ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল মামুনকে অবশেষ পর্যন্ত বদলি করা হয়েছে। তিনি গাইবান্ধার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগ দেবেন। জেলা প্রশাসনের এক অফিস আদেশের চিঠিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান মোল্লার সই করা চিঠিতে জানানো হয়েছে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ২১ নভেম্বর ২০২৪ তারিখের প্রজ্ঞাপনমূলে আল মামুনকে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সদরপুর, ফরিদপুরকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, গাইবান্ধা হিসেবে বদলি করা হয়েছে। তাকে বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদানের নিমিত্ত ১১–১২–২০২৪ তারিখ অপরাহ্নে বর্তমান কর্মস্থল হতে অবমুক্ত করা হলো। তিনি তার দায়িত্ব সদরপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুবানা তানজিনের কাছে হস্তান্তর করবেন।  

এ ব্যাপারে শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে আল মামুন জানান, সদরপুরের ইউএনওর পদ থেকে অবমুক্ত করা সংক্রান্ত আদেশ বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) অপরাহ্নে পেয়েছি। চিঠিটি বুধবারের (১১ ডিসেম্বর) তারিখে সই করা ছিল। শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে গাইবান্ধার উদ্দেশ্যে যাত্রা করবো।  

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) ইউএনও আল মামুনের বিরুদ্ধে ‘আওয়ামী লীগ ফিরে আসবে’ বলে মন্তব্য করার অভিযোগ তোলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। ওই দিন দুপুরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের মতবিনিময় সভায় এ অভিযোগ তোলা হলে ইউএনওকে তাৎক্ষণিক প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান।

যদিও আল মামুন ওই অভিযোগ পুরোপুরিভাবে অস্বীকার করেন। তিনি পরে বলেছিলেন, গত ৩০ নভেম্বর সদরপুর উপজেলা সম্মেলন কক্ষে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। ওখানে ছাত্রদের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাও হাজির ছিলন। তারা সবাই জানেন আমি এ–জাতীয় কোনো কথাই বলিনি। কেন ওই ছাত্রনেতা (বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি আনিসুর রহমান) আমার বিরুদ্ধে এ–জাতীয় অভিযোগ তুলেছেন, তা আমার সঠিক জানা নেই। 

এদিকে, আল মামুনের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ প্রত্যাহার ও তাকে কর্মস্থলে পুনবর্হালের দাবিতে বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) মানববন্ধন কর্মসূচি পারন করেন স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এই কর্মসূচি পালিত হয়। এর আগে বুধবার (১১ ডিসেম্বর) রাতে সদরপুর উপজেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি ও জামায়াতের নেতারা ইউএনও আল মামুনকে প্রত্যাহারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ ও মৌখিক প্রত্যাহারের আদেশ ফিরিয়ে নেয়ার জন্য ঘটনা যাচাই করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তারা অনুরোধ জানান।