লালমনিরহাটে মিজানুর রহমান আজহারীর মাহফিল ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি

রবিউল ইসলাম বাবুল, লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:২২ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
লালমনিরহাটে বিশ্ব-নন্দিত ইসলামি চিন্তাবিদ বিশিষ্ট বক্তা ড. মিজানুর রহমান আজহারীর ওয়াজ মাহফিলকে ঘিরে ইতোমধ্যেই জেলায় তার ভক্ত অনুসারী ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের মধ্যে আনন্দের জোয়ার বইছে।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে লালমনিরহাটে পৌঁছার কথা বিশিষ্ট এ ইসলামি বক্তার। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে দুপুরে জোহর নামাজ আদায় করে তার লাখো মুসল্লিদের মাঝে মূল্যবান বয়ান পেশ করার কথা রয়েছে মিজানুর রহমান আজহারীর। এমনটায় বলেছেন মাহফিল আয়োজক কমিটির সভাপতি বিশিশিষ্ট শিল্পপতি লালমনিরহাট আদিতমারীর উপজেলার কৃতী সন্তান আলহাজ আব্দুল হাকিম।
জেলার গণ্যমান্য ও সাধারণ মানুষের ধারণা এই মাহফিলে কমপক্ষে ১০/১২ লাখ মানুষের সমাগম হতে পারে। পাশাপাশি আয়োজক কমিটি এমনটি চিন্তা করেই লোকসমাগম এর জন্য প্রস্তুত রেখেছে চারটি বিশাল মাঠ। রয়েছে ইলেকট্রনিক সাউন্ড সিস্টেম প্রজেক্টোরসহ মহিলাদের উত্তমরূপে ওয়াজ শোনার জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে একটি আলাদা মাঠ।
এদিকে মাহফিল ঘিরে তৎপর লালমনিরহাটের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নিরাপত্তা বলয় নিশ্চিত করতে বিপুলসংখ্যক আনসার, পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনীসহ আয়োজকদের রয়েছে বিশাল স্বেচ্ছাসেবকের কর্মী বাহিনী।
কমিটি জানায়, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন দেশের বাইরে নির্বাসিত ছিলেন বিশ্ববরেণ্য ইসলামি চিন্তাবিদ মুফাসসির ড. মিজানুর রহমান আজহারী। গত ৫ আগস্ট দেশ থেকে শেখ হাসিনা সরকার সরে গেলে দেশে ফিরে আসেন বিশ্ববরেণ্য বক্তা মিজানুর রহমান আজহারী। দেশের মানুষের আগ্রহে বিভিন্ন স্থানে মাহফিল শুরু করেন তিনি। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে শনিবার লালমনিরহাটে মাহফিল করবেন মিজানুর রহমান আজহারী।
ইসলামিক সোসাইটি লালমনিরহাট ঐতিহাসিক এই মাহফিলের আয়োজন করছে। আয়োজকরা জনসমাগম বিবেচনা করে দর্শকদের জন্য চারটি মাঠ প্রস্তুত করছে। জেলার সবচেয়ে বড় সোহরাওয়ার্দী মাঠে করা হচ্ছে মূল মঞ্চ। এছাড়াও কালেক্টরেট মাঠ, সিপি স্কুল মাঠ এবং নারীদের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে জেলা স্টেডিয়াম মাঠ। সোহরাওয়ার্দীসহ সকল মাঠে থাকবে প্রজেক্টরের ব্যবস্থা।
ঐতিহাসিক এ মাহফিল সফল করতে ইতোমধ্যে মঞ্চ প্রস্তুতের কাজ শেষ করেছেন আয়োজকরা। এছাড়া সকল ধরনের প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন করা হয়েছে। আয়োজক কমিটির সঙ্গে জেলা প্রশাসনের বৈঠকও সম্পন্ন হয়েছে। সেখানে জননিরাপত্তার বিষয়টি সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। বিগত দিনের মাহফিলে ঘটে যাওয়া চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সকল ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রস্তুতি নিচ্ছে জেলা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নিরাপত্তার বলায়ে ঢেকে যাবে মাহফিল ও তার আশপাশের এলাকা।
মাহফিলের নিরাপত্তায় থাকবে বিপুল সংখ্যক আনসার ও পুলিশ সদস্য। থাকবে র্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের টহল। এছাড়াও সাদা পোশাকে থাকবে পুলিশ সদস্যরা। আয়োজকদের নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক থাকবেন প্রায় ৫ হাজার। সব মিলিয়ে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে রাখা হবে পুরো লালমনিরহাট শহর।
ঐতিহাসিক এ মাহফিলে সভাপতিত্ব করবেন ইসলামিক একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলহাজ আব্দুল হাকিম। জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক উপমন্ত্রী অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে আজহারীর এ মহাফিলে।
ঐতিহাসিক ওয়াজ মাহফিলের বিষয় জানতে চাইলে সভাপতি আব্দুল হাকিম ভোরের কাগজ সাংবাদিক রবিউল ইসলাম বাবুলকে বলেন, মাহফিল সফল করতে সকল ধরনের প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন করা হয়েছে। পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা রাখা হয়েছে মাহফিলের মাঠগুলোতে। পুরো শহরে সাউন্ড সিস্টেমের মাধ্যমে বক্তা ও অতিথিগণের বক্তব্য পরিষ্কারভাবে শুনতে পারে সেই জন্য সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
লালমনিরহাট জেলা পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম বলেন, ড. মিজানুর রহমান আজহারীর মাহফিলে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রস্তুত রয়েছে আনসার, পুলিশ র্যাব সেনাবাহিনী বিজিব ও ভলান্টিয়ার সদস্যরা। তাছাড়াও আয়োজকদের নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক থাকবে প্রায় ৫ হাজার।