পুলিশের লাথির আঘাতে মুমূর্ষু গর্ভবতী

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৫:২৪ পিএম

ফাইল ছবি
চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে এক পুলিশ সদস্যের লাথির আঘাতে মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এক গর্ভবতী নারী। আহত গর্ভবতী মহিলার নাম নিপা (৩৫)। তিনি ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
আহত নিপা জানান, মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটা দিকে চার জন লোক আমাদের বাড়িতে এসে জুয়েলকে খুঁজতে থাকে। তিন জন ঘরে ঢুকলে আমি তাদের পরিচয় জানতে চাই। এসআই কাউছার তাকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে জুয়েলের রুমের দিকে আসতেই আমি দরজায় দাঁড়াই। এসআই কাউছার আমাকে হঠাৎ চড় থাপ্পড়সহ মারধর করে মাটিতে ফেলে দিয়ে লাথি মারতে থাকে। আমার হাতে পায়ে লাথির আঘাতে ফুলে গেছে। আমি নিজেকে গর্ভবতী বলে মারতে নিষেধ করি। কাউছার তা শোনেন নি। আমাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে আমার মা জোসনা বেগম (৬০) কে পুলিশ মারধর করে।
এদিকে এসআই কাউছারের লাথির আঘাতে অন্তঃসত্ত্বা নিপার পেট থেকে পানি বের হওয়া শুরু হলে তাকে স্থানীয় সন্দ্বীপ মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালের গাইনী ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়। পরদিন বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) সেখান থেকে চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম আনা হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলুল করিম জানান, নিপার পেটে আঘাতের কারণে তার পেট থেকে পানি বের হওয়া শুরু হয়। আমরা ধারণা করছি, তার পেটে রক্তক্ষরণ হয়েছে। বাচ্চার অবস্থা খারাপের দিকে যাওয়া শুরু করার কারণে তাকে চট্টগ্রামে পাঠানোর পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
জানা যায়, জুয়েল ও তার আমেরিকা প্রবাসী চাচার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জায়গা সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ ছিল। এক সপ্তাহ আগে চাচার ঘর নির্মাণের সময় মিস্ত্রিকে মারধরের অভিযোগে চাচী ইসরাত জাহান বাদী হয়ে সন্দ্বীপ থানায় একটি মামলা দায়ের করে। জুয়েলকে সন্দ্বীপ থানা থেকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।ঘটনার পরপরই সন্দ্বীপ থানা থেকে এসআই কাউছারকে ক্লোজড করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়।
সন্দ্বীপ থানার পুলিশের (ওসি) বশির আহম্মদ খান বলেন, এই ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। কাউছার আমাকে না জানিয়ে আসামি ধরতে গেছে। ঘটনাটি শুনার পরপরই আমি উপরস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে তাকে ক্লোজ করা হয়েছে।
এদিকে ঘটনাটি সাজানো বলে দাবি করে এসআই কাউছার জানান, আমি ওসি স্যারকে জানিয়েই ধরতে গেছিলাম। আমি কোনো মহিলাকে আহত করিনি। এগুলো করে আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে।