চট্টগ্রাম-১৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এবং ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এবং তার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের তদন্ত শুরু করেছে সিআইডি। সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মো. আজাদ রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র, লন্ডন, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং সিঙ্গাপুরে সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অনুসন্ধান চলছে।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ২০০৫ সালে সাইফুজ্জামান চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে নাহার ম্যানেজমেন্ট ইনকর্পোরেটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান শুরু করেন। এরপর বিভিন্ন সময়ে এই প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে ৯টি ফ্ল্যাট কেনেন। ২০১৪ ও ২০১৫ সালে তিনি দুবাইয়ে "র‌্যাপিড র‌্যাপ্টর এফজিই" এবং "জেবা ট্রেডিং এফজিই" নামের দুইটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন, যেখানে কম্পিউটার সফটওয়্যার ব্যবসা শুরু করেছিলেন।

এছাড়া, তার স্ত্রী রুখমিলা জামান চৌধুরী দুবাইয়ের আল-বারশা সাউথ-থার্ড এলাকায় দুটি ফ্ল্যাট কেনেন, যার মূল্য ২২ লাখ ৫০ হাজার ৩০০ দিরহাম। ২০১৬ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সাইফুজ্জামান চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং আরব আমিরাতে ৬২০টি বাড়ি কিনেছেন, যার বাজারমূল্য প্রায় ৪৮ কোটি ডলার। ২০১০ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত, সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং তার স্ত্রী ৮টি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেছেন যুক্তরাজ্য ও দুবাইয়ে, যার মোট স্থায়ী এবং চলতি সম্পদের মূল্য প্রায় ২১ কোটি ৭২ লাখ ৬০ হাজার ডলার।

অভিযোগ রয়েছে, সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার পরিবারের সদস্যরা বাংলাদেশের অর্থ পাচার করে এসব দেশে বিনিয়োগ করেছেন। উল্লেখযোগ্য যে, বাংলাদেশ ব্যাংক এখনও পর্যন্ত ২১টি প্রতিষ্ঠানকে বিদেশে বিনিয়োগের অনুমোদন দিয়েছে, কিন্তু সাইফুজ্জামান চৌধুরী বা তার পরিবারের কারও নাম সে তালিকায় নেই। এছাড়াও, ভোটের আগে নির্বাচন কমিশনে সাইফুজ্জামান চৌধুরী যে সম্পদ বিবরণী জমা দিয়েছেন, তাতে তার বিদেশি সম্পদের কোনো তথ্য নেই।

অর্থ পাচার এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন অনুসারে, সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং তার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সিআইডি ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট অনুসন্ধান শুরু করেছে।