কচুয়ায় সালিসে গৃহবধূকে বর্বর নির্যাতন, আটক ৪

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২৩, ০৭:১৩ পিএম

কচুয়া থানা। ছবি: সংগৃহীত
দ্বিতীয় স্বামী আলমগীর হোসেনসহ শতশত মানুষের সামনে সালিস বৈঠকে আকলিমা নামে এক গৃহবধূকে অমানবিক নির্যাতন করেছে তারই ভাসুরের (প্রথম স্বামীর ভাইয়ের ছেলে) ছেলে আলমগীর হোসেন। তার এমন নির্যাতনে মৌন সম্মতি ছিলো স্থানীয় ইউপি সদস্য ও বৈঠকের সভাপতি ফরিদ আহমেদের।
বুধবার (৯ আগস্ট) বিকেলে চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার সিংগাড্ডা গ্রামের মজুমদার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের ঘটনাটির ২৭ সেকেন্ডের ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেন স্থানীয় এক যুবক। মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়।
এ ঘটনা জানাজানির পর গতকাল রাতে ও বৃহস্পতিবার সকালে ফরিদ আহমেদসহ চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হলেন- ইউপি সদস্য ফরিদ আহমেদ (৩৫) জসিম উদ্দিন (৪৫) আনোয়ার হোসেন (৫০) নবির হোসেন (৪০)।
স্থানীয়রা জানায়, ৯ বছর আগে সিংগাড্ড গ্রামের মজুমদার বাড়ির গৃহবধূর স্বামী আবদুর রহিম মারা যায়। তাদের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। স্বামীর মৃত্যুর পর প্রাপ্ত ওয়ারিশের সম্পত্তি মেয়ের নামে হেবা করে দেয় ওই গৃহবধূ।
সম্প্রতি স্থানীয় এক যুবক আলমগীর হোসেনের সাথে বিয়ে হয় আকলিমার। কিন্তু বিষয়টি আলমগীরের প্রথম স্ত্রী মেনে নিতে পারেনি। তার মৌখিক কথার ভিত্তিতে বুধবার বিকেলে মজুমদার বাড়িতে সালিস বৈঠক ডাকে স্থানীয় মেম্বার ফরিদ আহমেদ। দ্বিতীয় বিয়ের বৈধ কাগজপত্র দেখালেও নির্যাতন করা হয় ওই গৃহবধূ আকলিমাকে। পাশেই বসা ছিলো তার বর্তমান স্বামী আলমগীর। বাড়ির উঠোনে জড়ো হয়েছিলো শতশত মানুষ কিন্তু কেউ কোন প্রতিবাদ করেনি।
ভাসুরের ছেলে আলমগীর হোসেনই কেনো চাচিকে এভাবে নির্যাতন করবে এ বিষয়ে স্থানীয়রা জানায়, আকলিমা তার প্রথম স্বামীর সংসারের মেয়েকে সম্পত্তি কেন হেবা করে দিলো। অর্থাৎ সম্পত্তি লিখে নেয়ার লোভ ছিলো ভাসুরের পরিবারের। তা না করতে পেরেই পূর্বের ক্ষোভ থেকে এই নির্যাতন করে ভাতিজা আলমগীর (আগের স্বামীর ভাইয়ের ছেলে)।
কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইব্রাহিম খলিল জানান, এ ঘটনায় কচুয়া থানায় মামলা দায়ের করেছেন নির্যাতিত আকলিমা বেগম। এরপ্রেক্ষিতে ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। মূল অপরাধীকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।