ফুটপাতে হালিম বিক্রি করেন শিক্ষক, সহযোগিতা করেন শিক্ষার্থীরা

মেহেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:৫৯ পিএম

ছবি: ভোরের কাগজ
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বামন্দী বাজারে এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান নামের এক স্কুল শিক্ষক। নিজের আর্থিক সচ্ছলতা বৃদ্ধি এবং শিক্ষার্থীদের স্বনির্ভর করে তোলার লক্ষ্যে তিনি ফুটপাতে ভ্রাম্যমাণ একটি হালিমের দোকান চালু করেছেন। প্রতিদিন বিকেল ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এই দোকানে হালিম ছাড়াও ডিম, ছোলা, ফুচকা, লুডুসসহ বিভিন্ন মজাদার খাবার বিক্রি করেন তিনি এবং তার সহকারী শিক্ষার্থীরা।
যেখান থেকে আয় হয় প্রতিমাসে প্রায় ৩৫-৪০ হাজার টাকা। কেনা-বেচা করে যে টাকা আয় হয় তা দিয়ে শিক্ষকের বাড়তি ইনকাম হিসেবে যোগ হয়। পাশাপাশি ছাত্ররা তাদের পড়াশোনার খরচ নিজেরাই চালাতে পারে। সেইসঙ্গে পরিবারের প্রয়োজনেও পাশে দাড়াতে পারে ছাত্ররা। এবং মানবিক কাজের জন্য আয়ের একটি অংশ তারা জমা করে রাখে। শিক্ষক-ছাত্রদের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে এলাকাবাসী।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গাংনী উপজেলার বামন্দী বাজারে বিশেষ স্টাইলে বানানো ঠেলাগাড়িতে করে খাবার বিক্রি করছেন শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বামন্দী নিশিপুর স্কুল এন্ড কলেজের বিএসসি শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। শিক্ষকতা শেষ করে বিকালে তিনি এসব বিক্রি করেন। শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমানকে সহযোগিতা করছেন তারই স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্র সিয়াম আলী ও অমিত হাসান পলাশ।
এই ধরনের ব্যবসা চালানোর ব্যাপারে শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, খরচের সঙ্গে ইনকাম মেলাতে পারছিলাম না। এমন কিছু করতে চাচ্ছিলাম যে, হালালভাবে অতিরিক্ত কিছু টাকা আয় হয়। পরে আমি ও আমার আরেক পার্টনার বিল্পবের সঙ্গে আলোচনা করে এই ব্যবসা শুরু করি। প্রথম প্রথম পরিবার ও পরিচিত লোকরা হেয় করতো। কিন্তু এখন সবাই বাহবা দেয়। আমার দোকানে ছাত্রদের কাজ করার সুযোগ দিয়েছি, যাতে করে তারাও কিছু আয় করে স্বনির্ভর হতে পারে।
সিয়াম আলী ও অমিত হাসান পলাশ নামের দুই ছাত্র বলেন, মাসে আমরা সাড়ে চার হাজার টাকা করে পাই। তা দিয়ে আমাদের পড়াশুনার খরচ জোগান দিতে পারি। পাশাপাশি হাত খরচেও টাকাও পরিবার থেকে নেয়া লাগে না বরং পরিবারকেই মাঝেমধ্যে টাকা দিই।
হালিম খেতে আসা আরো দুই স্কুল শিক্ষক জানান, কোনো কাজই ছোট না। অবসর সময়ে বসে না থেকে স্যার ছোট খাটো ব্যবসা করছেন। নিজের আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি ভালো ভাবার খাওয়াচ্ছেন মানুষদের। এটাও এক প্রকার সেবা।