কুমারখালীতে মাছ ধরা নৌকার তলা ছিদ্র নিয়ে সংঘর্ষে আহত ১৫, বাড়ি ভাঙচুর-লুটপাট

কাগজ প্রতিবেদক, কুষ্টিয়া
প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:৩৪ পিএম

আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
কুষ্টিয়ার কুমারখালীর পদ্মা নদীতে মাছ ধরা নৌকার তলা ছিদ্র করাকে কেন্দ্র দু'পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়াও উভয়পক্ষের অন্তত ১২ টি ঘরবাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর দুইটার দিকে উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের কসবা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের কসবা গ্রামের আদালত প্রমানিক, তার ছেলে জিসান প্রমানিক, তাহের প্রমানিকের ছেলে রাজিব ও রাকিব, হাসেম সরদারের ছেলে শুভ, আজমতের ছেলে রাহিম, শহীদ কাজীর ছেলে ছালাম কাজী, মিজানুর রহমান মন্টু, বিল্লাল হোসেন, শহীদ হোসেন, মনটু কাজী, ঝন্টু কাজী, জিন্দার শিকদার, সাইদুল শিকদার, সাজেদা খাতুন। তারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কুষ্টিয়া সদর হাসপাতাল ও বাড়িতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কসবা গ্রামে মন্টু কাজী গ্রুপের সঙ্গে আদালত প্রামাণিক গ্রুপের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন বিরোধ চলছে। কাজী গ্রুপের লোকজন চাষাবাদের পাশাপাশি পদ্মা নদীতে মাছ ধরার কাজ করেন। নদীতে তাদের বেশকিছু ডিঙি নৌকা রাখা হয়েছে। শনিবার দুপুরে প্রামাণিক গ্রুপের সালাম কাজী গ্রুপের পাঁচটি নৌকার তলা ছিদ্র করছিল। সেসময় সালামকে ধরে কিছুক্ষণ আটকে রাখার পরে ছেড়ে দেন কাজী গ্রুপের লোকজন। পরে সালাম দেশীয় অস্ত্র, লাঠিসোটাসহ তার লোকজন নিয়ে কাজী পাড়ায় আসে। সেসময় উভয়পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়ে বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এছাড়াও বেশকিছু বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
বিকেল ৪ টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, আহতদের কারো মাথায়, কারো হাতে-পিঠে ও পাঁয়ে আঘাতের চিহ্ন। চিকিৎসক তাদের চিকিৎসা দিচ্ছেন।
এসময় আদালত প্রামাণিক বলেন, কাজী গ্রুপের লোকজন আমাদের একটা ছেলে আটক করে রেখেছিল। তা জানতে গেলে প্রতিপক্ষরা দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা ও লুটপাট চালিয়েছে। আমাদের অন্তত ৭ জন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। থানায় মামলা করা হবে।
বিকেল ৫ টার দিকে কসবা গ্রামে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের মোড়েমোড়ে পুলিশের টহল। দুই পক্ষের লোকজন পৃথক স্থানে জড়ো হয়ে আছেন। উভয়পক্ষের বেশকিছু বাড়িতে ভাঙচুরের ক্ষত।
এসময় জাদু কাজী বলেন, প্রামাণিকের লোকজন আমাদের নৌকার তলা ছিদ্র করে দিছে। একমাস পাহাড়া দিয়ে আজ সালাম নামের একজনকে ধরে আটক করেছিলাম। আটকের কিছুক্ষণ পর ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে প্রামাণিক গ্রুপের লোকজন ঢাল, সরকি, ধারালো অস্ত্রসহ আমাদের ওপর হামলা করেছে। আমাদের ১০ -১২ জন আহত আছে। থানায় মামলা করা হবে।
প্রামাণিক গ্রুপের এক নারী বলেন, আমাদের লোকজন সব হাসপাতালে। সেই সুযোগে জাদু কাজী, মাদু কাজীসহ ১৫ -২০ জন এসে আমাদের সব ঘর ভেঙে দিয়েছে। গরু ও মালামাল নিয়ে গেছে।
কুমারখালী থানার ওসি মো. সোলায়মান শেখ বলেন, মাছ ধরা নৌকা ছিদ্র করাকে কেন্দ্র দু'পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হয়ে বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। বর্তমানে এলাকায় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।