্গলবার উপজেলার চরতি ইউনিয়নের দক্ষিণ চরতি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। চরতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রুহুল্লাহ চৌধুরী জানান, দক্ষিণ চরতি গ্রাম থেকে নৌকা নিয়ে নারী ও শিশুসহ আটজন পাশের সুঁইপাড়া গ্রামে যাচ্ছিলেন। মাঝপথে পানির স্রোতে নৌকা উল্টে যায়। এতে সবার পানিতে পড়ে গেলেও চারজন নিজেদের রক্ষা করতে সক্ষম হন। তিন শিশুসহ চারজন পানির স্রোতে তলিয়ে যায়।
কক্সবাজারে নামছে বন্যার পানি, ভেসে উঠছে ক্ষত
কক্সবাজারে গত ২৪ ঘণ্টায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে; পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে স্পষ্ট হচ্ছে ক্ষতির চিহ্ন। গতকাল বুধবার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বন্যায় মহাসড়ক, আঞ্চলিক সড়ক, কাঁচা রাস্তা ও কালভার্ট ভেঙে গেছে। বেড়িবাঁধ, ঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান যেন কেউ গুঁড়িয়ে দিয়েছে। ভেসে গেছে বীজতলা, ফসলের মাঠ ও মাছের ঘের।
মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে বুধবার ভোর পর্যন্ত জেলায় ভারি বৃষ্টি হয়নি; ভোরে হালকা বৃষ্টি হলেও তা বেশিক্ষণ স্থায়ী ছিল না। পানিতে তলিয়ে যাওয়া চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে সরাসরি যান চলাচল এখনো বন্ধ রয়েছে। তবে আনোয়ারা-বাঁশখালী-পেকুয়া আঞ্চলিক মহাসড়ক হয়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার যান চলাচল করছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিভীষণ কান্তি দাশ।
এদিকে পানি নামতে শুরু করলেও ঘরে ফেরা মানুষদের মধ্যে নতুন শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বাড়িতে রান্না করে খাবারের কোনো পরিবেশ নেই। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট। সকালে চকরিয়া উপজেলায় পানিতে ডুবে থাকা কিছু সড়কে ভাঙনের তীব্রতা চোখে পড়ে। কাকড়া-মিনাবাজার সড়কটির তিন কিলোমিটার এলাকায় কমপক্ষে ৫০টি স্থান ভেঙে গেছে। সড়কটি চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
স্থানীয়রা জানান, জিদ্দাবাজার-কাকারা-মানিকপুর সড়কের কয়েকটি অংশ ভেঙে গেছে। মাতামুহুরী নদীর নিকটবর্তী গ্রামের বসতঘরগুলো বিধ্বস্ত হয়েছে। চকরিয়া ও পেকুয়ায় বেশ কয়েকটি বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকেছে। মহেশখালী, কুতুবদিয়া, উখিয়া ও রামু থেকেও নানা ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বিভীষণ কান্তি দাশ বলেন, উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে কাজ চলছে। বন্যাকবলিত এলাকার মধ্যে চকরিয়া-বদরখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের ছয় কিলোমিটার, ইয়াংগা-মানিকপুর-শান্তিবাজার সড়কের ১১ কিলোমিটার, লক্ষ্যারচর-বেথুয়াবাজার-বাগগুজারা সড়কের ১১ কিলোমিটার, একতাবাজার-বনৌজা শেখ হাসিনা সড়কের আধা কিলোমিটার, বরইতলী- মগনামা সড়কের সাত কিলোমিটার, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কের আড়াই কিলোমিটার, তিন কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা, তিনটি কালভার্ট বিধ্বস্ত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তিনি আরো জানান, মাঠ পর্যায়ে উপজেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে সহায়তা দল কাজ করছে। প্লাবিত এলাকা, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে উদ্ধার তৎপরতাসহ সার্বিক সহায়তার জন্য সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর সদস্যরাও মাঠে রয়েছেন।
রাঙ্গামাটিতে পানিবন্দি লাখো মানুষ
টানা কয়েক দিনের বৃষ্টির পর গতকাল কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে রাঙ্গামাটির মানুষের মাঝে। মঙ্গলবার রাত থেকে বৃষ্টির পরিমাণ কমে এলেও গতকাল বিকাল থেকে আবারো আকাশ অন্ধকার করে আসায় বৃষ্টির শংকায় আশ্রয় কেন্দ্রে দিন কাটছে কয়েক হাজার মানুষের। পুরো জেলার পানিবন্ধী হয়ে আছে লাখো মানুষ।
রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, সপ্তাহব্যাপী অতি বৃষ্টির কারণে রাঙ্গামাটি জেলায় প্রায় ৩৭১টি স্থানে ক্ষুদ্র ও মাঝারি পরিসরে ভাঙন/পাহাড়ধসের সৃষ্টি হয়েছে। এতে আশ্রয়ণের ২১টি ঘরসহ মোট ৫০৬টি বসতঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলা সদরের সঙ্গে সব উপজেলার সড়ক যোগাযোগ স্বাভাবিক রয়েছে। তবে উপজেলা থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ের ২৮টি স্থানে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। বিভিন্ন সড়কের ৬৩ স্থান ও ১৮টি ব্রিজ/কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সমগ্র জেলায় প্রায় ৪০টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ২টি উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ সাময়িক বন্ধ রয়েছে। সম্প্রতি পাহাড়ি ঢলের কারণে আকষ্মিক বন্যায় ৪টি উপজেলায় ২২টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা প্লাবিত হয়েছে। পাহাড়ী ঢলে ২১৮৫টি ঘর এবং ৯টি বাজার প্লাবিত হয়েছে। বন্যায় দুর্গত লোকসংখ্যা প্রায় ২৮১৫০ জন। ১২৯৩.২৫ একর জমির ফসল এবং ৪৮টি পুকুরের মাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানিতে ডুবে নিখোঁজ রয়েছেন একজন। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এ পর্যন্ত ২৪৫ আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে ৩২৬৪ জন লোক অবস্থান করছেন এবং তাদের খাবার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বান্দরবানে বাস বন্ধ, নেই বিদ্যুৎ
গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে বান্দরবানের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ডুবে গেছে রাস্তাঘাট, বাড়িঘর, অফিস। সেইসঙ্গে বিভিন্ন স্থানে পাহাড়ধস ও রাস্তায় পানি জমে থাকায় বান্দরবানের সঙ্গে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে, চলছে না বাস। এদিকে সাংগু ও মাতামুহুরী নদীর পানি বাড়ায় ডুবে গেছে বান্দরবান পৌরসভার বেশিরভাগ এলাকা। অন্যদিকে বৃষ্টি ও পাহাড়ধসে বৈদ্যুতিক লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় রবিবার (৬ আগস্ট) দিনগত রাত ৩টা থেকে বান্দরবান পৌরসভা ও কয়েকটি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। ফলে বিঘিœত হচ্ছে ইন্টারনেট সেবা।
গতকাল বুধবার সকাল থেকে বৃষ্টি কমায় পানি নামতে শুরু করেছে নিম্নাঞ্চল থেকে, তবে এখনো পানিবন্দি রয়েছে বান্দরবান পৌর এলাকার আর্মি পাড়া, মেম্বারপাড়া, ইসলামপুর, বালাঘাটাসহ জেলার বিভিন্ন নিম্নাঞ্চলের জনগণ। এদিকে দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলার সাত উপজেলায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। সকাল থেকে বান্দরবান সেনা জোনের আওতায় বন্যা দুর্গতদের চিকিৎসা ও বিনামূল্যে ওষুধ দেয়া হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, বান্দরবানে গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে এ পর্যন্ত চারজন নিহত ও ৩৬ জন আহত হয়েছেন। দুর্গতদের আশ্রয়ণের জন্য জেলায় ২০৭টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা রাখা হয়েছে। দুর্গতদের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাতটি উপজেলায় চার লাখ ২০ হাজার টাকা ও ৮৫ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
এদিকে গতকাল সকাল সাড়ে ৭টার দিকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সোনাইছড়ি এলাকার কুদু খাল থেকে বন্যার পানির স্রোতে ভেসে যাওয়া ফংছা মার্মার (৬৫) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি ওই এলাকার ঠাকুর পাড়া ৪নং ওয়ার্ডের মৃত মংক্য মার্মার ছেলে।
খাগড়াছড়িতে পানিবন্দি ৯০০ পরিবার
খাগড়াছড়িতে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও এখনো প্লাবিত নিচু এলাকা। দীঘিনালা উপজেলায় তিন ইউনিয়নে পানিবন্দি হয়ে আছে অন্তত ৯০০ পরিবার। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্লাবিত হয়েছে ভাটিতে থাকা মেরুং ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নের সাত আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছে অন্তত দুই শতাধিক মানুষ।
এদিকে রাঙামাটির লংগদু উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগের সহজ রাস্তা রয়েছে খাগড়াছড়ি হয়ে। কিন্তু এখন সড়কে পানি থাকায় লংগদুর সঙ্গে খাগড়াছড়ির যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। মঙ্গলবার রাতে বৃষ্টি না হওয়ায় মাইনী নদীর পানি উজানে কমলেও মেরুংয়ে এসে স্থির রয়েছে। বন্যার পানিতে ডুবে আছে আমনের মাঠ, শতাধিক পুকুর।
দীঘিনালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, তিন হাজার ৭০০ হেক্টর আমনের মধ্যে ৪৫৩ হেক্টর জমির ফসল আক্রান্ত হয়েছে। আর ৪৫০ হেক্টর আউশের মধ্যে ২৮ হেক্টর জমি ক্ষতি হয়েছে। ৩৭ হেক্টর বীজতলার মধ্যে ১৮ হেক্টরই পানিতে তলিয়ে গেছে। মোট ৫২৪ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতি হয়েছে। উপজেলায় দেড় হাজার কৃষক এতে ক্ষতির শিকার হয়েছেন।
বন্যার পানিতে এখনো ডুবে আছে মেরুং বাজার। এখনো পানির নিচে আছে দেড় শতাধিক দোকান। মেরুং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদ বেগম লাকি বলেন, নিম্ন এলাকা প্লাবিত হয়ে এক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়। এর মধ্যে সাতটি আশ্রয়কেন্দ্রে আড়াইশ মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণসমাগ্রী পেয়েছি এবং তা মানুষের কাছে পৌঁছানো হয়েছে।
এদিকে বন্যা দুর্গত এলাকায় ত্রাণ সহায়তা দিয়েছে সেনাবাহিনীর দীঘিনালা জোন। দুপুরে কবাখালি ও মেরুংয়ের আশ্রয়কেন্দ্রে ত্রাণ সহায়তা দেয়া হয়। এ সময় সেনাবাহিনীর দীঘিনালা জোনের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর নাফিজ বলেন, যতদিন বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি না হয় ততদিন সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে পর্যায়ক্রমে ত্রাণ সহায়তা দেয়া হবে। দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আরাফাতুল আলম বলেন, বন্যা দুর্গত মানুষের সহায়তায় ১৫ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য বরাদ্দ করা হয়েছে।