×

ঢাকা

সড়ক যোগাযোগ ধ্বংসের ষড়যন্ত্র

এক্সপ্রেসওয়ের ২ টোলপ্লাজায় অগ্নিসংযোগ, বনানীর সড়ক ও জনপথ ভবন ভাঙচুর

Icon

দেব দুলাল মিত্র

প্রকাশ: ০২ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

এক্সপ্রেসওয়ের ২ টোলপ্লাজায় অগ্নিসংযোগ, বনানীর সড়ক ও জনপথ ভবন ভাঙচুর

ছবি : সংগৃহীত

   

রাজধানীর সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো গতিশীল করা এবং যানজট নিরসনের লক্ষ্যে প্রথম ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে মেগা প্রকল্পের কাজ শুরু করে সরকার। কোটাবিরোধী আন্দোলনের সুযোগে দুষ্কৃৃতকারীরা এই সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ধ্বংসের চেষ্টা চালিয়েছে। এই প্রকল্পের বনানী ও মহাখালী টোলপ্লাজা দুটো অগ্নিসংযোগ করে ধ্বংস করে দিয়েছে। হামলাকারীরা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ওপরের অংশেও হামলা চালাতে চেয়েছিল। এছাড়া সেতু ভবনে হামলাকারীরাই নিকটবর্তী বনানীর সড়ক ও জনপথ ভবনে লুটপাট, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। এছাড়া তারা বিমানবন্দর থেকে জয়দেবপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত নির্মিত বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের এস্কেলেটর সিঁড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে।

বর্তমান সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর মধ্যে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে অন্যতম। কোটাবিরোধী আন্দোলনে এই এক্সপ্রেসওয়ের বনানী ও মহাখালী টোলপ্লাজা এবং টোলপ্লাজা সংলগ্ন অফিসেও হামলা চালানো হয়েছে। শত শত হামলাকারীরা এসব গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েছে। এসব স্থাপনা এখনো ভয়াবহতার সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। টোলপ্লাজায় অগ্নিসংযোগের কারণে পুরো এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কবে নাগাদ এক্সপ্রেসওয়ে চালু হবে তা সংশ্লিষ্টরা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না।

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, বনানী ও মহাখালী টোলপ্লাজা ধ্বংস করে দেয়ার ফলে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে রাখা হয়েছে। কারণ, কাওলা থেকে এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠার পর অনেক গাড়ি বনানী ও মহাখালী র‌্যাম্প দিয়ে নেমে যায় এবং ওঠে। এই দুইটি টোলপ্লাজা বন্ধ থাকায় সেখান থেকে নেমে যাওয়া ও উপরে ওঠার সুযোগ নেই।

‘ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (এফডিইই) কোম্পানি লিমিটেড’র প্রকল্প পরিচালক এ এইচ এম সাখাওয়াত আখতার বলেন, কবে নাগাদ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে

চালু হবে তা এখনই নিশ্চিত করে বলা সম্ভব হচ্ছে না। জনগণের দ্রুততম সময়ে চলাচলের জন্য এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের অর্ধেক অংশের নির্মাণকাজ শেষ হওয়ায় সঙ্গে সঙ্গে চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়। কিন্তু দুটি গুরুত্বপূর্ণ টোলাপ্লাজা ধ্বংস করে দেয়ায় এক্সপ্রেসওয়ে বন্ধ রাখা হয়েছে। পুড়ে যাওয়া টোলপ্লাজাগুলো পূর্ণনির্মাণে সময় লাগবে। সরকার, বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান, মন্ত্রণালয়সহ সবাই বসে সিদ্ধান্ত নেবে। টোলাপ্লাজা পূর্ণনির্মাণ, বৈদ্যুতিক সংযোগ স্থাপনসহ অন্যান্য কাজ শেষে করে সচল হতে সময় লাগবে।

বনানী টোলপ্লাজা : এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বনানী টোলপ্লাজায় দুই দফায় হামলা চালানো হয়। হামলার সময় হামলাকারীদের হাতে ছিল ধারালো অস্ত্র, লোহার রড, হকিস্টিক, মোটা লোহার চেইন। গত ১৯ জুলাই রাত সোয়া ৮টার দিকে প্রথম দফায় হামলা চালানো হয়। এরপর দ্বিতীয় দফায় হামলাকালে অগ্নিসংযোগ করা হয়।

