নরসিংদী কারাগার
যেভাবে পালালো কয়েদিরা

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৪ জুলাই ২০২৪, ০৪:৫৫ পিএম

নরসিংদীতে জেল ভেঙে পালিয়ে যায় কয়েদিরা। ছবি: সংগৃহীত
শুক্রবার (১৯ জুলাই) বিকেল ৫ টায় নরসিংদীতে ঘটে নজিরবিহীন ঘটনা। কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যেই বিকেল ৫ টায় জেল ভেঙে পালিয়ে যায় কয়েদিরা। এর আগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ৩ ঘণ্টা গোলাগুলি চলে দুর্বৃত্তদের। এসময় কারারক্ষীদের মারধরের পর অর্ধশতাধিক অস্ত্র ও গুলি লুটে নেয় দুর্বৃত্তরা।
এ সময় দুটি মাইক্রোবাস যোগে চিনিশপুর হয়ে চর্ণগরদী সড়ক দিয়ে পালিয়ে যায় কয়েকজন কয়েদি। ওই সড়কে কেউ হেঁটে, আবার কেউবা রিকশায় চেপে সটকে পড়েন। এভাবে একে একে পালিয়ে যায় ৮২৬ জন কয়েদির সবাই।
এ ঘটনায় কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে নরসিংদী জেলা কারাগারের সুপার আবুল কালাম আজাদ ও জেলার কামরুল ইসলামকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
নরসিংদীর পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, শুক্রবার জুমার নামাজের পর মাধবদী বাসস্ট্যান্ডে জড়ো হয় দুর্বৃত্তরা। পরে পৌরসভা ও ডাকঘরে একযোগে হামলা-অগ্নিসংযোগ করে। জেলা কারাগারের পর ইটাখোলা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে চালানো হয় হামলা। ঘটনার পরদিন পাঁচদোনাতেও চালানো হয় হামলা।
কারারক্ষীরা জানায়, প্রথমে কারাগারের পকেট গেট দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে দুর্বৃত্তরা। তখন সেখানে থাকা একটি মোটরসাইকেলে আগুন দেয়া তারা। হামলা ঠেকাতে কারারক্ষীরা এগিয়ে এলে তাদের দিকে ইট-পাটকেল ছুড়ে মারে দুর্বৃত্তরা হয়। এসময় চারদিক দুর্বৃত্তরা থেকে কারাগারে ঢুকতে শুরু করলে অবস্থা বেগতিক দেখে কারারক্ষীরা কয়েদিদের সঙ্গে মিশে যান।
তাদের দাবি, ওই সময় দুর্বৃত্তরা কারারক্ষীদের ও জেল সুপারকে বারবার খুঁজছিলেন।
আরো পড়ুন: সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, যেসব জঙ্গিরা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং ছিল, তাদেরকে তারা মুক্ত করে নিয়ে গেছে। তাহলে উদ্দেশ্যটা কী তা নিশ্চই বোঝা যায়।
পুলিশের আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, জঙ্গি-অপরাধীরা যাতে ছাড়া পায় এবং দেশের মধ্যে যেন অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে সেজন্য তারা আক্রমণ চালিয়েছে।
এই সহিংসতা ইতোমধ্যে ৪টি মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয় অর্ধশতাধিক কয়েদিকে। উদ্ধার করা হয় কারাগার থেকে লুট হওয়া বেশ কিছু অস্ত্র। ইতোমধ্যে আত্মসমর্পণ করেছে পালিয়ে যাওয়া শতাধিক কয়েদি। আর কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া ২ জঙ্গি ইসরাত জাহান মৌ ও খাদিজা পারভীন মেঘলাকে গ্রেফতার করেছে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)।
আত্মসমর্পণ করা কয়েকজন কয়েদি জানান, দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়ে তালা ভেঙে ফেলে। আর সবাইকে বের করে দেয়। কারাগারে হামলা চালানোর এ ঘটনায় হতবাক হয় স্থানীয়রা।