পরকীয়া করতে গিয়ে গণধোলাই

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ১১:১৫ পিএম

পরকীয়া করতে গিয়ে গণধোলাই। ছবি: সংগৃহীত
ফরিদপুরের সালথায় পরকীয়া প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে গ্রামবাসীর হাতে গণধোলাই খেয়েছেন মো. সবুজ সরদার নামে এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা। পরে ওই নেতাকে চেয়ারে বেঁধে রাখা হয়। এ ঘটনার ৪০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। শনিবার (৬ জুলাই) সকালে উপজেলার মাঝারদিয়া ইউনিয়নের মুরাটিয়া গ্রামে এ চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটে।
মারধরের শিকার মো. সবুজ সরদার উপজেলার মাঝারদিয়া গ্রামের মো. নান্নু সরদারের ছেলে। তিনি সালথা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সহসভাপতি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, চেয়ারে বসিয়ে রাখা হয়েছে সবুজ সরদারকে। এসময় তার হাত ছিলো বাঁধা। একজন তার শার্টের কলার ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করছিলেন। সবুজকে উপস্থিত সবার কাছে নিজের পরিচয় তুলে ধরতে বলা হচ্ছিলো।
স্থানীয়রা জানান, দলীয়পদ ব্যবহার করে নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন সবুজ।
জানা গেছে, তার স্ত্রী ও দুটি সন্তানও রয়েছে। এরপরেও পাশের মুরাটিয়া গ্রামের ৪ সন্তানের জননী এক নারীর সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্ক করছিলেন তিনি। এরই মধ্যে ওই নারীর বাড়িতে শনিবার সকালে দেখা করতে এলে নারীর স্বামীর সহযোগিতায় স্থানীয়রা সবুজকে ধরে ফেলেন। পরে তাকে চেয়ারে বেঁধে গণধোলাই দেয়া হয়।
ওই নারীর স্বামী জানান, গত ৪-৫ দিন ধরে আমার স্ত্রীকে মোবাইলে ফোন করে পরকীয়ার সম্পর্কের জন্য প্রস্তাব দিচ্ছিলো সবুজ। আমার স্ত্রী নিষেধ করার পরেও সে ফোন দিয়ে যাচ্ছিলো। একপর্যায়ে শনিবার সকালে আমার বাড়ির পাশে দেখা করতে আসে সবুজ। তখন আমি তাকে ধরে ফেলি এবং গ্রামবাসীদেরকে খবর দেই। এসময় সবুজকে ধরে চেয়ারে বেঁধে গণপিটুনি দেয়া হয়। পরে গ্রামের স্থানীয় মাতব্বরদের মাধ্যমে তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে ঘটনাটি মীমাংসা করা হয়। তবে স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেছেন।
অন্যদিকে, এসব ঘটনাকে ষড়যন্ত্র ও সাজানো বলে দাবি করেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি মো. সবুজ সরদার। তিনি ভিডিওর কথা স্বীকার করে গণমাধ্যমকে বলেন, আমাকে বেঁধে রাখা হয় নাই, এমনি শরীরে হাত দিয়েছিল। আমি ওই নারীর সঙ্গে কথা বলতাম তাই দেখা করতে গিয়ে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি।
ওই নারীকে ফোন দেয়ার কথা স্বীকার করে সেচ্ছাসেবকলীগ নেতা আরো বলেন, রং নম্বরে আমি তাকে আগে ফোন দেই। তারপর কথা বলি, সেও কথা বলে। পরে বাড়ির পাশের রাস্তায় ডেকে নিয়ে আমাকে হেনস্থা করে।
সালথা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি রাকিবুল হাসান জুয়েল বলেন, সবুজ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সহসভাপতি। তবে কারো ব্যক্তি অপকর্মের দায় সংগঠন নেবে না, আমি ভিডিওগুলো দেখেছি। এগুলো যাচাইবাছাই করে সত্যতা পেলে সবুজের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ফরিদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ফয়সাল আহম্মেদ রবিন বলেন, আমি সাংবাদিকদের মাধ্যমে ঘটনাটি জেনেছি। ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ৩ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে কোন সত্যতা পেলে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সালথা থানার ওসি মোহাম্মদ ফায়েজুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় এখনো কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আমরা আইনিব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
আরো পড়ুন: ১ দিনে কুকুরের কামড়ে আহত ৭৬