পোশাক শিল্পে আইন-শৃঙ্খলা বজায়ে যৌথ বাহিনী সহযোগিতা করছে: বিজিএমইএ

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:৩২ পিএম

ছবি: ভোরের কাগজ
পোশাক শিল্পে সুষ্ঠু আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করার জন্য যৌথ বাহিনীকে পোশাক শিল্প পরিবারের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল্লাহ হিল রাকিব।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) উত্তরাস্থ বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে বিজিএমইএ, সেনাবাহিনী, ইন্ডাষ্ট্রিয়াল পুলিশ, ডিজিএফআই, এনএসআই, বিজিবি এবং পোশাক কারখানা মালিকদের মধ্যে পোশাক শিল্পের বর্তমান সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
বিজিএমইএ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে যৌথ বাহিনীর সার্বিক সহযোগিতায় চলমান শ্রম পরিস্থিতির অনেকটা উন্নতি হয়েছে, কারখানা খোলা রাখা সম্ভব হয়েছে। শ্রমিকদের ১৮ দফা দাবি মেনে নেয়ার পরও অন্যায় দাবি ও গুজব ছড়িয়ে কিছু কারখানায় অস্থিরতা তৈরি হলেও সেগুলোর সংখ্যা নিতান্তই কম। কারখানা সমস্যায় পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই যৌথ বাহিনীর সদস্যরা এসে কারখানার সমস্যা সমাধান করে কারখানা চালু রাখতে সহায়তা করে চলেছে।
বিজিএমইএ এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল্লাহ হিল রাকিবের সভাপতিত্বে উপরোক্ত সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন- শিল্প পুলিশের প্রধান কার্যালয়ের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) সিবগাত উল্লাহ, শিল্প পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক মো. আশরাফুজ্জামান, র্যাব-১ এর সিও লেফটেন্যান্ট কর্ণেল মোহাম্মদ জাহিদুল করিম, র্যাব- ৪ এর সিও উইং কমান্ডার মো. রোকোনুজ্জামান, ডিজিএফআইয়ের প্রতিনিধি এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিরা।
আলোচনায় বিজিএমইএ এর পক্ষ থেকে আরো উপস্থিত ছিলেন- সহ-সভাপতি আসিফ আশরাফ, পরিচালক হারুন অর রশিদ, পরিচালক মেজবাহ উদ্দিন খান, পরিচালক মো. মহিউদ্দিন রুবেল, পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম, পরিচালক মো. রেজাউল আলম (মিরু)।
আরো পড়ুন: নেপালের বিদ্যুৎ আমদানি চুক্তি বৃহস্পতিবার
সভায় সংঘর্ষে ম্যাঙ্গো টেক্স লিমিটেড কারখানার শ্রমিকের নিহত হওয়ার ব্যাপারে গভীর দুঃখ প্রকাশ করে বলা হয় এ ঘটনার আগে সকালে টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কের জিরাবো এলাকার মন্ডল গ্রুপের কারখানায় মন্ডল গ্রুপের শ্রমিকদের দাবি নিয়ে সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে শ্রমিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে মালিকপক্ষের আলোচনা চলছিলো। এ সময় কিছু বহিরাগত ব্যক্তি মন্ডল গ্রুপের ২জন শ্রমিকের মৃত্যুর মিথ্যা গুজব তুলে কারখানার বাইরে অবস্থান নেন। পরে অন্যান্য কারখানার শ্রমিকরাও সেখানে জড়ো হতে থাকেন। এক সময় বাইরে থেকে কারখানা লক্ষ্য করে গুলি বর্ষন করা হয়, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কয়েকটি গাড়িও ভাঙচুর করা হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সংঘর্ষে শ্রমিক ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কমকর্তাসহ ১১জন আহত হন, যারা বর্তমানে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
সভায় পোশাক মালিকরা অভিমত প্রকাশ করে বলেন, কোন পক্ষের ইন্ধনে শিল্পে এই অরাজকতা চলছে। যৌথ বাহিনী শিল্প সচল রাখার বিষয়ে যে সহযোগিতা করছে, তাতে তারা সন্তুষ্ট। তবে শিল্পে আরো পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেয়া হলে শিল্পে সুষ্ঠু আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখা সম্ভব হবে, যা উৎপাদনের পূর্বশর্ত। তারা কারখানা অরাজকতা সৃষ্টির জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য যৌথ বাহিনীকে অনুরোধ জানান।
যৌথবাহিনীর পক্ষ থেকে শিল্পাঞ্চলে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেয়া হবে মর্মে আশ্বাস দিয়ে সব পোশাক কারখানা খোলা রাখার জন্য উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
উপরোক্ত সভার পরপরই পোশাক খাতের বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে একই বিষয়ে অপর একটি সভা হয়, যেখানে প্রথম সভার অংশগ্রহনকারীরাও উপস্থিত ছিলেন।
যৌথবাহিনীর পক্ষ থেকে শ্রমিক নেতাদেরকে পোশাক শিল্পে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, তারা যেন শ্রমিকদেরকে বোঝান, কারখানার ক্ষতি হলে তাদেরও ক্ষতি, দেশেরও ক্ষতি হবে। সভায় সব পক্ষ সুষ্ঠু শ্রম পরিস্থিতি বজায় রাখার জন্য একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।