টোলপ্লাজার নিরাপত্তা কর্মী মো. ফাহিম ও মো. সোলায়মান জানান, ঘটনার সময় তারা দুজনেই ডিউিটিতে ছিলেন। হঠাৎ ২০০ থেকে ৩০০ বিভিন্ন বয়সি হামলাকারী এসে হামলা চালায়। কম্পিউটার, ক্যামেরা, সিসিক্যামেরা লুটপাটের পর ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। টোলপ্লাজার সামনের রাস্তায় একটি পুলিশের গাড়ি ও পিকআপেও আগুন দেয়। পরে দ্বিতীয় দফায় আবারো এসে ওয়েট স্কেল রুম ও অফিসকক্ষ ভাঙচুর করে। এই টোলপ্লাজায় ৪টি বুথ রয়েছে। প্রথম দফায় ২ নম্বর ও ৪ নম্বর বুথ ভাঙচুর করে। পরবর্তী সময়ে হামলাকারীরা ১ নম্বর ও ৩ নম্বর বুথ লুটপাটের পর আগুন দেয়। একটি বড় ধারালো রামদা বুথের পাশে পড়ে রয়েছে। ওয়েট স্কেল রুমের কম্পিউটার খুলে নিয়ে গেছে। বৈদ্যুতিক ক্যাবল টেনে খুলে ফেলেছে। কিছু আসবাবপত্র লুট করতে না পেরে বাইরে ফেলে ভাঙচুর করে। অক্ষত বলতে কোনো কিছুই নেই। কোনো আসবাবপত্র ব্যবহার করা যাবে না।

মো. ফাহিম আরো জানান, আমরা নিরস্ত্র অবস্থায় ছিলাম। হামলাকারীরা ধারালো অস্ত্রসহ টোলপ্লাজা আক্রমণ করলে আমরা আতঙ্কিত হয়ে উত্তর পাশের অফিসের ভেতরে গিয়ে প্রথমে আশ্রয় নেই। একপর্যায়ে হামলাকারীরা সেদিকে ছুটে এলে আমরা অফিস থেকে বের হয়ে কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউর দিকে চলে গিয়ে প্রাণে রক্ষা পাই।

মহাখালী টোলপ্লাজা : এক্সপ্রেসওয়ের মহাখালী টোলপ্লাজার ৫টি বুথ পুরোপুরি ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়েছে টোলপ্লাজার পাশের অফিস ভবনে। অল্পের জন্য বেঁচে গেছেন, টোলপ্লাজার নিরপত্তা টিমের সুপারভাইজার মো. আশরাফুল ও হৃদয়। হামলাকারীরা তাদের পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করেছিল। পার্শ্ববর্তী ভাঙ্গাড়ি দোকানদার সেলিম তাদের দোকানের ভেতরে নিয়ে প্রাণে বাঁচান।

সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে নিরাপত্তাকর্মী আশরাফুল বলেন, ১৯ জুলাই সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে কমপক্ষে ২ হাজার বিক্ষোভকারী মহাখালী টোলপ্লাজা ও সংলগ্ন অফিসে একযোগে হামলা চালায়। ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে করতে মহাখালী দিক থেকে টোলপ্লাজার দিকে আসে। তাদের হাতে ছিল লোহার রড, ধারালো অস্ত্র ও ইটের টুকরো। হামলার মুখে টিকতে না পেরে আমরা নিরাপত্তা কর্মীরা প্রথমে অফিসের ভেতরে গিয়ে আশ্রয় নেই। হামলাকারীরা তখন প্রথমে টোলাপ্লাজা ভাঙচুর করে। এ সময় তারা সেখানে ৪টি এসি, সিসি ক্যামেরা, কম্পিউটার মনিটর, রেজিস্টার খাতা, নানান ধরনের ফাইলপত্র, কম্পিউটার, টাকা পয়সা ও অন্যান্য মালামাল লুটপাট করে। এরপর তারা পেট্রোল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। দাউ দাউ করে জ¦লতে থাকে দুইটি টোলপ্লাজা। আমাদের কিছুই করার ছিল না। একপর্যায়ে হামলাকারীরা টোলপ্লাজার পাশের অফিসে চড়াও হয়। একের পর এক ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এ সময় আমরা প্রাণ বাঁচানোর জন্য রসুলবাগের দিকে পালানোর চেষ্টা করি। কিন্তু হামলাকারীরা আমার ও হৃদয়ের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে।

স্থানীয় ভাঙ্গাড়ি ব্যবসায়ী সেলিম জানান, হামলাকারীরা নিরাপত্তাকর্মী আশরাফুল ও হৃদয়কে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করে। আমি তাদের উদ্ধার করে আমার ভাঙ্গাড়ি দোকানের ভেতরে নিয়ে রাখি। আমি না নিয়ে গেলে ওরা বাঁচত না।

মহাখালী টোলপ্লাজায় ঘুরে দেখা যায়, সেখানে অবশিষ্ট বলতে কিছু নেই। আগুনে ৫টি বুথ ভস্মীভূত হয়েছে। উপরে শুধু এলুমিনিয়ামের ছাদ রয়েছে। সেখান থেকে কিছুক্ষণ পর পর পোড়া অংশ খশে নিচে পড়ছে। টোলপ্লাজা সংলগ্ন অফিসটি একটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ভবনের সিঁড়ি থেকেই ধ্বংসাবশেষ শুরু। চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে জানালা-দরজার ভাঙা কাচ। আগুন ধরিয়ে দেয়া হয় ভবনের ভেতরে। পোড়া ও আংশিক পোড়া আসবাবপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। দুইটি এসি পুড়েছে। বৈদ্যুতিক ক্যাবলগুলো পুড়ে গেছে। প্রতিটি কক্ষে ধ্বংসের চিহ্ন স্পষ্ট। বাদ যায়নি বাথরুম। বাথরুমের মালামালও লুটপাট করে নিয়ে গেছে হামলাকারীরা।

