সড়কের বেহাল দশা, জনদুর্ভোগ চরমে

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৫:৩০ পিএম




সড়কের বেহাল দশা। ছবি: প্রতিনিধি
বাউফলের কালিশুরী-কাছিপাড়া ইউনিয়ন সংযোগ সড়কটি এখন বেহাল অবস্থা। দীর্ঘদিন ধরে সড়কটির সংস্কার হয়নি। এতে সড়কের ইট, খোয়া, পাথর উঠে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে খানাখন্দের। অযোগ্য হয়ে পড়েছে চলাচলের। সম্প্রতি অবিরাম বর্ষণে সড়কটি কাদামাটিতে একাকার হয়ে গেছে। বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে সব ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থা। এর ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছে কয়েক ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরেরর অধীন ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ওই সড়কটি নির্মাণ করা হয়েছিল। সড়কটি নির্মাণের সময় নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় বছর না ঘুরতেই সড়কটির বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু ওই সময় কর্তৃপক্ষ সেদিকে কোনো নজরই দেয়নি।
বাউফলের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জনসাধারণের জন্য কালিশুরী-কাছিপাড়া সড়কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সড়কের দুই পাশে রয়েছে হাজেরা তালুকদার মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ছিটকা মহসিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পোনাহুরা ফাজিল মাদ্রসাা, ছিটকা প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাজাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সড়কটি দিয়ে বাউফলের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল কাছিপাড়া, কালিশুরী, ধুলিয়া এবং কনকদিয়াসহ অন্যান্য ইউনিয়নের হাটবাজারে পণ্য পরিবহন করা হয়ে থাকে। এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ শিক্ষকদের যাতাযাতের একমাত্র পথ ওই সড়কটি।অপরদিকে কালিশুরী, ধুলিয়া এবং কেশবপুর ইউনিয়নের মানুষ ওই সড়কটি দিয়ে অধিকতর কম সময়ে জেলা সদরে পৌঁছাতে পারেন। বর্তমানে সড়কটি চাষাবাদের জমির মতোই হয়ে গেছে। চলতে পারছে না পণ্যবাহী ছোট-বড় যানবাহন। পণ্যের সরবরাহ অপ্রতুল হওয়ায় ব্যবসায়ীদের বেশি মূল্যে মালামাল বিক্রি করতে হচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। রিক্সা, মটর সাইকেলসহ অন্যান্য যানবাহনও চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এর ফলে বেকার হয়ে পড়েছে দৈনিন্দন খেটে খাওয়া শত শত মানুষ।
উপজেলার ধুলিয়া স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক মো. ইসমাইল তালুকদার বলেন, এই সড়কটি দিয়ে তার প্রতিদিন কর্মস্থল যেতে হয়। বর্তমানে সড়কটির এমনই দশা হয়েছে যে, জুতা পায়েতো দূরের কথা, খালি পায়ে যাওয়াও কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়েছে। সড়কটির দিকে সংশ্লিষ্টদের কোনো নজরই নেই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খোলার আগেই সড়কটির সংস্কার করা দরকার।
গাড়ি চালক নিজাম মীর বলেন, কালিশুরী, ধুলিয়া ও কেশবপুর ইউনিয়নের মানুষের জেলা সদরে যাতায়াতের অন্যতম পথ এই সড়কটি। প্রতিদিনই শত শত যাত্রী এই সড়কটি দিয়ে যাতায়াত করছেন। তাদের যাতায়াতের বাহন হচ্ছে মটর সাইকেল। এলাকার বেকার যুবকরা মটর সাইকেল ভাড়ায় চালিয়ে সংসার চালাতো। এখন সেটাও বন্ধ হয়ে গেছে।
কাছিপাড়া আব্দুর রশিদ মিয়া ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক বাবুল আক্তার বলেন, সড়কটির করুণ দশা দেখে মনে হচ্ছে শনির দশা লেগেছে।
এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে বাউফল উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের কোনো কর্মকর্তাই কথা বলতে রাজি হননি। মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত রাস্তাটি সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।