এবার খবরদারি করলেন সেই অধ্যক্ষের স্ত্রী!

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০২০, ০৯:৩৮ পিএম

ইনসেটে অধ্যক্ষের স্ত্রী নাদিরা আমিন। ছবি: প্রতিনিধি।
বিজয় দিবসে জুতা পায়ে শহীদ মিনারে উঠে বিতর্কিত হওয়া আর এক অভিভাবককে প্ররোচিত করে দুই শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার অডিওক্লিপ ফাঁস হওয়ার পর এবার দেখা গেল অন্যচিত্র। উলিপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজের বিতর্কিত সেই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবু তাহেরের স্ত্রী নাদিরা আমিন এবার ফাটাকেষ্ট বেশে কলেজে উপস্থিত হয়ে শিক্ষকদের একহাত নিলেন।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবু তাহের ঢাকায় শিক্ষামন্ত্রণালয়ে ব্যস্ত থাকার কারণ দেখিয়ে তার স্কুলশিক্ষক স্ত্রী নাদিরা বুধবার (২২ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কলেজে এলেন অধ্যক্ষ স্বামীর প্রক্সি দিতে। যথারীতি কলেজে ঢুকে অধ্যক্ষের কক্ষে দীর্ঘ সময় ধরে অবস্থান করেন। পিয়নের মাধ্যমে বিভিন্ন ফাইলপত্র তলব করে ঘাঁটাঘাঁটি করেন। কোন শিক্ষক কখন কলেজে আসেন, ঠিকমতো ক্লাস করেন কিনা, কোনো অপকর্মে লিপ্ত কিনা সেসব নিয়ে অনুসন্ধান চালান।
হঠাৎ অধ্যক্ষ সেজে কলেজে উপস্থিত হওয়া নাদিরা আমিন মূলত উলিপুর উপজেলার চরবজরা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তবে তিনি তার প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব রেখে স্বামীর কলেজে এসে খবরদারি করার ঘটনায় কলেজের শিক্ষক ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা হতভম্ব হয়ে গেছেন। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর উলিপুরের সচেতন মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। পরে খবর পেয়ে উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ঘটনাস্থলে গিয়ে অধ্যক্ষের স্ত্রীকে কলেজ থেকে চলে যেতে বলেন।
স্থানীয়রা বলছেন, এমনিতেই অধ্যক্ষ আবু তাহেরের সঙ্গে তার শিক্ষকদের নানা বিষয়ে বিরোধ ও স্নায়ুযুদ্ধ চলে আসছে। যা ইতোমধ্যে শারীরিকভাবে আক্রমণ করার পর্যায়ে চলে গেছে। এতে ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান কার্যক্রম প্রায় লাটে ওঠার উপক্রম হয়েছে। বুধবার (২২ জানুয়ারি) সকালে শিক্ষক লাঞ্ছিত ঘটনার প্রতিবাদের কলেজের গেটে মানববন্ধন কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে প্রতিপক্ষ শিক্ষকদের শাসাতে অধ্যক্ষের স্ত্রীর কলেজে এসে খবরদারি করাটা কেউই ভালো চোখে দেখছেন না।
জানতে চাইলে অধ্যক্ষের স্ত্রী নাদিরা আমিন বিষয়টি স্বীকার করে ভোরের কাগজকে বলেন, তার স্বামী প্রশিক্ষণ নিতে বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন। তাই তার অনুপস্থিতিতে শিক্ষকরা যথারীতি কলেজে উপস্থিত হন কিনা তা তদারকি করতেই গিয়েছিলাম কলেজে।
এ ব্যাপারে উলিপুর থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন ভোরের কাগজকে বলেন, অধ্যক্ষের রুমে তার স্ত্রী কলেজের ফাইলপত্র ঘাটাঘাটি করার সময় কেউ কেউ গুরুত্বপূর্ণ ফাইল খোয়া যেতে পারে ভেবে আমাকে খবর দিলে আমি সেখানে যাই। পরে তাকে চলে যেতে বলেছি।
আগের নিউজ পড়ুন-