যুবলীগ ক্যাডার এখন বিএনপি নেতা, ত্রাস সৃষ্টি

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৩ পিএম

বগুড়া সদর পৌরসভার ১৯ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান শাওন। ছবি: সংগৃহীত
বগুড়া সদর পৌরসভার ১৯ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান শাওন ওরফে ‘চাঁন্দা শাওন’ ওরফে ‘কিলার শাওন’ সময়-সুযোগ বুঝে নিজেকে যুবদলের নেতা বলে জাহির করে বেড়াচ্ছেন। চিহ্নিত অস্ত্র ও মাদক ব্যবসায়ী এবং কিশোর গ্যাংয়ে দলপতি হিসেবে তার বিরুদ্ধে কমপক্ষে ২০টি মামলা রয়েছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, মানিকচক গ্রামের মোয়াজ্জেম হোসেন জিল্লারের ছেলে মেহেদী হাসান শাওন। তার বিরুদ্ধে ৩টি অস্ত্র মামলা, ৫টি মাদক মামলা, ৯টি হত্যা/চাঁদাবাজি/ চুরির মামলাসহ প্রায় ২০টি মামলা চলমান রয়েছে। এছাড়া বগুড়ার বিভিন্ন থানায় ৫০টির অধিক জিডি ও অভিযোগ রয়েছে।
জেলা প্রশাসনের তালিকাভুক্ত কিশোর গ্যাং নেতা শাওনের রয়েছে ৩০/৪০ জনের সন্ত্রাসী বাহিনী। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ১৯ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে যোগদান করেন তিনি। জাতীয় ও উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালান। তবে বর্তমানে নিজেকে যুবদলের নেতা হিসেবে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন।
১৯ নং ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি রেজাউল আলম ও সেক্রেটারি মুক্তার হোসেনের ছায়াতলে নানা কুকর্ম করছে শাওন। তার কারণে বিএনপির বদনাম হচ্ছে বলে জানান এলাকাবাসী। তারা বলছেন, চাঁন্দা শাওনের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠলে আমরা দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানালে র্যাব ১২ ছায়া তদন্ত শুরু করে। গত ১০ অক্টোবর সকাল ৬টায় সদর থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। কয়েকদিন পর জেল থেকে বের হন এবং এলাকায় আবার ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছেন।
শাওনের বিষয়ে জানতে চাইলে বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা বলেন, আমাদের দলের নাম ভাঙিয়ে কেউ যদি এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে, তাহলে তদন্তসাপেক্ষে তাকে বহিষ্কার করা হবে।
তিনি বলেন, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারি সরকারের পতন হয়। এই ১৯ নং ওয়ার্ডেই আমরা যুবদলের কয়েকজনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ পাই। এরপর তদন্তসাপেক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে দুজন যুবদলের নেতাকে বহিষ্কার করি।
রেজাউল করিম বলেন, আমরা জিরো টলারেন্স নীতিতে বিশ্বাসী। বহিরাগত কোনো চাঁদাবাজি, দখলবাজ ক্যাডারদের দলে ঢুকতে দেয়া হবে না। দলের কারো বিরুদ্ধে যদি এমন অভিযোগ পাওয়া যায় তাদের সাংগঠনিকভাবে বহিষ্কার করা হবে।
শাওনের সম্পর্কে জানতে চাইলে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস বলেন, অপরাধী কোনো দলের হয় না। কে কোন দলের সেটা দেখে আমরা অভিযান পরিচালনা করছি না। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের বিরুদ্ধে আমরা অভিযান পরিচালনা করি। চাঁদাবাজ, দখলবাজসহ যারা এলাকায় ত্রাসের সৃষ্টি করে তাদের বিষয়ে আমরা সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরে শাওন কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের নিয়ে ১০/১৫টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। কিশোর গ্যাংয়ের হাতে অত্যাধুনিক ১টি একে-৪৭, ৪/৫টি পিস্তল, ৪/৫টি রিভলবারসহ মোট ১৫টি অস্ত্র রয়েছে।