দৌলতপুরে সন্ত্রাসীদের গুলিতে ইউপি চেয়ারম্যান সেন্টু নিহত

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) থেকে
প্রকাশ: ০২ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:১৭ এএম

দৌলতপুরে ইউপি চেয়ারম্যান নঈম উদ্দিন সেন্টুর জানাজায় হাজারো মানুষের ঢল। ইনসেটে চেয়ারম্যান সেন্টু। ছবি: ভোরের কাগজ
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার সন্ত্রাসপ্রবণ ফিলিপনগরে ইউপি চেয়ারম্যান নঈম উদ্দিন সেন্টুকে গুলি করে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নিজ কার্যালয়ে দাপ্তরিক কাজ করার সময় সন্ত্রাসীরা এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়। পরিবার ও এলাকাবাসীর দাবি, চরাঞ্চলে সন্ত্রাস দমনে সক্রিয় ভূমিকার কারণেই তাকে হত্যা করা হয়েছে।
ময়নাতদন্ত শেষে মঙ্গলবার সকালে ফিলিপনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে নিহত চেয়ারম্যান সেন্টুর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য রেজা আহমেদ বাচ্চু মোল্লা, নিহতের ছোট ভাই আরমা গ্রুপের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাকসহ হাজারো মানুষ অংশ নেন। জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। চেয়ারম্যান নঈম উদ্দিন সেন্টু ফিলিপনগরের মৃত মোতালেব সরদারের ছেলে।
সোমবারের নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। জানা যায়, চেয়ারম্যান সেন্টু ফিলিপনগরে সন্ত্রাস দমনে বেশ সক্রিয় ছিলেন। তার ভাই শিল্পপতি আব্দুর রাজ্জাকের তদবিরে এলাকায় র্যাব ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছিল, যার ফলে বেশ কিছু সন্ত্রাসী ক্রসফায়ারে নিহত হয় এবং বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার হয়। ধারণা করা হচ্ছে, এই প্রতিশোধ নিতেই সন্ত্রাসীরা তাকে গুলি করে হত্যা করেছে।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, সন্ত্রাসবিরোধী কার্যকলাপে সেন্টু চেয়ারম্যান অনেক জায়গায় দৌড়াদৌড়ি করেছেন এবং ব্যক্তিগত অর্থ খরচ করেছেন। সন্ত্রাসীরা হয়তো এ কারণেই তার ওপর ক্ষুব্ধ ছিল।
দৌলতপুর থানার ওসি মাহবুবুর রহমান জানান, চেয়ারম্যান সেন্টুর শরীরে দুটি গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে, ধারণা করা হচ্ছে তাকে শর্টগানের গুলি দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করা হয়েছে এবং তাদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের পরপরই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বাড়িঘরে আগুন, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে কষ্টসাধ্য প্রচেষ্টা চালাতে হয়। শেষ পর্যন্ত সেনাবাহিনীর সহায়তায় চেয়ারম্যান সেন্টুর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়।
এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় চেয়ারম্যানের ছেলে আহসান হাবিব বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। তবে এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।
নিহত চেয়ারম্যানের ছোট ভাই শিল্পপতি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমার ভাইকে কারা হত্যা করেছে তা সবার জানা। আমি প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি, যেন প্রকৃত দোষীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হয় এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়।
আরো পড়ুন: রাজধানী থেকে সালাম মুর্শেদী গ্রেপ্তার
সন্ত্রাসীদের হাতে চেয়ারম্যান নঈম উদ্দিন সেন্টুর হত্যার ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং শান্তিপ্রিয় জনগণ খুনিদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছে।