মুন্সীগঞ্জে নাব্য সংকটে লঞ্চ চলাচল ব্যাহত

তোফাজ্জল হোসেন শিহাব, মুন্সীগঞ্জ থেকে
প্রকাশ: ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:৪১ পিএম

ছবি : ভোরের কাগজ
নাব্য সংকটের কারণে মুন্সীগঞ্জে মিরকাদিম (কাঠপট্টি) ঘাটে লঞ্চ চলাচলে দেখা দিয়েছে নানা প্রতিবন্ধকতা। শনিবার (৪ জানুয়ারি) নাব্য সংকটে একতলা কিংবা দ্বিতল বিশিষ্ট কোনো যাত্রীবাহী লঞ্চ এখন আর এখানে ভিড়তে দেখা যায় না। এক সময়ের ব্যস্ততম এই বন্দরটি যাত্রীদের অভাবে এখন শুধুই সুনসান নীরবতা বিরাজ করছে।
তাছাড়া দূরপাল্লার লঞ্চগুলো এই বন্দরে নোঙর করতো। আর যাত্রীরাও এই ঘাট থেকে তাদের গন্তব্যে যেতে পারতেন। ছোট , মাঝারি আর দ্বিতল বিশিষ্ট লঞ্চ এই ঘাটে অহরহ ভিড়ানো থাকতো। মিরকাদিম ঘাট থেকে ঢাকার ইসলামপুর, বাদামতলী, বঙ্গমার্কেট, সদরঘাট এবং সদরঘাট থেকে দক্ষিণবঙ্গসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত এবং প্রতিষ্ঠানের পণ্য আনা-নেয়া করতেন এখানকার মানুষ।
নাব্য সংকট দূর করে লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক রাখতে টানা কয়েক বছর নদী খননের কাজ করে বিআইডব্লিওটিএ নারায়ণগঞ্জ । তাতে কয়েক কোটি টাকা ব্যয় হলেও বন্দরের কোনো কাজে আসেনি।
পল্টন/ জেটি ধলেশ্বরীর মূল নদীতে স্থানান্তর করা হলে প্রতি বছর এখানে ড্রেজিং করতে হবে না। খরচ হবে না সরকারের বাড়তি অর্থ। একই সঙ্গে পয়েন্টের দুপাশে গাইডওয়াল নির্মাণ করা গেলে লঞ্চ চলাচলে কোনো বাঁধা থাকবে না এমনটাই দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় মহল ও সুশীল সমাজের ব্যক্তিরা।
নাব্য সংকটের কারণে প্রায় দীর্ঘদিন দূরপাল্লার কোনো লঞ্চঘাটে ভিড়ছে না। মাঝ নদী থেকে ট্রলারে করে যাত্রী ওঠানামা করতে হচ্ছে যাত্রীদের এমনটাই জানিয়েছেন ঘাট ইজারাদার সংশ্লিষ্টরা।
এতে করে শত শত মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। তাছাড়া জোয়ার ভাটার আগমনের ওপর নির্ভর করে মাত্র কয়েকটি ছোট লঞ্চ চলাচল করে বলে জানা যায়।
সরজমিন লঞ্চঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, লঞ্চঘাটে সুনসান নীরবতা। ঘাট থেকে কোনো লঞ্চ ছেড়ে যাচ্ছে না, এমনকি কোন লঞ্চ ঘাটেও ভিড়ছে না। যে ঘাটে ভোর থেকে রাত অবদি মানুষের কোলাহল ছিল সেই ঘাটে এখন কোনো লোকজন নেই।
যাত্রীদের অভিযোগ, নাব্য সংকটে কোনো লঞ্চ এখানে ভিড়ে না। আমরা প্রায় সময় এসে ফিরে যাচ্ছি। আমাদের মতো শত শত সাধারণ যাত্রীরা ফিরে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত ভাড়ায় ভিন্ন পন্থায় গন্তব্যে যেতে হচ্ছে।
এ দিকে লঞ্চঘাটে আসার চ্যানেলে পানি কোথাও ১০ ফুট আবার কোথাও ৫ ফুট গভীর মাত্র । যেখানে লঞ্চ ভিড়ানো অসম্ভব।
তাছাড়া দূর-দূরান্ত থেকে আসা যাত্রীদের মাঝনদী থেকে ট্রলার দিয়ে ঘাটে এনে নামতে হচ্ছে। একদিকে মিরকাদিম লঞ্চঘাট থেকে প্রতি বছর রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার অন্যদিকে সাধারণ মানুষ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিআইডব্লিওটিএ (নারায়ণগঞ্জ) উপ-পরিচালক মো. নাহিদ হোসেন ভোরের কাগজকে জানান, মিরকাদিম লঞ্চঘাটের নাব্য সংকটের বিষয়টি আমরা শুনেছি। আমরা কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। যেন মিরকাদিমে লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক করা হয়।