আশরাফুল আরো জানান, অমরা হামলার সঙ্গে সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসকে জানিয়েছি। কিন্তু ফায়ার সার্ভিস আসতে পারেনি। ফায়ার সার্ভিসের গাড়িগুলো যেদিক থেকে আসবে সেই মহাখালী ও তেজগাঁওয়ের প্রধান সড়কেও তখন একাধিক গাড়িতে আগুন দেয়া হয়। হাজার হাজার হামলাকারী ফায়ার সার্ভিসকে আসতে বাধা দেয়।

বিআরটি প্রকল্প : বিমানবন্দর থেকে জয়দেবপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত নির্মিত বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের এস্কেলেটর সিঁড়িগুলোও অগ্নিসংযোগ করেছে হামলাকারীরা। সড়কের ফ্লাইওভার অংশে যাত্রীদের ওঠানামার জন্য সিঁড়ি স্থাপনের প্রক্রিয়া চলে আসছে। কিছু দিনের মধ্যেই এগুলো স্থাপন করা হতো। এ কারণে গাজীপুরের বোর্ড বাজার থেকে উত্তরার হাউস বিল্ডিং পর্যন্ত সড়কের ফ্লাইওভার অংশের উপর এস্কেলেটর সিঁড়িগুলো এনে রাখা হয়েছিল। কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা ১৯ জুলাই ১০টির বেশি এস্কেলেটর সিঁড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। এখন এগুলোর লোহার ফ্রেমটি রাস্তায় পড়ে আছে। যন্ত্রাংশ সহ সবকিছু ভস্মিভূত হয়ে গেছে।

সড়ক ও জনপথ কার্যালয় : কোটা আন্দোলনের ওপর ভর করে দুর্বৃত্তরা সরকারের সড়ক নির্মাণ প্রতিষ্ঠান সড়ক ও জনপথের ঢাকা সড়ক বিভাগের অফিসেও হামলা চালায়। সড়ক নির্মাণের কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন যানবাহনে পেট্রোল ঢেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়।

সেদিন ঘটনার সময় সওজ কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন সড়ক বিভাগের মসজিদের ইমাম মো. জালালউদ্দিন। তিনি বলেন, এই অফিস থেকে ঢাকা সড়ক বিভাগের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। ১৯ জুলাই রাতে মাগরেবের আজানের পর পর হঠাৎ করে শত শত বিভিন্ন বয়সি লোকজন সওজ অফিসে হামলা চালায়। এ সময় মূল গেট বন্ধ ছিল। হামলাকারীরা গেট ভেঙে এবং সীমানা প্রাচীর ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। তারা ভবনের পাশের গার্ড রুম ও ওয়েটিং রুম থেকে মালামাল লুটপাট ও ভাঙচুর শুরু করে। এ সময় আমি ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। তারা আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিতে দিতে ভবনের সামনে এগিয়ে আসে। তারা ভবন লক্ষ্য করে এলোপাতাড়িভাবে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ভাঙচুর চালাতে থাকে। ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ভবনের পাঁচতলা পর্যন্ত সব গ্লাস ভেঙে ফেলে। একপর্যায়ে হামলাকারীরা দুইটি ক্রেনগাড়ি, চারটি পিকআপ, রাস্তার পিচ ঢালাইয়ের কাজে ব্যবহৃত একটি পেপার মেশিনে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। তারা সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়।

জালালউদ্দিন আরো জানান, হামলাকারীরা প্রায় ১ ঘণ্টা ভেতরে অবস্থান নেয়। তারা মহাখালীর দিক থেকে আসে। হামলাকারীদের সঙ্গে কয়েকটি পিকআপ ছিল। পিকআপে লোহার রড, রেলাইনের পাথর ও বিভিন্ন সাইজের ধারালো অস্ত্র ছিল। হামলাকারীদের বয়স ১০ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে হবে। এদের দেখে ছাত্র বলে মনে হয়নি। এদের বেশির ভাগই টোকাই ধরনের ভাড়াটে লোকজন বলে মনে হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সওজ-এর এক প্রকৌশলী জানান, হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে প্রায় ৭ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সবকিছু খতিয়ে দেখার পর ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলা যাবে। রাস্তার নির্মাণ বা মেরামতের কাজে ব্যবহৃত গাড়িগুলো কিনতে অনেক সময় লাগবে।

টাইমলাইন: কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন

আরো পড়ুন

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App