দিরাইয়ের ইউপি চেয়ারম্যান জুয়েল সাময়িক বরখাস্ত

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৩৮ পিএম

মোয়াজ্জেম হোসেন জুয়েল
অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড এবং জনস্বার্থবিরোধী কার্যক্রমের অভিযোগে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার সরমঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন জুয়েলকে তার পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯-এর ৩১(১) ধারা অনুযায়ী এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
গত ১৬ জানুয়ারি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের ইউপি-১ শাখা থেকে বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা থেকে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে উপ-সচিব আবু রাফা মোহাম্মদ আরিফ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সরমঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন জুয়েলকে সাময়িকভাবে বরখাস্তের আদেশ দেয়া হয়। বরখাস্তের আদেশের অনুলিপি সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও দিরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে প্রেরণ করা হয়েছে।
আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, সরমঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন জুয়েল দায়িত্ব গ্রহণের পর ক্ষমতার অপব্যবহার করে জারুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দাতা তার আপন দাদা মৃত আসকির মিয়ার নাম পরিবর্তন করে জায়গাটিতে তার পিতা মৃত আব্দুল মতলিবের নাম অন্তর্ভুক্ত করেন। এ ঘটনায় চেয়ারম্যানের দুই চাচাতো ভাই সাংবাদিক জাকারিয়া হোসেন জুসেফ এবং তার সহোদর সাংবাদিক জুহান প্রতিবাদ জানান।
প্রতিবাদের জেরে, ২০২৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন জুয়েলের নেতৃত্বে একদল লাঠিয়াল দিরাই শহরের আরামবাগ এলাকায় সাংবাদিক দুই ভাইয়ের বাসায় হামলা চালায়। তারা আসবাবপত্র ভাংচুরের পাশাপাশি জাকারিয়া হোসেন জুসেফ ও জুহানকে কুপিয়ে এবং পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। খবর পেয়ে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
এই ঘটনায় আহত সাংবাদিক জাকারিয়া হোসেন জুসেফ বাদী হয়ে ২০২৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন জুয়েলকে প্রধান আসামি করে দিরাই থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি দাখিল করা হয় ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৩২৩/৩২৫/৩২৬ ধারায়, যার মামলা নম্বর ৮৫/২৩।
মামলা দায়েরের পর চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন জুয়েল আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিজ্ঞ বিচারক তার জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। ২৪ দিন কারাবাস শেষে তিনি জামিনে মুক্তি পান। তবে মামলার তদন্ত শেষে আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে চার্জশিট গ্রহণ করেন। এরপর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় মামলার সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় এবং অভিযোগের ভিত্তিতে চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন জুয়েলকে তার পদ থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াছ মিয়া বলেন, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে সরমঙ্গল ইউপি চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন জুয়েলকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।