দাপ্তরিক কার্যক্রমকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে শিক্ষা অফিসারের বনভোজন!

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪:৪৭ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
দাপ্তরিক কার্যক্রম উপেক্ষা করে উপজেলা শিক্ষা অফিসার শিক্ষকদের নিয়ে বনভোজন গিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. আব্দুল মোমিন মিঞার বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার পূজার কারণে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। তবে বন্ধ নেই উপজেলা কিংবা জেলা শিক্ষা অফিস। যথানীয়মেই চলছে সকল সরকারি দপ্তর। এদিকে স্কুল বন্ধ থাকায় উপজেলার অনেক শিক্ষকরা বনভোজনে যাওয়ার প্রস্তুতি নেয়।
সেই বনভোজনে সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুল মোমিন মিঞাও রয়েছেন। যদিও তার অফিসে বসে দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনা করার কথা। বিষয়টি জানতে উপজেলা শিক্ষা অফিসে গিয়ে কাউকেই পাওয়া যায় নি। দেখা যায়, তালা ঝুলছে শিক্ষা অফিসার আব্দুল মোমিন মিঞার কক্ষে। অফিস সহকারি সুত্রে জানা যায়, কম্পিউটার অপারেটর, ২ জন সহকারি শিক্ষা অফিসার, এবং উপজেলা শিক্ষা অফিসার সকলেই গেছেন বনভোজনে। এদিকে ব্যাহত হচ্ছে সকল দাপ্তরিক কার্যক্রম।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুল মোমিন মিঞাকে একাধিকবার মোবাইল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। আর জেলা শিক্ষা অফিসার মো. নজরুল ইসলাম জানান, উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোমিন মিঞা আমার কাছ থেকে লিখিত কোন ছুটি নেন নি। গতকাল মৌখিক বলেছেন কিন্তু আমি তাকে কিছুই বলিনি। ছুটি না পাওয়া স্বত্বেও দাপ্তরিক কার্যক্রমের ব্যাঘাত ঘটিয়ে
কিভাবে তিনি বনভোজন গেলেন এ নিয়ে ক্ষোভ ঝাড়ছেন অনেকেই।
এদিকে আবার শিক্ষকদের ১৪ দিনের লিডারশীপ ট্রেণিং চলছে উপজেলা রিসোর্স সেন্টারে। ট্রেণিংয়ের ৮ম দিন ছিল (১১ ফেব্রুয়ারি) মঙ্গলবার। ট্রেণিংয়ে ২৫ জন শিক্ষকের মধ্যে ২ জন নির্বাচন অফিসের কাজে রয়েছেন। বাকি ২ জন গিয়েছেন বনভোজনে। ট্রেণিংয়ে থাকা অবস্থায় ২ জন শিক্ষক কি করে বনভোজনে গেলেন এ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে অনেকের।
উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ইন্সট্রাকটর মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন মিঠু দুঃখ প্রকাশ করে জানান, গতকাল সেই দুজন শিক্ষক ছুটির জন্য আমার কাছে এসেছিলেন। আমি বলেছি ট্রেণিংয়ে থাকা অবস্থায় ছুটি নেওয়া কোন মতেই সম্ভব নয়। আজ ১১ ফেব্রুয়ারি তারা ট্রেণিংয়ে আসেনি৷
ইন্সট্রাকটরের নির্দেশনার তোয়াক্কা না করেই বনভোজনে গেলেন যে দুই শিক্ষক। তারা হলেন, হাজী সুবেদ আলী সওদাগর সঃপ্রাঃ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জামিলা আক্তার ও দক্ষিণ চর মশুরা সরকারি প্রাঃ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুজ্জামান।
অভিযুক্ত সেই দুই শিক্ষকরা জানান, আমরা ছুটির জন্য গিয়েছিলাম। পরে আমরা ছুটি পাইনি। ট্রেণিং রেখে বনভোজনে যাওয়া কোন বিধান আছে কিনা জানতে চাইলে তারা নিরবতা প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক। ট্রেণিং অবস্থায় কিভাবে তারা পিকনিকে গেলেন তা ক্ষতিয়ে দেখে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।