কুপুত্রের কাণ্ডে ঘরছাড়া বাবা-মা, আশ্রয় গাছতলায়!

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২০, ০৬:৪৯ পিএম

পিতা আকবর আলী ও মাতা আমেনা খাতুন

বাবা আকবর আলী ও মা আমেনা খাতুন
নিজের মেয়েদের কিছু সম্পত্তি লিখে দেয়ায় বাবা মাকে তিন বছর আগে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন ছেলে, ছেলের বউ ও নাতি। এরপর ছেলেও বাকি সম্পত্তি নিজের নামে লিখে নেয়। তারপরও থেমে থাকেন নি। বাবা মায়ের ওপর চালান শারীরিক নির্যাতন।
এমন হৃদয় বিদারক ঘটনাটি ঘটে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার শ্রীপুর দক্ষিণপাড়া গ্রামে। কখনো অন্যের বাড়ি, কখনো মেয়ের বাড়িতে থাকতেন এই বৃদ্ধ দম্পতি। অবশেষে সহায় সম্বল হারিয়ে নির্যাতনের শিকার হওয়া বাবা আকবর আলী এবং মা আমেনা খাতুনের মাতা গোঁজার ঠাঁই হয় গাছতলায়। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। বুধবার (১ জুলাই) ইউপি চেয়ারম্যান ফজলুল হক মাখনের কাছে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী
এ বিষয়ে বাক্তা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফজলুল হক মাখন বলেন, ঘটনাটি খুব ন্যাক্কারজনক। আমি নির্যাতিত বাবার কাছে ঘটনাটি শুনেছি। এরপর ছেলে কাদের, তার স্ত্রী কুলসুম ও নাতি মামুনকে কয়েকবার চেষ্টা করেও হাজির করতে পারি নি। আমি চাই এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। পরিষদের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।
[caption id="attachment_229605" align="aligncenter" width="816"]
স্থানীয় এলাকাবাসী, কছিম উদ্দিন, নিয়ত আলি, সোহাগ, সিদ্দিক, নজরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, অসহায় বাবা আকবর আলীর ওপর এমন অমানবিক নির্যাতন বেশ কয়েক বছর ধরে চলছে। সম্প্রতি রতন নামের একজন ভ্যান চালক নির্যাতনের প্রতিবাদ করতে গেলে বেধড়ক পেটায়। রতনের নামে থানায় অভিযোগ করে পুলিশি হয়রানি করা হয়। সন্তানের হাতে বাবা মায়ের এমন নির্যাতন সহ্য করার মতো না। আমরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই, প্রশাসনের কাছে তার বিচার দাবি করছি।
শ্রীপুর গ্রামের আকবর আলীর এক ছেলে ও দুই মেয়ে। আকবর আলী তার সম্পত্তির কিছু অংশ মেয়েদের নামে লিখে দেয়ার পর থেকে ছেলের চক্ষুশূল হয়ে যান। তখন থেকেই নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হতে হয় এই বৃদ্ধ দম্পতিকে। এক পর্যায়ে ভুলিয়ে-ভালিয়ে বাবার কাছ থেকে লিখে নেন তার বাকি জমিটুকু, তারপর থেকেই শুরু হয় নির্যাতনের স্টিম রোলার। বন্ধ করে দেয়া হয় খাবারও। বের করে দেয়া হয় বাড়ি থেকে।
এ বিষয়ে ফুলবাড়িয়ায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল সিদ্দিকী বলেন, পৃথিবীতে এর চেয়ে অমানবিক আর ন্যাক্কারজনক ঘটনা কিছু হতে পারে না। বিষয়টি আমি এইমাত্র শুনলাম। অবশ্যই বিষয়টির দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।