আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বিক্রির অভিযোগে যুবদল নেতার শাস্তি

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২৩ পিএম

আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বিক্রির অভিযোগে যুবদলের নেতা রুবেল বহিষ্কার। ছবি: সংগৃহীত
ভোলার বোরহানউদ্দিনে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বিক্রি করার অভিযোগে ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুবেলকে পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৮ নভেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার আলম খান। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক এমপি হাফিজ ইব্রাহিমের নির্দেশে উপজেলা ও ইউনিয়ন যুবদল সভাপতি ও সম্পাদকের নেতৃত্বে তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় অভিযুক্ত রুবেলকে পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। একই অভিযোগে পক্ষিয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ (চৌকিদার) রুহুল আমিনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে বলে জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রাহানউজ্জামান।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা ও এলাকাবাসী জানায়, উপজেলার পক্ষিয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বেড়িবাঁধ এলাকায় অসহায়-দুস্থ মানুষের পুনর্বাসনে সরকারিভাবে বরাদ্দ দেওয়া কয়েকটি ঘরে লোকজন না থাকার সুযোগ নিয়ে চৌকিদার রুহুল আমিন ও পক্ষিয়া ইউনিয়ন কৃষক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সেকান্দরের ছেলে পক্ষিয়া ইউনিয়ন ৭ নম্বর ওয়ার্ডের যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. রুবেল ওই সব ঘর দখল নিয়ে তা ঘর প্রতি ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করত। কুলসুম নামে এক অসহায় নারীর কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়ে ঘর দেয়। পরে আরও ১০ হাজার টাকার জন্য চাপ সৃষ্টি করলে বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসে। টাকা না দেওয়ায় ওই নারীকে ফের উৎখাত করতে যায় রুবেল।
সরকার বিনা মূল্যে জমি ও ঘর দেয়। ওই ঘর নিয়ে বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠায় তোলপাড় শুরু হয় স্থানীয়দের মধ্যে। উপজেলা প্রশাসনের তদন্তে কুলসুম জানায় ঋণ করে টাকা এনে দেন। এভাবে ইতিমধ্যে ৪টি ঘর থেকে টাকা নেয়। এ ছাড়া ওই গুচ্ছ গ্রামের সব ঘরবাসীকে মাসিক চাঁদা দিতে বলেন রুবেল গংরা। স্থানীয়রা জানান, রুবেল ও চৌকিদার এর নেতৃত্বে প্রতিনিয়ত লোকজন আসে চাঁদা নেওয়ার জন্য, কেউ না দিলে নির্যাতনের হুমকি দেয়া হত। ইউনিয়ন যুবদলের আহবায়ক কাজী মো. মোসলেউদ্দিন ও সদস্য সচিব মো. তৈয়বুর রহমান মাতাব্বর এর স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দলের শৃঙ্খলা ভঙের অভিযোগে দলীয় পথ থেকে রুবেলকে অব্যাহতি দেয়া হয়ছে বলে জানানো হয়।
এ বিষয়ে রুবেল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমি ২০ হাজার টাকা নিয়ে চৌকিদারকে পাঁচ হাজার টাকা দিয়েছি। আরো ১৫০০ টাকা বিভিন্ন জনকে ভাগ করে দিয়েছি টাকা ফেরত দিয়ে দেব। এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সরোয়ার আলম খান বলেন, অপরাধী যে হোক ছাড় পাবে না, ছাড় হবে না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রায়হান-উজ্জামান বলেন, বিষয়টি শোনার পর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মেহেদী হাসানকে তদন্ত করার নির্দেশ দেন। কুলসুম নামে এক নারীর কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা চাঁদা নেয়ার অভিযোগে গ্রাম পুলিশকে শোকজ করা হয়েছে। তদন্ত শেষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।