কক্সবাজারে হ্যান্ড স্যানিটাইজার উৎপাদন করছে আইওএম

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮ জুন ২০২০, ০৫:২৩ পিএম

আইওএমের উৎপাদিত হ্যান্ড স্যানিটাইজার

আইওএম উৎপাদিক হ্যান্ড স্যানিটাইজার।
চলতি বছরের মার্চ মাসের প্রথম দিকে বাংলাদেশে প্রথম কোভিড-১৯ শনাক্ত হওয়ার পরপরই চাহিদা বাড়ার কারণে হ্যান্ড স্যানিটাইজার (হাত জীবাণুনাশক) ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যগত পণ্য দুষ্প্রাপ্য হয়ে ওঠে। এর ফলে বিশ্বের অন্যতম বড় শরণার্থী শিবিরের শহর কক্সবাজারের স্থানীয় বাজারগুলোতে এসব পণ্যের দাম বৃদ্ধি পায়।
স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত স্বাস্থ্যগত পণ্যের কার্যকারিতা নির্ধারণের জন্য বাজারের পরিস্থিতি মূল্যায়ন করার পর কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম-জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক সংস্থা) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উৎপাদনের নির্দেশিকা মেনে স্থানীয়ভাবে হ্যান্ড স্যানিটাইজার উৎপাদন করার সম্ভাবনা বিশ্লেষণ করে।
আইওএমের ন্যাশনাল কমিউনিকেশন অফিসার তারেক মাহমুদ রবিবার (৭ জুন) বিকেলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো উল্লেখ করা হয়, সেই ধারাবাহিকতায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কাছ থেকে প্রায় ২০ হাজার লিটার হ্যান্ড স্যানিটাইজার উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল সংগ্রহ ও পরিবহণের প্রয়োজনীয় অনুমতি নেয়া হয়।
আইওএম এবং এর সহযোগী সংস্থা প্রত্যাশী ও গ্রিন হোপ ২০০ মিলিলিটারের প্রায় এক লাখ বোতল হ্যান্ড স্যানিটাইজার উৎপাদন করবে। উৎপাদিত হাত জীবাণুনাশক স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ জনস্বার্থে নিয়োজিত সংস্থাগুলোর ৫০ হাজার সদস্যদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন বলেন, কক্সবাজার জেলা প্রশাসন এবং আইওএম সমন্বিতভাবে কোভিড-১৯ মোকাবেলা কার্যক্রমে এই যৌথ প্রচেষ্টা অন্যতম। স্থানীয়ভাবে হ্যান্ড স্যানিটাইজা উৎপাদনের মাধ্যমে জেলার জনগোষ্ঠিদের মধ্যে এই ভাইরাস সংক্রমণ রোধ হবে এবং আমাদের স্বাস্থ্যকর অভ্যাসগুলো আরো উন্নত হবে।
উৎপাদন কাজের জন্য স্থানীয় জনগোষ্ঠীদের মধ্য থেকে নিয়োগ দেয়া হয় এবং আইওএম ও এর সহযোগী সংস্থাগুলোর মাধ্যমে পেশাদার ফার্মাসিস্টরা তাদের প্রশিক্ষণ দেন। নিয়োগকৃতরা অধিকাংশই কোভিড-১৯ এ লকডাউনের কারণে তাদের নিয়মিত জীবিকা ব্যবস্থা ব্যাহত হয়। আর্থিকভাবে তারা চরম দুর্দশার মধ্যে ছিলেন।
এই উৎপাদন কাজের মাধ্যমে তাদের আয়ের পথ আবার উন্মোচন হলো। আইওএম-এর স্বাস্থ্য বিভাগ এই উৎপাদন কাজের মান নিয়ন্ত্রণ, পরীক্ষা এবং প্রশিক্ষণ কার্যক্রম নিয়মিতভাবে মনিটরিং করছে।
[caption id="attachment_224578" align="aligncenter" width="700"]
এই কার্যক্রমে নিয়োজিত উখিয়ার তাসলিমা আক্তার বলেন, এই প্রথম আমি এ ধরণের প্রকল্পে কাজ করার সুযোগ পেলাম। এটা আমার প্রথম চাকরিও। তাই আমি খুব খুশি এবং লকডাউন পরিস্থিতে আমি আমার পরিবারকে আর্থিকভাবে সহায়তা করতে পারব বলে এখন নিশ্চিন্ত আছি।
আইওএম কক্সবাজার কার্যালয়ের ট্রানজিশন অ্যান্ড রিকভারি ডিভিশনের প্রধান প্যাট্রিক শেরিগনন বলেন, কক্সবাজার জেলা প্রশাসন এবং আইওএম-এর সমন্বিত এই প্রকল্পটি কোভিড-১৯ মোকাবেলা কার্যক্রমে ভূমিকা রাখবে। স্থানীয়ভাবে হ্যান্ড স্যানিটাইজার উৎপাদনের মাধ্যমে জেলার জনগোষ্ঠিদের মধ্যে এই ভাইরাস সংক্রমণ রোধ হবে এবং আমাদের স্বাস্থ্যকর অভ্যাসগুলো আরো উন্নত হবে। নিয়মিতভাবে মাস্ক পরিধান করা, হাত ধোয়া এবং শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার পাশাপাশি আমাদের স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ জনস্বার্থে নিয়োজিত সংস্থাগুলোর সদস্যদের মধ্যে এই রোগের সংক্রমণ ঠেকানোই হাত জীবাণুনাশক উৎপাদনের উদ্দেশ্য।