সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ
খুলনায় জাল দলিলের মাধ্যমে ভূমিদস্যুদের জমি দখলের চেষ্টা

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯ মে ২০২৪, ০৯:২০ পিএম

খুলনায় জাল দলিলের মাধ্যমে জমি দখলের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করছেন ভুক্তভোগীরা
খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা উপজেলায় জমি দখলের চেষ্টা, সাইনবোর্ড ভেঙ্গে ফেলাসহ হুমকির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগীরা। শনিবার খুলনা প্রেস ক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগীরা। ভুক্তভোগীদের মধ্যে সরকারি কর্মকর্তা, অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী এবং অন্যান্য পেশার সাধারণ মানুষ রয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে তারা ন্যায় বিচারের দাবী জানান।
জমির ১৯ জন মালিক যথাক্রমে রেজাউল হক, অ্যাডভোকেট রুহুল আমিন, আসলাম সানা, জয়নুল আবেদীন, এসএম শফিকুল ইসলাম, নওসের আলী, নজরুল সাহেব, মনোয়ারা বেগম, সাজেদা খাতুন, আ. মোক্তাদের, তাহেরা খাতুন, বাহিলা খাতুন, আব্দুল কুদ্দুস, গোলাম মোসাব্বীর, লায়লা খালেদ, রাজিয়া বেগম, মীর আব্দুর রাজ্জাক, মীর কুদ্দুস আলী এবং মনোয়ারা পারভীন। সবার পক্ষে মো. আব্দুল কুদ্দুস সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, খুলনা নগরীর হাজী মহসীন রোড এলাকার একাধিক মামলার আসামি ও কুখ্যাত ভূমিদস্যু মাহফুজ চৌধুরী ও আবু নঈম, ফরাজীপাড়া লেনের মীর মাছুদ আলী এবং দড়গাপাড়া রোডের জাহাঙ্গীর কবিররা আমাদের জমি থেকে উচ্ছেদের অপচেষ্টা করছেন। আমাদের জমি দখলের চেষ্টা করছেন এবং সাইনবোর্ড ভেঙ্গে ফেলাসহ বিভিন্ন সময়ে হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন।
তিনি আরো বলেন, খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার হরিণটানা থানা এলাকার পল্লী বিদ্যুৎ সংলগ্ন খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের দুই পাশে আমাদের ৩.৬০ একর জমি রয়েছে। আমরা ১৯ জন মালিক ওই জমি প্রায় ৭০-৮০ বছর ধরে ভোগ দখল করে আসছি। আমরা অনেকেই ব্যাংক ঋণ নিয়ে, পেনশনের অর্থ ও ব্যবসা বাণিজ্য করে সারাজীবনের সঞ্চয়িত অর্থে মার্কেট, কমিউনিটি সেন্টার, টাইলস কারখানা, একতলা ও দোতালা পাকা বাড়ি, দোকানপাট নির্মাণ করেছি।
আবার কেউ কেউ সেখানে মাছের ঘের করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করছেন। কিন্তু মাহফুজ চৌধুরী ও আবু নঈম, ফরাজীপাড়া লেনের মীর মাছুদ আলী এবং দড়গাপাড়া রোডের জাহাঙ্গীর কবির জালজালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া দলিল তৈরি করে আমাদের রেকর্ডীয় জমি দখলের পায়তাড়া করছে।
তিনি উল্লেখ করে বলেন, ভূমিদস্যুরা ওই এলাকার বিআরএস ৪৮৩ নং খতিয়ানের ১৮০ নং দাগে ৩.৪৫ একর এবং ১৮৪ নং দাগে ১৫ শতক জমি, মোট ৩.৬০ একর জমি জাল দলিল সৃষ্টি করে প্রাইমারী ডিগ্রি নিয়ে আমাদের উচ্ছেদের জন্য প্রভাবশালীদের নাম ভাঙ্গিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে।
কিন্তু বিগত দিনে তাদের কখনো ওই এলাকায় দেখা যায়নি। অথচ জাল দলিল করার পর তিন মাস আগে হঠাৎ তারা জমি দখলের পায়তাড়া শুরু করেন। তারা সন্ত্রাসীদের নিয়ে একাধিকবার প্রকৃত জমির মালিকদের সাইনবোর্ড ভেঙ্গে ফেলে দেয়। তারা প্রতিনিয়ত আমাদেরকে হুমকি দিয়ে চলেছে। বিষয়টি স্থানীয় থানাকেও আমরা অবহিত করেছি।
তিনি ন্যায় বিচারের দাবী জানিয়ে বলেন, সারাজীবনের কষ্টার্জিত অর্থ দিয়ে জমির উপর বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ করে দীর্ঘদিন ধরে ভোগ দখল করে আসছি। এই অবস্থায় ভূমিদস্যুদের হুমকিতে আমরা ভীতিকর অবস্থায় দিনাতিপাত করছি এবং চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমরা প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি এবং ন্যায় বিচার দাবি করছি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ভুক্তভোগীরা বলেন, তারা জোরপূর্বক জমি দখলের চেষ্টা করে বালি ফেলার সময় সংশ্লিষ্ট থানায় অভিযোগ জানালে থানা পুলিশ বালি ফেলা বন্ধ করে দেয়। কিন্তু তারপরও মাহফুজ চৌধুরী ও আবু নঈম, ফরাজীপাড়া লেনের মীর মাছুদ আলী এবং দড়গাপাড়া রোডের জাহাঙ্গীর কবির থেমে নেই। তারা বলেন, মাহফুজ চৌধুরীর বিরুদ্ধে আরো একাধিক মামলা রয়েছে। আমরা উনিশ জন জমির মালিক তাদের অত্যাচারের শিকার হচ্ছি। আমরা এ অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায় বিচার আশা করছি।