অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিলে নাজেহাল গ্রাহকরা!

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২০, ১০:২১ এএম
নগরীর কাজীর দেউড়ি এস এস খালেদ রোড সানমার এলভেরার ফ্ল্যাট এ-১০’র বাসিন্দা টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক লতিফা আনসারী রুনা। তিন মাসের এরিয়ার ও মে মাসের ৮ হাজার ৮৯০ টাকাসহ তার আবাসিক বিল এসেছে ১১ হাজার ৬৪৫ টাকা। অথচ করোনার আগে তার আড়াই হাজার /তিন হাজার টাকা বিল আসতো। মনগড়া বিদ্যুৎ বিল নিয়ে লতিফা আনসারী রুনা তার ফেসবুক পোস্টে অভিযোগ করে বলেন, করোনায় মরতে হবে না আমার। বিদ্যুৎ বিল দিয়েই মরতে হবে আমার মতো মধ্যবিত্তদের। এ মাসের বিল এসেছে ১১ হাজার ৬৪৫ টাকা। এসব অনিয়মের কথা কার কাছে বলব? এই বিল পরিশোধ করতে হলে আমার এ মাসে না খেয়ে মরতে হবে।
শেরশাহ বায়েজিদ দীঘির পাড়ে থাকেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নির্বাচন পর্যবেক্ষক উপকমিটির সদস্য মো. সালাউদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, তার বাসায় আগে যে মিটারে বিল আসতো ১৫০০ টাকা এবার সেই মিটারে বিল করা হয়েছে ৭৫০০ টাকা। বিদ্যুতের লোকজন মাঠ পর্যায়ে মিটার রিডিং করতে আসেন না। আমি দুই নম্বর গেট অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করেছি। উনারা বলেছেন, প্রিন্টেড বিল আর সমন্বয় করা যাবে না। আগামীতে অভিযোগের ভিত্তিতে সমন্বয় করে দেয়া হবে।
শুধু লতিফা আনসারী রুনা বা মো. সালাউদ্দিন নয়। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) এমন তুঘলকি বিলকাণ্ডের খেসারত দিতে হচ্ছে লাখো গ্রাহককে। কিন্তু এই ভোগান্তির নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হয়েও কোনো সদুত্তর পাচ্ছেন না তারা। আগামীতে ‘সমন্বয় করা হবে’ গ্রাহকদের এমন আশার বাণী শুনিয়েই দায় সাড়ছে বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। এতে করে দিন দিন বিদ্যুৎ বিভাগের ওপর গ্রাহকদের ক্ষোভ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাদের অভিযোগ, ডোর টু ডোর মিটার রিডিং না করে বিল তৈরি, গড় বিল তৈরির কারণে গ্রাহকদের ওপর এমন দণ্ড এসে পড়েছে।
এ ব্যাপারে পিডিবির চট্টগ্রাম শাখাপ্রধান প্রকৌশলী মো. শামসুল আলম ভোরের কাগজকে বলেন, বিদ্যুতের বিল বেশি করার অভিযোগ নিয়ে আমাদের সঙ্গে অনেকেই যোগাযোগ করেছেন। অভিযোগ মোতাবেক গ্রাহকের ঠিকানায় গিয়ে মিটার রিডং করে পরীক্ষা করেছি। অধিকাংশ বিল রিডিংয়ের সঙ্গে মিল আছে। তাছাড়া করোনার এই দুঃসময়ে লোকজন ঘরে অবস্থান করায় বিদ্যুতের ব্যবহারও বেড়েছে। তবে বিচ্ছিন্ন কিছু মিটার রিডিংয়ের ভুল বিভ্রান্তি হতে পারে। আমাদের পক্ষ থেকে গ্রাহকের অভিযোগ সমাধান করে দেয়া হচ্ছে। আমাদের দক্ষ জনবল অনেকেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ইতোমধ্যে দুজন মারাও গেছেন। চাপের মধ্যেই সিস্টেম সচল রাখার চেষ্টা করছি। নগরে অধিকাংশ ক্ষেত্রে বাড়ির মালিক পক্ষ আবাসনের রিডিং দেখে আমাদের ডকুমেন্ট দেন। সে ক্ষেত্রে তেমন ভুল হয় না। তবুও অভিযোগ পেলে আমাদের পক্ষ থেকে তা সমন্বয় করে দেয়া হচ্ছে।
তবে বিদ্যুৎ গ্রহীতাদের এ ধরনের সমস্যা দেখার দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)’র কনজুমার অ্যাফেয়ার্সের উপপরিচালক মো. ফিরোজ জামান ভোরের কাগজকে বলেন, ভোক্তা সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ জানিয়ে প্রতিকার না পেলে বিইআরসি চেয়ারম্যান বা সচিবের কাছে অভিযোগ করতে পারেন গ্রাহকরা। তখন বিষয়টি সংশ্লিষ্ট বিতরণ কোম্পানির কর্মকর্তাদের জানিয়ে প্রতিকার করা হবে।