সোনারগাঁয়ে মানসিক প্রতিবন্ধী যুবককে ডাকাত আখ্যায়িত করে গণপিটুনি

সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৬ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে সনমান্দি ইউনিয়নের জাইদ্যেরগাঁও এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে ডাকাত আখ্যায়িত করে গণপিটুনি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা জসিম ও তার ছেলেদের বিরুদ্ধে।
এলাকাসীর অভিযোগ, মানসিক প্রতিবন্ধী মো. সাব্বিরকে (৩০) পিটিয়ে জসিম তার প্রতিপক্ষেও লোকজনকে ডাকাত দলের সদস্য হিসেবে তার কাছ থেকে স্বীকারোক্তীমূলক জবানবন্ধী নেয়ার চেষ্টা করেছে। এসময় ওই প্রতিবন্ধী যুবক প্রাণ বাঁচাতে জসিমের কথা স্বীকার করে নিজেকে ডাকাত দলের সদস্য বলে পরিচয় দেন।
রবিবার (১৭ নভেম্বর) ভোররাতে উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের দড়িকান্দী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন মহাসড়কের পাশে মোগরাপাড়া ইউনিয়নের দমদমা গ্রামের মৃত আলতাফ হোসেনের ছেলে মো. সাব্বিরকে (৩০) ধরে গণপিটুনি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। খবর পেয়ে সোনারগাঁ থানার এসআই আব্দুল জলিলসহ একদল পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় মহাসড়কের পাশ থেকে উদ্ধার করে যুবকটিকে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। তবে, যুবকটির নিজ গ্রামে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে- সাব্বির আসলে একজন মানসিক রোগী। এর আগে তিনি মোগরাপাড়ার আলাপদী এলাকায় মন্দিরের মূর্তি ভেঙে জনরোষে পড়েছিলেন।
উল্লেখ্য, এর আগেও দড়িকান্দি এলাকার জুয়েল নামে এক যুবককে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে পাঠানোর অভিযোগ আছে জসিমের বিরুদ্ধে। একসময় জাইদ্যেরগাঁও এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা জসিম নিজেকে সাবেক মন্ত্রী মির্জা আজমের ঘনিষ্ঠ লোক বলে পরিচয় দিয়ে এলাকার নিরীহ লোকজনের জমিজমা দখলসহ ত্রাসের রাজ্বে কায়েম করতো।
কিন্তু ৫ আগস্টের পর হঠাৎ করেই ভোল পাল্টে বিএনপির একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেয়া শুরু করেন এবং এলাকায় তার বিরোধীতাকারীদের বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি শুরু করেন। অভিযুক্ত জসিম ও তার ছেলেদের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টাসহ ১৩টি মামলা ও অভিযোগ আছে, মামলাগুলোর মধ্যে অনেকগুলি এখনো আদালতে বিচারাধীন আছে। এ ঘটনায় সোনারগাঁও থানার ওসি এম এ বারী বলেন, ডাকাতির অভিযোগে আটক যুবকটিকে আসলে মানসিক প্রতিবন্ধী। তাকে ডাকাত আখ্যায়িত করে এলাকার কিছু লোকজন পিটিয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় ফেলে রেখে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে। পুলিশ ঘটনা তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।