আল-জামি ডায়াগনস্টিকে মেয়াদোত্তীর্ণ রিএজেন্ট দিয়েই পরীক্ষা, ভুক্তভোগী প্রবাসীরা

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৩৭ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর আল-জামি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালিয়েছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের একটি দল। সম্প্রতি চালানো এ অভিযানে বিপুল পরিমাণ মেয়াদোত্তীর্ণ রিএজেন্ট (স্বাস্থ্য পরীক্ষায় ব্যবহৃত রাসায়নিক মিশ্রণ) ধরা পড়েছে। এসময় আরো অনেক অনিয়ম ধরা পড়ে।
অভিযানকালে দেখা যায়, আল-জামি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের একটি ফ্রিজে রিএজেন্ট রয়েছে। সেখানে দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, সেগুলো দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যগামী লোকজনের পরীক্ষা করা হয়।
সাধারণত, মেয়াদোত্তীর্ণ রিএজেন্ট দিয়ে পরীক্ষা করলে রিপোর্ট সঠিক আসে না। ফলে বিদেশে গিয়ে প্রবাসীদের বিপদে পড়তে হয়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। তিনি দেখতে পান রিএজেন্ট রাখা টিউবের মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে। অথচ মেয়াদোত্তীর্ণ প্লাস্টিকের পাত্রে রিএজেন্ট সংরক্ষণ করে সিবিসি (কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট বা কমপ্লিট ব্লাড পিকচার টেস্ট) পরীক্ষার কাজে লাগানো হচ্ছে।
অভিযানের সময় দেখা যায়, ব্লু টিপসের মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে। তবু মেয়াদোত্তীর্ণ প্যাকেটে বা পাত্রেই রিএজেন্ট সংরক্ষণ করা হচ্ছে।
অভিযানকালে চোখে পড়ে, এক রাসায়নিকের মেয়াদ সম্পন্ন হয়েছে ২০২৩ সালেই। কিন্তু তা পরীক্ষাগারেই রেখে দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ পরীক্ষার কাজে এটি ব্যবহার করা হয়।
সেসময় পরীক্ষার রিপোর্টেও ভুল পাওয়া যায়। রোগীর ম্যালেরিয়া টেস্ট করা হয়নি। কিন্তু প্রতিবেদনে দেখানো হয়, এ রোগের উপস্থিতি নেই। অনেক সময় আছে বলেও রিপোর্ট দেয়া হয়। অথচ পরীক্ষাই করা হয় না।
অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া কর্মকর্তার নজরে পড়ে, পরীক্ষা না করেই রিপোর্ট দেয় আল-জামি ডায়াগনস্টিক সেন্টার। হেলমেনথিস, সিস্ট, স্টোলসহ নানা ধরনের রোগীর ক্ষেত্রে এমনটা দেখা গেছে। তবু সেসব রিপোর্টে সই করে দেন দায়িত্বরত চিকিৎসক।
অভিযোগ আছে, ওই হাসপাতালে এভাবেই প্রতারিত হন বিদেশগামীরা। পরে বিদেশে গিয়ে সেসব রোগ ধরা পড়লে হয়রানির শিকার হন তারা। ফলে দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হন। এতে সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যান ভুক্তভোগীরা।