চাঁদাবাজি নয়, পণ্যের দাম বাড়ার জন্য সিন্ডিকেট দায়ী

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

ছবি : সংগৃহীত
উৎপাদন খরচের চেয়ে পাইকারি ও খুচরা বাজারে দ্রব্যমূল্যে বিস্তর ফারাকের জন্য পরিবহন সেক্টরে চাঁদাবাজিকে দায়ী করা হলেও মূলত এর পেছনে সিন্ডিকেট দায়ী রয়েছে। পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠন সড়কপথে কোথাও চাঁদাবাজি করছে না, তারপরও দ্রব্যমূল্যের দাম নিয়ন্ত্রণে নেই কেন- এমন তদন্তে উঠে এসেছে সিন্ডিকেটের তৎপরতার চিত্র। গতকাল মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর মহাখালীর সেতু ভবনের পাশে বিআরটিএ ভবনে অনুষ্ঠিত সভায় সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা এবং কর্মকর্তারা এ তথ্য তুলে ধরেন। সভায় উপস্থিত হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি শফিকুর রহমান, গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন বাহিনীর প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের নেতারা অংশ নেন।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুর রহিম বখস দুদু ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীর খান সভা শেষে জানান, গত ৫ আগস্টের পর কোনো পরিবহনে চাঁদা আদায় করা হয় না। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য পরিবহনের চাঁদাবাজির কথা বলা হয় আসল ঘটনা ধামাচাপা দিতে। মূলত সিন্ডিকেটের কারসাজির কারণে নিত্যমূল্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। বৈঠকে তারা জানান, ট্রিপ কম থাকায় ট্রাকভাড়া কমে এসেছে। সড়কে পুলিশের চাঁদাবাজি নেই। তবে ফেরিতে ইজারার নামে পণ্যবাহী ট্রাক থেকে টাকা নেয়ার প্রভাব পড়ছে বাজারে। বিআইডব্লিওটিএ এবং বিআইডব্লিউটিসির এখানে দায়িত্ব রয়েছে। যার সঙ্গে পরিবহন শ্রমিক বা সংগঠন কোনোভাবে জড়িত নয়। সভায় বক্তারা দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য বন্যার অজুহাতও সঠিক নয় মন্তব্য করে বলেন, বাজারে কোনো জিনিসের সংকট না থাকলেও কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে।
এদিকে গতকাল মঙ্গলবার বিকালে মতিঝিলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের নেতারা এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী আত্মগোপনে থেকে নানা কায়দায় এই সেক্টরে অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছেন। একাধিক টার্মিনাল দখলে ইন্ধন দিচ্ছেন। তিনি সায়েদাবাদ টার্মিনাালের শ্রমিকদের ১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা এবং ফুলবাড়িয়া টার্মিনালের ১ কোটি ১৪ লাখ টাকা ব্যক্তিগত হিসাবে জমা করেছেন।
এ সময় অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান, শ্যামলী পরিবহনের কর্ণধার রমেশ চন্দ্র ঘোষ উপস্থিত ছিলেন। ফেডারেশন নেতারা দাবি করেন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন একটি অরাজনৈতিক সংগঠন হলেও বিগত সময়ে এটি রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। এই ফেডারেশনের নেতারা শ্রমিক কর্মচারী পেশাজীবী মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয় নামে আরেকটি সংগঠন বানিয়ে রাজনৈতিক দলের মতো কর্মসূচি পালন করেছে। এতে সংগঠন বিতর্কিত হয়েছে। বিগত সময়ে বাসে পেট্রোল বোমায় যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিক হতাহতের ঘটনার জন্য বিএনপিকে দায়ী করে বইও বের করেছেন। সেসব বই পরিবহন শ্রমিকদের প্রচার করতে বাধ্য করা হয়েছে। তাদের এমন কর্মকাণ্ডের কারণে অনেকে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনকে রাজনৈতিক সংগঠন মনে করতেন। অথচ আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর এই দুই নেতা আত্মগোপনে চলে যান। তখন যুবদল-ছাত্রদলের নেতারা বাস টার্মিনালগুলোয় প্রবেশ করে এবং আওয়ামী লীগ আখ্যা দিয়ে ফেডারেশনের অফিস দখলের পাঁয়তারা করে।