যুবদল নেতা রাসেলের অত্যাচারে অতিষ্ঠ উপজেলাবাসী, থানায় অভিযোগ

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৪৫ পিএম

রকিবুল ইসলাম রাসেল
ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক রকিবুল ইসলাম রাসেলের অত্যাচারে উপজেলাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তারে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন এই যুবদল নেতা, এমন অভিযোগ উঠেছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তার দলের নেতাকর্মীদের জনগণের ভালোবাসা অর্জনের নির্দেশ দিলেও, রাসেল সেই নির্দেশ অগ্রাহ্য করে চাঁদাবাজি ও দখলবাজি উৎসবে মেতে উঠেছেন বলে দাবি করেছেন স্থানীয় বিএনপির সচেতন কর্মীরা। যুবদল নেতার এ বেপরোয়া কর্মকাণ্ডে বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ক্ষুব্ধ বিএনপি কর্মীরা এই অবস্থার পরিবর্তনের জন্য দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দৃষ্টি আকর্ষণ করে রাসেলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
জানা যায়, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের তুপের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর বেপরোয়া হয়ে উঠেন ভালুকা উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক রকিবুল ইসলাম রাসেল। তার অত্যাচার ও লাগামহীন কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে ভালুকা উপজেলার সকল শ্রেনী পেশার মানুষ।
উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এজাদুল হক পারুল বলেন, গত ৫ আগস্ট রাতে ভালুকা উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক রকিবুল হাসান রাসেল আমার বাড়িতে যে লুটপাট ও ভাংচুর চালিয়েছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। রাসেলের নেতৃত্বে একদল যুবক আমার বাসায় ডুকে ৩৫ ভরি স্বর্ণ ৫ টি এন্ড্রয়েড মোবাইল, ঘরিসহ মূল্যবান জিনিসপত্র লুটপাট করে নিয়ে যায়।
ভরাডোবা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মোঃ মোশারফ হোসেন বাহার জানান, আমরা দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয়ভাবে সুনামের সঙ্গে বিভিন্ন প্রকার বৈধ ব্যবসা করছি। নাসির ফুডওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্প্রতি আমরা বালি ভড়াটের জন্য ব্যবসায়ীক কার্যাদেশ (ওয়ার্ক অর্ডার) পাই। কার্যাদেশ পাওয়ার পর আমরা কোম্পানির শর্ত মাফিক বালি ভড়াটের কাজ শুরু করি। শান্তিপূর্ণভাবে কয়েক শতাধিক গাড়ি বালি সরবরাহ করি। কিন্তু গত ১৯ জানুয়ারি ভালুকা উপজেলা যুবদলের সধারণ সম্পাদক রকিবুল হাসান রাসেলের নেতৃত্বে কয়েকজন সন্ত্রাসী আমাদের কাছে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে। পরে আমারা চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তারা একটি ট্রাক এনে নাসির ফুডওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কোম্পানির প্রবেশের রাস্তায় বেরিকেট সৃষ্টি করে চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেয়। এবং প্রকাশ্যে মানুষের সামনে ঘোষণা দেন, যারা বালি ফেলার সঙ্গে জড়িত তাদেকে খুন করে লাশ গুম করে দেয়া হবে। আমি এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক রকিবুল হাসান খান রাসেলের মোবাইল নম্বরে মঙ্গলবার ও বুধবার একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ করেননি।
তবে ময়মনসিংহ জেলা দক্ষিণ যুবদলের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল খান রাজু বলেন, ‘উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক রকিবুল হাসান খান রাসেলের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও লুটপাটের বিষয়ে এখনো কেউ আমাদের কাছে অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে বিষয়গুলো তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুল হুদা খান বলেন, ‘বালু ব্যবসাকে কেন্দ্র করে চাঁদা দাবির ঘটনায় রকিবুল হাসান খান রাসেলের বিরুদ্ধে নাসির ফুটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের পক্ষ থেকে একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। পরবর্তী সময়ে রকিবুল হাসান খান রাসেল তাকে হয়রানি করতে পারে এই মর্মে নাসির ফুটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের বিরুদ্ধে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। দুটি ঘটনা তদন্ত করে দেখে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’