অর্থনীতির পরিবর্তনে কোম্পানি আইন সংশোধনের সুযোগ হয়েছে

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৭:৪৩ পিএম

শনিবার ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) ও ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড রিসোর্সেস ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ (এমআরডিআই) যৌথভাবে আয়োজিত প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী পর্বে উপস্থিত অতিথিবৃন্দ। ছবি: ভোরের কাগজ
দেশের অর্থনীতি বড় হয়েছে। বিশ্ব বদলাচ্ছে। দেশের কোম্পানির কার্যক্রমেও পরিবর্তন এসেছে। তাই ইতোমধ্যে কোম্পানি আইনে বিভিন্ন সংশোধন করা হয়েছে। আরও সংশোধনের সুযোগ তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ।
শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) অর্থনৈতিক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) এবং সাংবাদিকদের পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করা সংস্থা ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড রিসোর্সেস ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ (এমআরডিআই) যৌথভাবে আয়োজিত প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী পর্বে তিনি কথা বলেন। ‘কোম্পানি রিপোর্টিংয়ের ক্ষেত্রে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা’ বিষয়ক কর্মশালাটি রাজধানীর পল্টনে ইআরএফ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
ইআরএফ সভাপতি শারমীন রিনভীর সভাপতিত্বে চার পর্বে কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে রিসোর্স পার্সন হিসেবে ছিলেন বিল্ড চেয়ারপার্সন ব্যারিষ্টার নিহাদ কবির, সিএফও সোসাইটি বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি শহিদুল ইসলাম ও বার্তা সংস্থা এএফপির ব্যুরো প্রধান শফিকুল আলম। ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক এসএম রাশিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এমআরডিআইয়ের নির্বাহী পরিচালক হাসিবুর রহমান। এ সময় সংস্থাটির ম্যানেজার (বাস্তবায়ন) সানাউল হক দোলন উপস্থিত ছিলেন।
দিনব্যাপি এ কর্মশালায় সংবাদপত্র, টেলিভিশন ও অনলাইন নিউজ পোর্টালের ৫০জন প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন। কর্মশালার পুরোটা জুড়ে কোম্পানির কার্যক্রম নিয়ে কিভাবে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরি করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করেন বিশেষজ্ঞরা। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তারা।
তপন কান্তি ঘোষ বলেন, সরকার কোম্পানি আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে। অর্থনীতির বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করা হচ্ছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের আইনও বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। সামগ্রিকভাবে সংশ্লিষ্ট সকল বিষয়কে অন্তর্ভূক্ত করে আইনটি করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, মুক্ত বাজার অর্থনীতিতে পণ্য ও সেবার ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের দায়িত্ব হচ্ছে প্রতিযোগিতাকে উৎসাহিত করা। ব্যবসা ও উৎপাদনে প্রতিযোগিতামুলক পরিবেশ সৃষ্টি করা। সরকার সেই কাজটি করার চেষ্টা করছে।
কোম্পানি আইন নিয়ে আলোচনা করেন বিল্ড চেয়ারপার্সন ব্যারিষ্টার নিহাদ কবির। তিনি বলেন, কোম্পানি আইনে বেশ কিছু ক্ষেত্রে জটিলতা রয়েছে। অনেকে কোম্পানি অবসায়ন করতে গিয়েও সমস্যায় পড়েন। এজন্য আইনি প্রক্রিয়ায় অবসায়নের দিকে যাচ্ছে না অনেকে। এক প্রশ্নের জবাবে নিহাদ কবির বলেন, কোম্পানি আইন পুরোপুরি নতুন করে করতে হবে বিষয়টি এমন নয়। সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে যে সমস্যাগুলো দেখা দিয়েছে সেটা সংশোধন দরকার। এখন বড় সমস্যা দীর্ঘসূত্রিতা। কোনো কোনো আইনি প্রক্রিয়া শেষ করতে ২০ থেকে ৩০ বছর লেগে যাচ্ছে।
সিএফও সোসাইটি বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি শহিদুল ইসলাম কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।
এএফপির ব্যুরো প্রধান শফিকুল আলম কোম্পানি বিষয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরিতে কোন কোন দিকগুলোতে প্রতিবেদকের দৃষ্টি দেয়া দরকার তা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে শুধু আর্থিক অনিয়ম নয়, সমাজ ও মানব জীবনে কোম্পানির কার্যক্রমের প্রভাব, পরিবেশ প্রতিবেশের ওপর প্রভাবও অনুসন্ধানের বিষয় হতে পারে।
এমআরডিআইয়ের নির্বাহী পরিচালক হাসিবুর রহমান বলেন, তাদের সংগঠন সাংবাদিকদের দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করে। বিশেষ করে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতাকে এগিয়ে নিতে কাজ করছে। এজন্য ব্যক্তি রিপোর্টার ও প্রতিষ্ঠানকে আর্থিক ও লজিস্টিকসসহ অন্যান্য সহযোগিতা দিয়ে সহায়তা করছে এমআরডিআই।