রিমান্ডে আরেক চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস করলেন জিয়াউল আহসান

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৬ আগস্ট ২০২৪, ০৫:২২ পিএম

এনটিএমসি সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসান।
বিভিন্ন অপারেটরের মোবাইল ফোনের সফটওয়্যারে ঢুকে নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টা চালাত ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি), এমন তথ্য দিয়েছেন ডিবি হেফাজতে রিমান্ডে থাকা এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসান। এ ক্ষেত্রে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সকেও (এআই) কাজে লাগানো হয়েছে।
ডিবি সুত্র জানায়, মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসান ছিলেন একজন সাইলেন্ট কিলার। অসংখ্য গুম-খুনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বিতর্কিত এই সাবেক সেনা কর্মকর্তার নাম। জিয়াউল আহসানের মোবাইল ফোনে অনেক অপকর্মের তথ্য আছে জানিয়ে গোয়েন্দারা বলেন, আমরা তাকে গ্রেপ্তারের সময় তার মোবাইল ফোন উদ্ধার করতে পারিনি। সেটি উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
তারা বলেন, এনটিএমসির মহাপরিচালক থাকাকালীন বিভিন্ন মোবাইল কোম্পানির সফটওয়্যারে ঢুকে নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টা করেছে। এক্ষেত্রে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সকেও (এআই) কাজে লাগানো হয়েছে। কিন্তু মোবাইল অপারেটররা সেটি বুঝতে পেরে বারবার আপডেট দিয়েছে। এ কারণে পুরোপুরি সফল হওয়া যায়নি।
এর আগে আয়নাঘর, সাত খুন, শাপলা চত্বরে হত্যা নিয়ে তথ্য দিয়েছিলেন জিয়াউল আহসান। শাপলা চত্বরে বিষয়ে তিনি জানিয়েছিলেন, তৎকালীন আইজি, র্যাব ডিজি এবং পুলিশ কমিশনার আমাকে বিশেষ দায়িত্ব দিয়েছিলেন। আমি চেষ্টা করেছি, যে কোনো মূল্যে শাপলা চত্বর ফাঁকা করার। আমরা ফাঁকা গুলি করেছি। তবে সেখানে কোনো লোক মারা যায়নি।
রিমান্ডে ফোনকল রেকর্ড করা নিয়ে জিয়াউল আহসান বলেন, আমার ওপর বিশেষ দায়িত্ব ছিল। আমার প্রতিষ্ঠান থেকে সবার মোবাইল ফোনকল রেকর্ড করা হয়নি। নির্দিষ্ট কিছু লোকের ফোনকল রেকর্ড করা হয়। কারো হোয়াটসঅ্যাপস কল রেকর্ড করা হয়নি। ভয় দেখানোর জন্য এটা ছড়ানো হয়েছে যে, হোয়াটসঅ্যাপ রেকর্ড করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন। এরপর থেকে প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন থানায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও মন্ত্রীদের নামে হত্যা মামলাসহ বিভিন্ন মামলা হচ্ছে। এরই মধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন বেশ কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা। আদালত গ্রেপ্তারকৃতদের বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডও দিয়েছেন। বর্তমানে তারা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে রয়েছেন। সেখানেই তারা আওয়ামী লীগের শাসন আমলের বিভিন্ন তথ্য দিচ্ছেন।
এই মুহূর্তে যারা ডিবি হেফাজতে রিমান্ডে আছেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন, সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসান।
এছাড়াও সাবেক এমপি সাদেক খান, জাতীয় সংসদের সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, চট্টগ্রাম বন্দরের সাবেক চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মোহাম্মদ সোহায়েল, সাবেক ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাবেক সিনিয়র সচিব শাহ কামাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত প্রমুখ।
আরো পড়ুন : শেখ মুজিবকে দেশের সম্পদ না বানানো বড় ভুল ছিল
আরো পড়ুন : রিমান্ডে শেখ হাসিনাকে নিয়ে বিস্ফোরক তথ্য দিলেন আনিসুল
আরো পড়ুন : আয়নাঘর, সাত খুন, শাপলা চত্বরে হত্যা: রিমান্ডে যেসব তথ্য দিলেন জিয়াউল