সেই চার শিশুর বাবা জামাল জামিনে মুক্ত

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৪ পিএম

জামিনের পর গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন আলোচিত যমজ শিশুদের বাবা জামাল মিয়া। ছবির ভিতরে সেই শিশুরা। ছবি: সংগৃহীত
অবশেষে জামিন পেলেন রাজনৈতিক হত্যা মামলায় গোপালগঞ্জের আলোচিত যমজ শিশুদের বাবা জামাল মিয়া। বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে গোপালগঞ্জ আমলি আদালতের বিচারক ও অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ফিরোজ মামুন এ জামিন মঞ্জুর করেন।
জামাল মিয়া আজই জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। লিগ্যাল এইডের কৌশুলি অ্যাডভোকেট শারমিন জাহান জামাল মিয়ার জামিনের আবেদন করেন।
অ্যাডভোকেট শারমিন জাহান বলেন, আমরা মানবিক বিষয়গুলো আদালতের সামনে তুলে ধরি। পরে আদালতের বিচারক অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ফিরোজ মামুন মানবিক কারণে আসামি জামাল মিয়ার জামিন মঞ্জুর করেন।
যমজ দুই কন্যাশিশুর জন্মের এক সপ্তাহের মাথায় তাদের মায়ের মৃত্যু হয়। এর কয়েকদিন পর হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার জামাল মিয়াকে কারাগারে পাঠানো হয়। এমন পরিস্থিতিতে আরো এক বোনসহ মোট তিন বোনকে নিয়ে বড় ভাই ১৩ বছরের সাজ্জাদ চরম বিপাকে পড়ে। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সেই সংবাদ আদালতের নজরে আনেন ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ।
এমন সংবাদ নজরে আনায় স্বপ্রণোদিত হয়ে সেই শিশুদের দেখভালে গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসকসহ সমাজসেবা কার্যালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ।
আরো পড়ুন: শিল্পপতি মাসুমকে ৭ টুকরো করে লেকে ফেলে দেন প্রেমিকা
বিষয়টি আদালতের নজরে আনার পর আদালত অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের কাছে বিষয়টি জানতে চান এবং স্থানীয় জেলা প্রশাসন ও সমাজসেবা কার্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই শিশুদের খাবার-দাবার ও সামগ্রিক কল্যাণ নিশ্চিত করতে আদেশ দেন। এরই প্রেক্ষিতে কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শাহিনুর আক্তার জামালের বাড়িতে গিয়ে শিশুদের খোঁজখবর নেন। তাদের নগদ ১০ হাজার টাকা ও শিশুদের পোশাক দেয়া হয়। এছাড়া প্রয়োজনীয় খাদ্য ও শিক্ষা উপকরণ দেয়া হয়েছে। খোজঁখবর রাখা হচ্ছে শিশুদের স্বাস্থ্যেরও।
জামিনে মুক্তি পেয়ে জামাল মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার পরিবার ও আমাকে নিয়ে মানবিক খবর প্রকাশ করার জন্য আমি সব গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানাই। আমি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নাই। আর দিদির হত্যামামলার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তাই আমাকে এই মামলা থেকে অব্যাহতি দিতে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ রইল।’
প্রসঙ্গত, এক মাস আগে জামাল মিয়ার স্ত্রী সাথী বেগম একসঙ্গে দুই কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। এর সাত দিন পর তার মৃত্যু হয়। এরপর চার সন্তানের লালনপালন করছিলেন জামাল মিয়া। তার বড় ছেলে সাজ্জাদ এম এম খান উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র।
গত ৮ নভেম্বর রাতে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা দিদার হত্যা মামলায় জামালকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায় কোটালীপাড়া থানা পুলিশ। গোপালগঞ্জ সদর থানায় হস্তান্তর করা হলে পরদিন শনিবার জামালকে কারাগারে পাঠানো হয়।