সোনারগাঁওয়ে ভূমিদস্যূ মামুন বাহিনীর কাছে জিম্মি এলাকাবাসী

সোনারগাঁও (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০২৪, ০৪:০৮ পিএম

ছবি : ভোরের কাগজ
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার কাঁচপুর ইউনিয়নের ললাটি এলাকার বিএনপির জ্বালাও পোড়াও মামলার অন্যতম আসামি আ. রশিদের ছেলে জামায়াত-শিবির নেতা ভূমিদস্যূ রাশেদুল মামুন বাহিনীর সন্ত্রাসীরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তানসহ এলাকাবাসীকে জিম্মি করে রেখেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ললাটি এলাকার আব্দুল গাফফারের স্ত্রী মৃত মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলামের কন্যা আয়েশা আক্তার লাকি জানান, আমার বাবা রফিকুল ইসলাম ১৯৭১ সালে মাতৃভূমি দেশকে স্বাধীন করতে নিজের জীবন বাজি রেখে যুদ্ধের ময়দায়ে ঝাঁপিয়ে পড়ছিল। কিন্তু এখনো আমরা স্বাধীন দেশে থেকেও স্বাধীনতার বিরোধী অপশক্তির কাছে জিম্মি হয়ে রয়েছি। বিগত ২০১৮ সালের বিএনপির জ্বালাও পোড়াও মামলা আসামি এবং ২০১৩ সালে হেফাজতের তাণ্ডবের ঘটনায় ৬ ফেব্রুয়ারি ললাটি এলাকার আ. রাশিদের ছেলে জেএমবির সঙ্গে জড়িত অভিযোগে অভিযুক্ত রাশেদুল মামুনসহ জঙ্গি রাশিদুল মামুনের সহযোগী জামায়াত নেতা দেলোয়ারের বাড়ি থেকে পুলিশ বোমা উদ্ধার করেছিল। ওই মামলার ঘটনায় রাশেদুল মামুন দীর্ঘদিন পলাতক থেকে আবারো এলাকায় এসে তাণ্ডব শুরু করেছে।
এদিকে বিএনপি জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসী রাশেদুল মামুনের নেতৃত্বে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী তাদের বসতবাড়ি দখল করতে বাড়িঘর ভাংচুর করে। এ সময় সন্ত্রাসীদের বাধা দিলে আয়েশা আক্তার লাকি ও তার স্বামী পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে বলে অভিযোগ করেন তিনি। এদিকে ললাটি এলাকাবাসীর অভিযোগ, এই বিএনপি জামায়াত-শিবির বাহিনী দীর্ঘদিন যাবত এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের জমি জোরপূর্বক দখল করে অন্যত্র বিক্রি করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছে। এছাড়াও রাশেদুল মামুন ও তার মামা আতিকুর বাহিনী ললাটি জনতা বাজার এলাকার আক্তার মাস্টারের ৩২ শতাংশ জমি জোরপূর্বক দখল করে রেখেছে।
আরো পড়ুন : শাবিপ্রবিতে ‘আজীবন নিষিদ্ধ’ অধ্যাপক জাফর ইকবাল!
অন্যদিকে মনির হোসেন নামে এক ভুক্তভোগী জানান, জামাত শিবিরের নেতা রাশেদুল মামুন ও তার পরিবার এলাকায় ভূমিদস্যূ হিসেবে পরিচিত। তারা হিন্দু সম্প্রদায়ের জমি ভুয়া দলিল ও কাগজপত্র তৈরি করে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে দেয়। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে তাদের বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ সুপার ও র্যাব-১১ তে লিখিত অভিযোগ করেছিলাম। তখন তারা দীর্ঘদিন পলাতক ছিল।
রাশেদুল মামুনের মাদরাসায় জঙ্গিদের গোপন বৈঠককের খবর পেয়ে পুলিশ ও র্যাব সেখানে অভিযান চালিয়েছিল। কিন্তু তখন তারা সুযোগ বুঝে পালিয়ে যায়। তাদের নামে একাধিক মামলা রয়েছে। আমরা এলাকাবাসী এই মামুন বাহিনীর হাত থেকে মুক্তি চাই। পুলিশ ও র্যাব তৎপর হলে তারা গা ঢাকা দেয়।
এ ব্যাপারে মুঠোফোনে কথা হলে অভিযুক্ত রাশেদুল মামুন বলেন, তারা আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে। আমরা কোনো ভূমিদস্যূ না। তবে বিএনপি জ্বালাও পোড়াও মামলার কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি সেটাকে তার বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা হয়েছে বলে স্বীকার করে।
কাঁচপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন বলেন, এই বাহিনীর বিভিন্ন অপকর্মের কথা শুনেছি। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার।
সোনারগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি এসএম কামরুজ্জামান বলেন, ভূমিদস্যূদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।