বুয়েটের শিক্ষার্থীদের কৌশলে ফাঁসানো হয়েছে

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১ আগস্ট ২০২৩, ০৭:৫৯ পিএম

সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরে ভ্রমণে যাওয়া বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) গ্রেপ্তারকৃত শিক্ষার্থীদেরকে কৌশলে ফাঁসানো হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ‘বানোয়াট’ বলে দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা।
এসময় শিক্ষার্থীদেরকে অন্যায়ভাবে আটক করে সন্ত্রাসদমন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন আটককৃত শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা।
মঙ্গলবার (১ আগস্ট) বিকেল সাড়ে তিনটায় বুয়েট শহীদ মিনারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অভিভাবকরা এ দাবি করেন।
অভিভাবকদের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন-আটক শিক্ষার্থী আলি আম্মার মুয়াজের বড় ভাই আলি আহসান জুনায়েদ।
এসময় তিনি বলেন, আমাদের জানিয়ে গত শনিবার আমাদের সন্তান ও স্বজনেরা ক্যাম্পাসের বন্ধুদের সঙ্গে সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওড়ে ঘুরতে যান। ভ্রমণের এক পর্যায়ে গত রবিবার বিকালে তাদেরকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। এরপর তাদের খোঁজখবর জানার জন্য আমরা ওসি ও এসপিকে বারবার ফোন করেছি, কিন্তু উনারা কেউ ফোন রিসিভ করেননি।
তাই, আমরা জানতেও পারছিলাম না কেন তাদেরকে আটক করা হয়েছে। এর মাঝে আমাদের কারো কারো কাছে পরশু রাতেই তারা আমাদেরকে আমাদের ফোন করে এনআইডির ছবি চেয়েছে। কিন্তু তখনও সেই অভিভাবকেরা জানতো না যে তাদেরকে আটক করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, সোমবার বিকালে আমরা জানতে পারি যে, তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা দেয়া হয়েছে। আমরা মনে করি এরকম হাস্যকর ও বানোয়াট অভিযোগ সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও দুরভিসন্ধিমূলক। সেদিন বিকেলে আমাদের হাতে পৌঁছানো মামলার বিবরণীতে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ঘটিয়ে জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করা, জানমালের প্রতি ক্ষতি সাধন, রাষ্ট্রদ্রোহী কর্মকাণ্ড সহ ধর্মীয় জিহাদ সৃষ্টির মাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার অপরাধ ইত্যাদি অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে আনা হয়েছে।
পরবর্তীতে তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে তারা এটা পরিষ্কার করেছে যে, তাদের কাছে এবং সঙ্গে থাকা মোবাইলে প্রত্যাশিত কিছুই না পেয়ে তাদের সামনেই জব্দকৃত মালামাল হিসেবে সেগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে এবং ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড দিয়ে প্রিন্ট করা হয়েছে তাদের মামলা সাজানোর জন্য। স্বাভাবিকভাবেই পুরো বিষয়টি আমাদেরকে প্রচণ্ড উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।
বুয়েট প্রশাসনকে চ্যালেঞ্জ দিয়ে তিনি আরো বলেন, কোনো ধরনের রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপের সঙ্গে আমাদের সন্তানেরা জড়িত নয়। কোনো ধরনের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এ ধরনের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমরা পরিষ্কার ভাষায় বলছি তারা সাধারণ শিক্ষার্থী মাত্র।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে তিনি বলেন, বুয়েট প্রশাসন আমাদের বলেছেন, ঘটনাটিতে প্রক্রিয়া অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোনো ধরনের অবিচার করা হবে না।
উল্লেখ্য, হাওরে ঘুরে বেড়ানোর সময় বুয়েটের বর্তমান ও প্রাক্তন ৩৪ শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশ। এরপর তাদের বিরুদ্ধে সোমবার বিকেলে সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা দেয়া হয়।