বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস মাইকেল মিলারের

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:৫৭ পিএম

পাশাপাশি শ্রমিক আইনের ওপর জোর দেন তিনি। ছবি : ভোরের কাগজ
বাংলাদেশের গার্মেন্টস এবং এপারেলস সেক্টরে ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার। নারায়ণগঞ্জে বেশ কয়েকটি গার্মেন্টস কারখানা পরিদর্শন ও বিকেএমইএ’র সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা শেষে একথা বলেন তিনি।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিকেএমইএ’র নেতৃবৃন্দের সঙ্গে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন গার্মেন্টস-কারখানা পরিদর্শন করেন ইইউ’র এই রাষ্ট্রদূত। পরে শহরের চাষাঢ়ায় বিকেএমইএ এর প্রধান কার্যালয়ে বিকেএমইএ’র নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় করেন।
মতবিনিময় শেষে গণমাধ্যমকে মিলার জানান, জিএসপি ল, এলডিসি গ্রাজুয়েশন, ইউটিলিজেন্স ল, ফেয়ার প্রাইজসহ সকল বিষয়ে বাংলাদেশের গার্মেন্টস ও এপারেলস ব্যবসায়ীদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে। পাশাপাশি শ্রমিক আইনের ওপর জোর দেন তিনি।
পরবর্তীতে বিকেএমইএ’র প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ হাতেম গণমাধ্যমকে জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতকে আমরা জানিয়েছি, আমরা বর্তমানে এই পরিস্থিতিতে নেই যে ২০২৬ সালে এলডিসি গ্রাজুয়েশনে যাব। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার যদি সেটাকে স্থগিত করে বা বর্ধিত করণের আবেদন করে সেক্ষেত্রে তাদের সহযোগিতা আমরা চেয়েছি।
আরো পড়ুন : এলপিজিতে সুখবর, কমলো ভ্যাট
দ্বিতীয়ত, তাদের ডিউডিলিজেন্স ‘ল’ যেটা, এটা সাপ্লাই চেইন হিসেবে আমরা বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা অলরেডি এটা নিয়ে কাজ করছে। ডিইউডিলিজেন্স ‘ল’ টাকে আমরা বাস্তবায়ন করব। বাংলাদেশের ইন্ডাস্ট্রির মালিকরা ওয়ার্ল্ডের বেস্ট ইন্ডাস্ট্রি করার জন্য মাইন্ড সেট করেছে এবং তারা ভিজিটেও সেটার প্রমাণ পেয়েছে। যেহেতু ওয়ার্ল্ডের বেস্ট কমপ্লায়েন্স, বেস্ট সেফটি ও বেস্ট স্ট্যান্ডার্ড মেইনটেইন আমরা করছি। আমরা বলেছি, এই বেস্ট স্ট্যান্ডার্ড মেইনটেনন করতে গেলে আমাদের প্রচুর খরচ হবে, সেক্ষেত্রে আমরা যেন ওয়ার্ল্ড স্ট্যান্ডার্ড মূল্যটা পাই সেটা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে তাদের সহযোগিতা আমরা চেয়েছি। এই বিষয়গুলোকেই আমরা মূলত গুরুত্ব দিয়েছি।
মোহাম্মদ হাতেম বলেন, পাশাপাশি লেবার ‘ল’ এর বিষয়ে কথা এসেছে। সেটা নিয়েও আমরা কথা বলেছি।
তিনি আরো বলেন, যেহেতু ড. মুহাম্মদ ইউনূস বর্তমানে আমাদের রাষ্ট্রপ্রধান। সমগ্র পৃথিবীতেই তার একটি আলাদা ইমেজ আছে। তাই, ইইউসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে তার যে সম্পর্ক রয়েছে সেটাকে কাজে লাগিয়ে আমরা আরো বেশি সামনের দিকে অগ্রসর হতে চাই।
এর আগে, বিকেএমইএ’র নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, নতুন জিএসপি ‘ল’ এর সঙ্গে কো অপ্ট করে নিতে আমাদের সময় লাগবে তাই একটা এক্সটেন্ডেড গ্রেসপিও দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছি। সেই সঙ্গে গ্রাজুয়েশনের পরে নতুন জিএসপি পাওয়ার যে যোগ্যতা বাংলাদেশ ইনশ্আাল্লাহ অর্জন করবে সেখানে একটা সেভগার্ড আর্টিক্যাল আছে, আর্টিক্যাল ২৯। যেটার কারণে আমাদের বাংলাদেশে গার্মেন্টস এবং এপারেলস সেক্টরটা জিএসপি প্লাসের আওতাভুক্ত হতে পারবে না, আওতার বাইরে থাকবে, যদি তারা কারেকশন না করে। তাই উনাদের পার্লামেন্টে নতুন যে জিএসপি প্লাস ‘ল’ পাশ হবে, সেখানে যেন সেভগার্ড আর্টিক্যালটা না থাকে এবং বাংলাদেশের গার্মেন্টস সেক্টর যাতে সেখানে ইনক্লুড (যুক্ত) হতে পারে, সে ব্যাপারেও আমরা তাকে অনুরোধ জানিয়েছি আমাদের অ্যাম্বাসির পাশাপাশি ওনিও যাতে এই বিষয়ে চেষ্টা করেন।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিকেএমইএ'র সহ-সভাপতি মো. শামসুজ্জামান, অমল পোদ্দার, মোর্শেদ সারওয়ার সোহেল প্রমুখ।
উল্লেখ্য, মাইকেল মিলার এদিন প্রথমে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় এপিলিয়ন নিটওয়্যারস লিমিটেড নামের একটি কারখানা পরিদর্শন করেন। পরে বিকেএমইএ’র প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার পর আবার সদর উপজেলার ফতুল্লা অ্যাপারেলস লিমিটেড পরিদর্শন করেন।