ধর্ষণ মামলায় ৫ বছর ধরে পলাতক আসামি গ্রেপ্তার

নীলফামারী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০ জুন ২০২৪, ১১:৩৪ এএম

ছবি: ভোরের কাগজ
গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর পরেই নীলফামারীর বহুল আলোচিত সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রীর ধর্ষণ মামলায় ৫ বছর ধরে পলাতক অভিযুক্ত আসামী রনিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
বুধবার (১৯ জুন) সন্ধ্যায় শহরের পুরাতন রেল স্টেশন এলাকা হতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত রনি ইসলাম (৩৪), জেলার সদর উপজেলার চড়চড়াবাড়ী দক্ষিণপাড়া (রামনগর) এলাকার মো. আব্দুল লতিফ এর ছেলে।
জানা যায়, গ্রেপ্তারকত রনি ইসলাম এর সঙ্গে প্রেমে জড়িয়ে সপ্তম শ্রেণীতে পড়াকালীন সময়ে মেধাবী শিক্ষার্থী শাপলা (ছদ্মনাম) হয়ে পড়ে অন্তঃসত্বা। ফলে, অষ্টম শ্রেণীতে হয়েছেন মা। এরপর তার কোল আলোকিত করে আসে একটি ফুটফুটে কন্যা সন্তান। বর্তমানে শিশুটির বয়স ০৬(ছয়) বছর। একদিকে স্বামীর পরিচয় ছাড়া সমাজে প্রতিনিয়ত লাঞ্চিত হতে হচ্ছিল শাপলাকে। অপর দিকে পিতৃপরিচয় ছাড়া স্কুলে ভর্তি হতে পারছিল না, ফুটফুটে ওই কন্যা সন্তানটি।
আরো পড়ুন: হত্যাচেষ্টায় চেয়ারম্যানের ভাতিজার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ
গত দশ বছর আগে মাকে হারানো ভুক্তভোগী কুলসুম এর বাবা দেলোয়ার হোসেনও একজন শারীরিক প্রতিবন্ধি। সাত বছর আগে সপ্তম শ্রেণীতে পড়াকালীন সময়ে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভুক্তভোগীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে বখাটে গ্রেপ্তারকৃত রনি ইসলাম। ঘটনার দিন ভুক্তভোগীর বাবা বাড়িতে না থাকায় রনি এসে জোরপূর্বক ভুক্তভোগীর সঙ্গে শারিরীক সম্পর্ক করে। এমনকি হুমকি দেয় কাউকে বললে মেরে ফেলবে। শিশুটি গর্ভে আসায় গ্রাম্য সালিশে সামান্য ভূল স্বীকার করে গর্ভপাতের জন্য ১০ হাজারসহ আরও টাকা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অনত্র বিয়ে করে নিরুদ্দেশ হয় বখাটে রনি। কিন্তু অল্প বয়সে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় গর্ভপাতের ঝুঁকি নিতে চায়নি চিকিৎসক। এর ফলে পাঁচ বছর আগে পিতৃপরিচয় পাওয়ার আশায় ২০১৯ সালে নীলফামারী সদর থানায় রনি ইসলামের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগীর বড় বোন। যার মামলা নম্বর-১৮৮, তারিখ ১৮/০৭/২০১৯, ধারা- ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধনী-২০০৩) এর ৯(১)। মামলাটি নীলফামারী থানায় রুজু হওয়ার পর থেকেই অভিযুক্ত রনি পলাতক থাকায় গ্রেপ্তারের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন পুলিশ।
এমতাবস্থায়, নীলফামারীর সংবাদ মাধ্যম কর্মীরা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে এই বিষয়টি প্রচার করলে র্যাব-১৩, সিপিসি-২, নীলফামারী ক্যাম্পের দৃষ্টিগোচর হয়। পরবর্তীতে, আসামী রনিকে গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে শুরু হয় র্যারের গোয়েন্দা তৎপরতা। এরই ধারাবাহিকতায় আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় বুধবার (১৯ জুন) নীলফামারী রেলওয়ে স্টেশন থেকে অভিযুক্ত পলাতক আসামী রনিকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
র্যাব-১৩, সিপিসি-২, নীলফামারী ১৩, সিপিসি-২, নীলফামারী ক্যাম্প জানায়, গ্রেপ্তারকৃত ব্যাক্তির বিরুদ্ধে আইনানুগ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
এদিকে, ৫ বছর ধরে পলাতক ধর্ষণ মামলার অভিযুক্ত আসামী রনি ইসলামকে গ্রেপ্তারে র্যাব’কে সাধুবাদ জানিয়েছেন ভুক্তভোগীর পরিবারসহ সচেতন মহল।