চলতি মাসেই চালু আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২২ আগস্ট ২০২৩, ১০:০৭ পিএম

আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথে ট্রেন চলাচলের জন্য প্রস্তুতির অংশ হিসাবে মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া গঙ্গাসাগর রেলওয়ে স্টেশন থেকে একটি গ্যাংকার (বিশেষ আকৃতিতে নির্মিত রেলের ইঞ্জিন) চালানো হয়। ছবি: জুটন বনিক, আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
দু’দেশের জনগণের বহুল কাঙ্খিত আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথে ট্রেন চলাচলের জন্য প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। প্রস্তুতির অংশ হিসাবে মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া গঙ্গাসাগর রেলওয়ে স্টেশন থেকে একটি গ্যাংকার (বিশেষ আকৃতিতে নির্মিত রেলের ইঞ্জিন) চালানো হয়। এর আগে আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথ প্রকল্পের পরিচালক (বাংলাদেশের অংশের) মো. আবু জাফর মিয়ার নেতৃত্বে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল গ্যাংকার যোগে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেন।
আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথ নির্মাণের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টরা জানায়, চলতি আগস্ট মাসেই এই রেলপথ দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হবে। এ সময় বাংলাদেশের গঙ্গাসাগর রেলওয়ে স্টেশন থেকে একটি শাটল ট্রেন শূন্য রেখা পর্যন্ত যাবে। অন্য দিকে আগরতলার বাধারঘাট রেলওয়ে স্টেশন থেকে একটি শাটল ট্রেন সেদেশেন শূন্য রেখায় আসবে।
আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথ নির্মাণ প্রল্পের পরিচালক মো. আবু জাফর মিয়া বলেন, আখাউড়া-আগরতলা প্রকল্পের রেললাইনের কাজ দেখার জন্য গঙ্গাসাগর রেলওয়ে স্টেশন থেকে শূন্যরেখা এলাকা ঘুরে দেখেছি। ইতিমধ্যেই প্রকল্পের প্রায় ৯৫ শতাংশের বেশি কাজ শেষ হয়েছে। আশা করছি চলতি আগস্ট মাসের মধ্যেই দুই দেশের গুরুত্বপূর্ণ আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্পে ট্রায়াল রান করা যাবে।
এ সময় টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের কান্ট্রি হেড শরৎ শর্মা, টেক্সমেকো রেলওয়ে প্রজেক্টের এজিএম ভাস্কর বক্সি, আখাউড়া-আগরতলা প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান তারেক, ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম মনিরসহ আখাউড়া-আগরতলা রেলওয়ে প্রকল্পের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় আখাউড়া থেকে আগরতলা পর্যন্ত রেলপথ স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়। বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশের রেলওয়ের সঙ্গে এ রেলপথ সংযুক্ত হবে। এতে দুই দেশের বাণিজ্য ও সংযোগ বৃদ্ধি পাবে। রেলপথ চালু হলে আগরতলা থেকে কলকাতা হয়ে শিলিগুড়ি পর্যন্ত এক হাজার ৭০০ কিলোমিটারের দূরত্ব কমে ৩৫০ কিলোমিটার হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার গঙ্গাসগর থেকে ভারতের আগরতলার নিশ্চিন্তপুর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। সাড়ে ১০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের আখাউড়া-আগরতলা রেলপথের বাংলাদেশ অংশে পড়েছে সাড়ে ৬ কিলোমিটার রেলপথ। প্রকল্পের বাংলাদেশ অংশ বাস্তবায়নে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ২৪১ কোটি টাকা। আগামী সেপ্টেম্বরে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী এই রেলপথ উদ্বোধনের কথা রয়েছে।
উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের চলমান পণ্য আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের পরিধি এই রেলপথে আরও বাড়বে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা। সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানির সুফল মিলবে ভোক্তা পর্যায়েও।