ডুমুরিয়ায় আগাম শিম চাষে স্বাবলম্বী কৃষকরা

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০২:০১ পিএম

শিমের পরিচর্যা করেন এক কৃষক। ছবি: প্রতিনিধি

শিম গাছ। ছবি: প্রতিনিধি
ডুমুরিয়ায় শিমের চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন কৃষকরা। খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলায় খাদ্য শস্য নামে খ্যাত আটলিয়া ও খর্নিয়া দুই ইউনিয়নের মাঠজুড়ে শুধু শিম আর শিমের বাগান। এ অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে বাড়ছে শিমের চাষ। এখানকার আবাদি জমি ও লিজ ঘেরের ভেড়ীতে দুই যুগের বেশি সময় ধরে নিজ উদ্যোগে কৃষকরা নানা পদ্ধতিতে বিভিন্ন জাতের সবজি চাষ করে আসছেন।
ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মোছাদ্দেক হোসেন জানান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব মতে ইউনিয়ন দুটিতে এ বছর প্রায় ১ শত ৫০ হেক্টর জমিতে শিম চাষ হয়েছে।
আটলিয়া ও খর্নিয়া ইউনিয়নের ভরাতিয়া, গোবিন্দকাটি, কাঠালতলা, চুকনগর, টিপনা, মেছাঘনা, ভদ্রদিয়া, পাচপোতা, গোনালী, বামুন্দিয়াসহ বিভিন্ন গ্রামের মাঠ ঘুরে দেখা যায়, এলাকাগুলো যেন শিম দিয়ে ঘেরা। প্রতিটি কৃষক পরিবারই তাদের আবাদি জমিতে শিম চাষ করছেন। মাঠের পর মাঠ ঘিরে রয়েছে সবুজ শিম ক্ষেত।
এলাকাবাসী জানান, এসব এলাকার অধিকাংশ লিজ ঘেরের ভেড়ীতে ও পতিত জমিতে শিম চাষের জন্য উপযোগী। মাঠের পর মাঠ এক সময় বিভিন্ন সবজিতে ঠাসা থাকলেও বর্তমানে স্থানীয় কৃষকরা নিজ উদ্যোগে শিম চাষ শুরু করেছেন।
টিপনা গ্রামের কৃষক মোল্লা আজিজ বলেন, আমি এ বছর এক বিঘা জমিতে সাদা জাতের শিম চাষ করেছি। পুরোদমে বিক্রিও শুরু করেছি। তিনি লাভবান হবেন বলে আশাবাদী।
[caption id="attachment_244383" align="aligncenter" width="700"]
বামুন্দিয়া গ্রামের শিম চাষি আতিয়ার রহমান জানান, শিম চাষে শারীরিক পরিশ্রম অনেক বেশি। অন্য সবজির চেয়ে এর পরিচর্যা একটু বেশি করতে হয়। কষ্ট হলেও ফলন ভাল হলে শিম চাষে লাভবান হওয়া সম্ভব।
কৃষকদের ভাষ্যমতে, বিঘা প্রতি এ বছর পুরো ২০/২৫ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। ফলন ও বাজার ভাল থাকলে প্রায় এক লাখ টাকার শিম বিক্রি সম্ভব।
ভরাতিয়া গ্রামের শিম চাষি ইমরোজিত মণ্ডল জানান, তিনি এ বছর এক বিঘা জমিতে শিমের চাষ করেছেন। তার ক্ষেতের শিম ইতোমধ্যে পুরোদমে বিক্রিও শুরু হয়েছে।
শোভনা গ্রামের শিম চাষি মিজানুর রহমান বলেন, আমি দুই বিঘা জমিতে শিম চাষ করেছি। বর্তমানে শিম বিক্রি করে তার খরচ প্রায় উঠতে শুরু করেছে।
স্থানীয় ডুমুরিয়া কাঁচা বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, পুরোদমে শিম উঠতে শুরু করছে। এখান থেকে ঢাকা ও বরিশালের পাইকাররা সবচেয়ে বেশি শিম কিনে নিয়ে যায়। প্রতিদিনই ৩০/৪০ ট্রাক লোড হয় এখনকার কৃষকরা শিম চাষ করে তাদের জীবন-জীবিকা নির্বাহ করছে। আর্থিক ও সামাজিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে কৃষকরা।
চাষিরা জানান, বিভিন্ন এনজিও ও সার বিক্রেতাদের নিকট থেকে কিস্তি ও বাকিতে সার ক্রয় করে শিম চাষ করে থাকেন। তাদের দাবি, চাহিদা অনুযায়ী স্বল্প সুদে কৃষি ঋণ, আধুনিক প্রশিক্ষণ ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নিয়মিত তদারকি থাকলে কৃষকরা গোটা খুলনা জেলার অর্থনীতিকে আরও দৃঢ় করতে সক্ষম হবে। একই সঙ্গে নিজেদেরও আর্থসামাজিক মর্যাদাও বাড়বে।