তোফায়েল আহমেদসহ ৮৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

ভোলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৫৭ পিএম

তোফায়েল আহমেদ। ছবি : সংগৃহীত
ভোলা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ ও ভোলা-২ আসেনর সাবেক সাংসদ আলী আজম মুকুল, ভোলা -৩ আসনের সাবেক সাংসদ নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন ও ভোলা- ৪ আসনের সাবেক সাংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবসহ ৮৬ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ মামলা আরো ৪‘শ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) ছাত্রদল কর্মী মো. আরিফ হোসাইন বাদী হয়ে ভোলা সদর মডেল থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন। মঙ্গলবার রাতে মামলার বিষয়টি প্রকাশ করেছে পুলিশ।
এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ভোলা সদর মডেলথানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পারভেজ জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী, উপমন্ত্রী ও সাংসদসহ ৮৬ জনের বিরুদ্ধে এ মামলা হয়েছে। মামলায় আরো অজ্ঞাত ৪'শত জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ৫ মার্চ বেলা ১১ টার সময় ভোলা সদর উপজেলার মহাজন পট্টিতে ভোলা জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কারামুক্তির দাবিতে এবং সারাদেশে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে সমাবেশের আয়োজন করা হয়। ওই সমাবেশে তখন প্রধান অতিথি ছিলেন ভোলা জেলা বিএনপি সভাপতি ও ভোলা-১ আসনের বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য গোলাম নবী আলমগীর এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ছেলে ও সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আসিফ আলতাফ। ওই সমাবেশের বিষয়ে জানতে পেরে মামলার ১ নাম্বার আসামির গাজীপুর রোডস্থ বাসায় আগের দিন একটি গোপন বৈঠক হয়।
আরো পড়ুন : সাবেক মন্ত্রী আমু ও কামরুলকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ
জেলা বিএনপির সভাপতি প্রধান অতিথি গোলাম নবী আলমগীর ও সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর ছেলে আসিফ আলতাফের জনসমর্থন আকাশচুম্বী তাই তাদেরকে কোনো সমাবেশ করতে দেয়া হবে না বলে ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। প্রয়োজনে ১ নাম্বার আসামির কোন প্রতিদ্বন্দ্বী যাতে ভোলায় না থাকে সেক্ষেত্রে তাদের হত্যা করে হলেও সমাবেশ পণ্ড করতে হবে। তারই ধারাবাহিকতায় ঘটনার দিন সমাবেশ শুরু হলে ভোলা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুল,ভোলা-৩ আসনের সংসদ সদস্য নুরুন্নুবী চৌধুরী শাওন ও ভোলা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবের নেতৃত্বে মামলার আসামিরা দা, ছেনী, লোহার রড, লোহার পাইপ, শটগান, বোমা, বগিদা, গুপ্তিসহ প্রধান অতিথি গোলাম নবী আলমগীর ও বিশেষ অতিথি আসিফ আলতাফকে হত্যার উদ্দেশ্যে এবং সমাবেশ ভন্ডুল ও পণ্ড করার উদ্দেশ্যে সাড়াশি আক্রমণ চালায়।
আরো বলা হয়, এ সময় সমাবেশস্থল লক্ষ্য করে তাদের হাতে থাকা শর্টগান দিয়ে এলোপাথাড়ি গুলি করা হয়। এক পর্যায়ে গোলাম নবী আলমগীর এবং আসিফ আলতাফকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। সাধারণ মানুষের ভিড়ে গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে মানব বেষ্টনীর মাধ্যমে গোলাম নবী ও আসিফ আলতাফকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নেয়া হয়। এতে করে তারা মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পান। এ সময় বৃষ্টির মত বোমা নিক্ষেপ করা হয়। এসময় ওই ঘটনার সময় মামলার একাধিক সাক্ষী আহত হন।
এছাড়াও বিএনপি অফিসে হামলা চালিয়ে একটি আলমারি, টিভি, আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়। আহতদের চিকিৎসার জন্য ভোলা সদর হাসপাতালে নিতে গেলে তখন বাধা দেয়া হলে সাবেক মন্ত্রী মোশারেফ হোসেন শাজাহানের বাসভবনে চিকিৎসা দেয়া হয়। তখন ওই ঘটনার বিষয়ে ভোলা সদর থানায় মামলা করতে গেলে থানা মামলা নেয়নি।
বাদী ও আহতরা আসামিদের ভয়ে কোথাও মামলা করতে পারেননি। তাই মামলাটি দাখিল করতে বিলম্ব হয় বলেও মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়।